Mohammed Shami, BCCI: ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ফাস্ট বোলার মহম্মদ শামিকে দলে ফেরানোর জন্য তাড়াহুড়ো করবে না। কারণ, দলের অগ্রাধিকার হল চলতি বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সফর। সেই জন্য ৩৩ বছর বয়সি শামিকে ফিট এবং ফ্রেশ চাইছে দল। যদিও ফেব্রুয়ারিতে গোড়ালির অস্ত্রোপচারের পর শামির পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ঠিকঠাকই চলছে। তবে পরের মাসে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সিরিজের জন্য তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, তিনি এখনও পুরোপুরি ফিট নন।
আশা করা হচ্ছে, শামি ১১ অক্টোবর রঞ্জি ট্রফি দিয়ে ২২ গজে ফিরতে পারেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় বা তৃতীয় টেস্টে তাঁর জাতীয় দলে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজের পর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলবে ভারত। আবার, ভারত এ দলের সঙ্গেও শামিকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। ভারতীয় এ দলের ৩১ অক্টোবর এবং ৭ নভেম্বর ম্যাকে এবং মেলবোর্নে হওয়া দুটি চার দিনের ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে।
গত বছর গোড়ালিতে চোট পাওয়ায়, শামি গত বছরের আহমেদাবাদ বিশ্বকাপের ফাইনালের পর থেকে কোনও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট ম্যাচ খেলেনি। বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে (এনসিএ) কয়েক মাস পুনর্বাসনের পর, শামি ফেব্রুয়ারির শেষের দিককে অস্ত্রোপচারের জন্য বেছে নেন। পরের সপ্তাহে সেই অস্ত্রোপচারের ছয় মাস পূর্ণ হবে। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া সফরকে মাথায় রেখে এই পেসার তার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। গত মাসের শেষের দিকে, শামি এনসিএ-তে আবার বোলিং শুরু করেছিলেন। দলীপ ট্রফিতে ফিরে আশার আলো জাগিয়েছিলেন। তবে তাঁকে দলীপ ট্রফির চারটি স্কোয়াডের একটিতেও রাখা হয়নি। কারণ তিনি এখনও পুরোপুরি ফিটনেস ফিরে পাননি।
জসপ্রিত বুমরাহের ক্ষেত্রে, যেখানে গত বছর তাঁর প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি পরিষ্কার রোডম্যাপ রাখা হয়েছিল, শামির জন্যও একই ফর্মুলা রাখা হয়েছে। যদিও শামির চোট বুমরাহের মতো কেরিয়ারের জন্য হুমকিস্বরূপ নয়। তবে, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে একটিও ম্যাচ খেলেননি। তার মানে ধীরে ধীরে তাঁকে কাজের চাপ বাড়াতে হবে। যাঁরা জানেন, তাদের মতে শামি একবার নেটে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে নিয়মিত বোলিং শুরু করলে, পরবর্তী ধাপটি হবে এনসিএ-তে অনুশীলন ম্যাচে যোগ হওয়া।
সূত্রের খবর যে বোর্ড মনে করছে, 'যেহেতু তিনি (শামি) বেশ কিছুদিন খেলেননি, তাই তাঁকে চলতি ক্রিকেট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে প্রথমে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। বুমরাহের ক্ষেত্রে, আয়ারল্যান্ডে টি-২০ ছিল। যা এক্ষেত্রে সাহায্য করেছে। তারপর ধীরে ধীরে বুমরাহের কাজের চাপ বাড়ানো হয়েছে। তবে শামির ক্ষেত্রে টেস্ট ক্রিকেটকে ফেরার পথ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাঁকে লম্বা স্পেলে বল করতে হবে। এটি ধাপে ধাপে তাঁকে ফেরাতে সাহায্য করবে। তাঁর মূল লক্ষ্য হবে অস্ট্রেলিয়া সফর।'
ফাস্ট বোলারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো
বাংলাদেশ সিরিজের জন্য, ভারত তার পেস বোলিং নিয়ে চিন্তিত নয়। ভারত বুমরাহকে এই সিরিজে অন্তর্ভুক্ত করবে কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা করছে। কারণ, ভারতের সামনে একটি কঠিন সূচি আছে। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটি টেস্ট দিয়ে ভারতের অভিযান শুরু করে। নভেম্বরের মাঝামাঝি অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে ভারত নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরও তিনটি টেস্ট খেলবে।
টি২০ বিশ্বকাপের পর থেকে বুমরাহকে অতিরিক্ত বিশ্রাম দিয়েছেন নির্বাচকরা। বাকি সমস্ত সিনিয়ররা ওডিআইয়ের জন্য শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন। কিন্তু, বুমরাহকে সফরকারী দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল এবং দলীপ ট্রফি দলেও রাখা হয়নি। তার ফলে বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি টেস্টের একটিতে বুমরাহ খেলতে পারেন। যেহেতু নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি টেস্টের প্রতিটির মধ্যে মাত্র তিন দিনের বিরতি রয়েছে, বুমরাহ সম্ভবত তার মধ্যে দুটিতে খেলবেন।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, বুমরাহ এবং শামির মত মহম্মদ সিরাজের ফিটনেসের ওপরও নজর রাখছেন। তাঁকেও হোম সিজনে ঘুরিয়ে খেলানো হবে। গত ১৮ মাস ধরে সিরাজের একটি ব্যস্ত ক্যালেন্ডার ছিল। বুমরাহের মতো, কয়েকটি টেস্টের জন্য সিরাজকেও বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ধোনিকে সেরার সেরা স্বীকৃতি স্বয়ং গিলক্রিস্টের, গর্বে বুক চওড়া গোটা ভারতবাসীর
এই ব্যাপারে বিসিসিআইয়ের এক আধিকারিক বলেছেন, 'আমরা সবাইকে একযোগে বিশ্রাম দিতে পারি না। কারণ, হোম ম্যাচ হলেও খেলার জন্য ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা দরকার। ইংল্যান্ড সিরিজের মত, যেখানে ভারত একজন সিনিয়র পেসারকে একজন তরুণের সঙ্গে জুটি বেঁধে ব্যবহার করেছিল, সেই একই পদ্ধতি এবার অবলম্বন করা হবে। দলীপ ট্রফিতে ফাস্ট বোলারদের একটি ভালো অংশ খেলবেন। তাঁদের অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা মাথায় রেখে বাছাই করা হয়েছে। যদি তাঁরা ভাল খেলেন, তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার আগে আমরা তাঁদের হোম কন্ডিশনে ব্যবহার করতে পারি।' সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে নির্বাচকদের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা আকাশদীপ ও মুকেশ কুমার ছাড়াও আভেশ খান এবং প্রসিধ কৃষ্ণের ওপর নজর থাকবে।