সদ্য শেষ হওয়া অস্ট্রেলীয় সফরের অন্যতম বড় আবিষ্কার মহম্মদ সিরাজ। টেস্টে অভিষেক ঘটিয়েই ভেলকি দেখিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। আর এই সাফল্যের জন্য দেশে ফিরেই নিজেকে তিনি উপহার দিলেন। বিএমডব্লিউ কিনলেন নিজের জন্য।
হায়দরাবাদে ফেরার পরেই শুভেচ্ছা, সম্বর্ধনার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। এর মধ্যেই ভক্তদের সুখবড় দিয়ে নিজের ইনস্টাগ্রামে তারকা পেসার শেয়ার করলেন সদ্য কেনা বিএমডব্লিউয়ের ছবি। সঙ্গেসঙ্গেই ভাইরাল সেই ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তরা বলছেন, বাবা অটো চালিয়ে পুত্র সিরাজকে বড় করেছেন। আর সিরাজ দুরন্ত অভিষেকের পরেই বিএমডব্লিউ কিনছেন। সাফল্য তো এটাই!
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/01/siraj_car_copy_269x429.jpeg)
সিরাজ অস্ট্রেলিয়া সফর শেষ করেছেন রূপকথার মত। শেষ তিনটে টেস্টে অংশ নিয়ে তুলে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। প্যাট কামিন্স, জোশ হ্যাজেলউডের পর সিরিজের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন। তাও একটি ম্যাচ কম খেলে।
আরো পড়ুন: দেশের ফিরেই বাবার সমাধিতে সিরাজ, কান্নায় ভেঙে পড়লেন আবার
তবে সফর শুরুর সময়েই চরমতম দুসংবাদ পেয়েছিলেন তিনি। গত নভেম্বরের ২০ তারিখ অস্ট্রেলিয়ায় বসেই সিরাজ খবর পান তাঁর বাবা মহম্মদ ঘাউসের মৃত্যু হয়েছে। তারপরেই বোর্ডের তরফে তাঁকে দেশে ফিরে এসে বাবার শেষকৃত্যে যাতে অংশ নিতে পারেন, তাঁর ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দেয় বোর্ড। তবে কোভিড প্রোটোকল ভেঙে দেশে ফিরে আসেননি। বোর্ডের প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে দলের সঙ্গেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারকা পেসার।
তারপর পুরোটাই যেন রূপকথা। তিনি সেই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “বাবার মৃত্যু কঠিন পরিস্থিতি তুলে ধরেছিল আমার সামনে। আমি মায়ের সঙ্গে কথা বলে নিজেকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করতাম। বাবার স্বপ্ন যাতে পূরণ হয়, সেই চেষ্টা করে গিয়েছি সবসময়। পরিবারের তরফ থেকে পুরো সমর্থন পেয়েছি। বাবার যা ইচ্ছা ছিল, সেটা পরিপূর্ণ করতেই হবে, সেই ভাবনা ছিল। সেটাই হয়েছে।”
দেশে ফিরে তাই সিরাজ সরাসরি বাড়ি ঢোকার আগেই বাবার সমাধিস্থলে যান। সিরাজ বলেছেন, "আমি বাড়ি ফেরার আগে বাবার সঙ্গে কিছু সময় কাটাতে চেয়েছিলাম। তাই বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি বাবার সমাধিতে যাই। বাবার সামনে কথা বলতে পারিনি। তবে গোলাপ ছড়িয়ে এসেছি। তারপর বাড়িতে এসে মায়ের সঙ্গে দেখা করি। মা কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। আমি মাকে সান্ত্বনা দিয়ে কাঁদতে বারণ করি। মা আমার ফেরার জন্য অপেক্ষায় ছিল। দিন গুনছিল।"
অস্ট্রেলীয় সফরের সময় সিডনিতে খেলতে নেমে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এসসিজি-তে জাতীয় সঙ্গীত চলার সময়েই ২৬ বছরের তারকাকে দেখা যায় আবেগবিহ্বল হয়ে চোখের জল মুছছেন। সেই সময় সতীর্থরা তাঁকে সামলান।
সেই ম্যাচেই হায়দরাবাদি তারকা মাঠে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন। তবে সেই ঘটনা তিনি মেনে নেননি। সরাসরি দলের ক্যাপ্টেন এবং আম্পায়ারকে জানান। সিরাজের এই সাহসিকতা, প্রতিবাদ করার মানসিকতা পরে প্রশংসিত হয়েছিল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন