Mohammed Shami accident: ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে ক্লিনচিট পাওয়ার পর মৃত্যুর খুব কাছাকাছি ঘুরে এসেছিলেন ভারতীয় দলের পেসার মহম্মদ শামি। ২০১৮ সালে শামি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি পান। তারপরই ভয়ংকর দুর্ঘটনার মুখে পড়েন।
মহম্মদ শামি বর্তমানে তাঁর গোড়ালির চোট সারিয়ে ভারতীয় দলে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। গোড়ালির চোটের জন্য ২০২৩ একদিনের বিশ্বকাপের শীর্ষস্থানীয় উইকেট শিকারী শামিকে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছে। চোটের জন্য তিনি আইপিএল ২০২৪ এবং টি২০ বিশ্বকাপেও খেলতে পারেননি। কিন্তু, তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলো বলে দিচ্ছে যে, দ্রুত জাতীয় দলে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তেমনটা হলে, অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজেই জাতীয় দল শামিকে পেতে পারে।
ডিসেম্বর ২০২৩-এর পর থেকে শামি এখনও মাঠের বাইরে। আর, এনিয়ে তিনি হতাশাও প্রকাশ করেছেন। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর রাতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর ভারত একদিনের বিশ্বকাপে রানার্স হয়। তার আগে গত বিশ্বকাপের বাকি সব ম্যাচ ভারত জিতেছিল। শামি যে কয়েকটি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন, দুর্দান্ত বল করেছিলেন। এরপর গত মাসে ভারত টি২০ বিশ্বকাপে ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সুস্থ থাকলে শামিও সেই সময় জাতীয় দলে থাকতেন। আর, ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অংশীদার হতে পারতেন। কিন্তু, ভাগ্যের পরিহাসে চোটের জন্য সেটা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় দলের এই বোলার তাঁর চোট সারিয়ে দ্রুত টিমে ফেরার চেষ্টা করছেন। তাঁর বিশ্বাস, ভাগ্যে থাকলে ভবিষ্যতে কোনও একদিন বিশ্বকাপজয়ী জাতীয় দলের সদস্য হওয়ার সুযোগ পাবেন।
বিপত্তি শামির কাছে অবশ্য নতুন কিছু নয়। তাঁকে সেই সমস্ত প্রতিকূলতার সঙ্গে বারবার লড়াই করতে হয়েছে। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী হাসিন জাহানের সঙ্গে গার্হস্থ্য সমস্যা, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ, আত্মহত্যার চিন্তাভাবনার মত নানা করুণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন জাতীয় দলের এই বোলার। তারই মধ্যে, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে তিনি মুক্ত হওয়ার পরই এক মারাত্মক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন। ২০১৮ সালে, শামি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু উমেশ কুমারের সঙ্গে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়ংকর গাড়ি দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন। যা উমেশ এবং শামির জীবন শেষ করে দিতে পারত বলেই দাবি শামির ঘনিষ্ঠ বন্ধুর।
এই ব্যাপারে উমেশ শুভঙ্কর মিশ্রকে পডকাস্ট 'আনপ্লাগড'-এ বলেছেন, 'শামি অভিযোগ থেকে ক্লিনচিট পাওয়ার পর আমরা দেরাদুনে গিয়েছিলাম। সেই রাতে আমরা মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমরা দেরাদুনে পৌঁছই। ওখানে এক স্টেডিয়ামে অনুশীলন করি। তারপর ফিরছিলাম। আমরা রওনা দিয়েছিলাম প্রায় সকাল প্রায় সাড়ে ৫টায় টায়। ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আচমকা মনে হল, গাড়িটা যেন পুরো ভেঙে গেছে। কোনওমতে নিজেকে সামলে দেখি, শামি গুরুতর আহত হয়েছে। ওঁর মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছে।' ব্যাপারটা ঋষভ পন্থের পর্যায়ে যায়নি। কিন্তু, ট্রাকের আঘাতে শামি আর উমেশ যে গাড়িতে ছিলেন, সেটা সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল। কোনওক্রমে তিনি ও শামি ওই দুর্ঘটনায় বেঁচে যান বলেই জানিয়েছেন উমেশ।
আরও পড়ুন- গম্ভীর-ফ্যাক্টরেই নেতৃত্বে ছাঁটাই হার্দিক! মুখ খুলতে বাধ্য হলেন এবার আশিস নেহরা
যেন আচমকা মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা। সেকথা জানিয়েই উমেশ সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে পডকাস্টে বলেন, 'সামনে থেকে একটা ট্রাক আমাদের গাড়িকে এসে ধাক্কা মারে। সেই ধাক্কায় আমাদের গাড়ির সামনের আর পিছনের ইন্ডিকেটর আর একটা পাশ ভেঙে যায়। সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপার হল পালানোর চেষ্টা করার সময় ট্রাকচালক আমাদের এসকর্ট কারকেও ধাক্কা দেয়। আমাদের গাড়িটা টাল সামলাতে না পেরে রাস্তার ধারে নেমে যায়। দুই মিটার দূরত্বে একটা ট্রান্সফরমার ছিল। একদিকে একটি খাদ। আর সামনে একটা ট্রান্সফরমার।' সেই দৃশ্য আজও তিনি ভুলতে পারেন না বলেই উমেশ জানিয়েছেন।