কথার যুদ্ধে জুড়ি মেলা ভার শাস্ত্রীর। বাগ্মিতার জন্যই ক্রিকেট কেরিয়ার ছেড়ে দেওয়ার পর বিশেষজ্ঞ এবং ধারাভাষ্যকার হিসাবে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত তিনি। নিজের বই, 'কোচিং বিয়ন্ড: মাই ডেজ উইথ ইন্ডিয়ান ক্রিকেট'-এ জাতীয় দলের প্রাক্তন ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধর জানিয়েছেন, কীভাবে শামির ইচ্ছেমত খাওয়ার অভ্যাসে রেগে যান শাস্ত্রী।
২০১৮-এ জোহানেসবার্গ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শামি উপচে পড়া প্লেট ভর্তি ছিল ভাত এবং মাটন কারিতে। টি ব্রেকে শামির এই খাওয়া দেখে রেগে যান তৎকালীন হেড কোচ। ওয়ান্ডারার্স-এ খেলতে নামার আগেই ভারত সিরিজে ০-২ পিছিয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে না এলে ভারত জাহান্নামে যাক! কোহলি-রোহিতদের অভিশাপে ভাসিয়ে দিলেন মিয়াঁদাদ
শ্রীধর সেই অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে নিজের বইয়ে লিখেছেন, "কেপ টাউনে হারতে হয়েছিল আমাদের। আমরা হাস্যকরভাবে ২০৮ রানও চেজ করতে পারিনি। তারপরে সেঞ্চুরিয়নেও হেরে বসি আমরা। যে ম্যাচ আমাদেরই জেতা উচিত ছিল। সিরিজে তখনই ২-০ এগিয়ে যাওয়ার কথা। খুব খারাপ হলে ১-১ হতে পারত। জোহানেসবার্গে খেলতে নামার আগেই আমরা নিজেদের আত্মসমর্পন করে বসেছিলাম।
ভারত টসে জিতে প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমেছিল। সেই ম্যাচে শামির পারফরম্যান্সের কথা স্মরণ করে শ্রীধর লিখেছেন, "প্রথম ইনিংসে শামিকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। ১২ ওভারে ৪৬ রান খরচ করে বসে ও। ম্যাচের চতুর্থ দিনেও একইভাবে কোনও অবদান রাখতে পারেনি। টি ব্রেকের আগে জয়ের মুখে দাঁড়িয়েছিল প্রোটিয়াজরা। ২৪১ টার্গেটের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর সেই সময় ছিল ১৩৬/৩।"
"মাঠ থেকে ফেরার পর শামি যেন ম্যাচ থেকে সমস্ত উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। লাঞ্চের সময় নিজের প্লেট ভর্তি করে রাইস এবং মাটন নেয়। আর শামির প্লেটের দিকেই তাকিয়েই রেগে যান শাস্ত্রী। 'নিজের খিদে কি এখানেই মেটাবে নাকি কিছু উইকেট পাওয়ার জন্যও বাঁচিয়ে রাখবে?"
আরও পড়ুন: কোহলি-রোহিতের ঝামেলায় দাবানল জ্বলে টিম ইন্ডিয়ায়! শাস্ত্রীর প্রশংসা করে বিষ্ফোরক এবার কোচ শ্রীধর
শামির জবাব ছিল, "এখানেও খাব। ওখানেও খাব।" শ্রীধর জানাচ্ছেন, "শাস্ত্রীর হতাশা আমরা স্পষ্টতই বুঝতে পারছিলাম। কারণ ওটা এমন এক সিরিজ ছিল যেটা অন্যভাবে খেলা যেতে পারত। আমরা কেবল পরিশ্রম করে চলেছিলাম। নিজেদের যোগ্যতা মাঠে দেখাতেই পারিনি। ড্রেসিংরুম ছেড়ে শামি মাঠে তৃতীয় সেশনে নামার আগে শাস্ত্রী শামিকে ডেকে ওঁর ক্ষত ঢেকে দেন। ও কতটা ভালো বোলার, এসব ছেঁদো কথাবার্তা নয়, শামিকে লাঞ্চের সময়ের কথাই স্মরণ করিয়ে দেন শাস্ত্রী।"
ফাইনাল সেশনে শামি আগুন ঝরিয়ে যান। শ্রীধর বলছেন, "চা পানের বিরতির পর শামি অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়ে। ওঁকে খেলাই যাচ্ছিল না। ও মিডল এবং লোয়ার অর্ডার তছনছ করে দেয়। মাত্র ২৮ রান খরচ করে ৫ উইকেট তুলে নেয় ও। ভারত সেই ম্যাচ জিতে যায় ৬৩ রানের নিরাপদ ব্যবধানে। আর ড্রেসিংরুমে ফিরে শামি গজগজ করতে থাকেন, "হ্যাঁ আমাকে আরও রাগিয়ে দাও। আরও গালি দাও। যতটা রাগিয়ে দেওয়ার ততটা দেওয়া হয় না আমাকে।" শামির দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ৮ উইকেট হারায় মাত্র ২৫ রান যোগ করার ফাঁকে।
Read the full article in ENGLISH