ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পেসার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মহম্মদ শামি। ওয়ার্ল্ড কাপে মাত্র ৭ ম্যাচ খেলেই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হওয়ার কীর্তি অর্জন করেছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকও তিনি। তবে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি মোটেই মসৃণ ছিল না শামির কাছে।
Advertisment
বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরই সেই লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছেন এই সাক্ষাৎকারে। পুমা-কে শামি জানিয়েছেন, "দু-বছর ধরে ইউপি-র রঞ্জি দলের জন্য ট্রায়াল দিয়েছি। তবে ফাইনাল রাউন্ডেই ওঁরা আমাকে বের করে দিত। প্ৰথম বছর যখন ট্রায়ালে সুযোগ পাইনি, ভেবেছিলাম এটা বড় কোনও বিষয় নয়। পরের বছর আবার চেষ্টা করব। তবে পরের বছরেও একই ঘটনা ঘটত।"
কেন বারবার প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছিল? উত্তর প্রদেশের নির্বাচকরা নাকি অদ্ভুত জবাব দিয়েছিলেন শামির ভাইকে। "ওঁরা বলেছিল, তোমরা যদি আমাকে সরাতে পার, তাহলেই একমাত্র শামি সুযোগ পাবে। এটা ভালো। নাহলে আমি ভীষণই দুঃখিত।" এই কারণেই উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে শামি, শামির ভাই অন্য রাজ্যে পাড়ি জমান।
১৪-১৫ বছরে কলকাতায় চলে এসেছিলেন শামি। জানাচ্ছেন, " আমি ভীষণ একগুঁয়ে ছিলাম। তবে আমি নিশ্চিত ছিলাম একদিন না একদিন ঠিক সুযোগ পাব। কলকাতায় অনুশীলন করে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছিলাম। তিন-চার বছর পর অরুণ লাল একাডেমিতে যোগ দিই। ওখানে সিমেন্টের পিচে খেলা হত। রান আপের জন্য পর্যাপ্ত জায়গাও ছিল না। আমি অবাক হয়েছিলাম। তবু বোলিং চালিয়ে গিয়েছিলাম।"
শেষমেষ কলকাতার এক ক্লাব শামির সঙ্গে চুক্তি করতে রাজি হয়। তবে কোনও পারিশ্রমিক পাবেন না শামি, এমনটাই ঠিক হয়। স্রেফ খাবার এবং থাকার জায়গার বদলে ক্লাবে খেলতে রাজি হয়েছিলেন শামি। ভাগ্য বদলাতে তাতেই রাজি হন শামি। তারপর পুরোটাই ইতিহাস। শামি নিজেই জানাচ্ছেন, "আমি ৯ ম্যাচে ৪৫ উইকেট নিই। তারপর একদিন ক্লাবের এক অধিকারিক আমার হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন।" এটাই ছিল শামির প্রথম ক্রিকেটীয় উপার্জন। "আমি বাড়ি গিয়ে গোটা টাকা মায়ের হাতে তুলে দিই। সেই টাকাই বাবার হাত ঘুরে আমার কাছে ফিরে আসে।" শামির সংযোজন। তারপর ঘটনা সকলেরই কমবেশি জানা।