/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/07/mohun-bagan-1.jpg)
মোহনবাগান তাঁবুতে মহা আড়ম্বরে পালিত মোহনবাগান দিবস।
মোহনবাগানের ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড জয়ের ১০৭ বছর পূর্তির উদযাপন হল রবিবার। ইস্ট ইয়র্কশায়ারকে হারিয়ে ফাইনাল জেতার ইতিহাস আজও একইভাবে স্মরণ করে গঙ্গা পারের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। ২৯ জুলাই মোহনবাগান তাঁবুতে মহা আড়ম্বরে পালিত মোহনবাগান দিবস। এই দিনেই শিবদাস ভাদুড়ির বঙ্গ ব্রিগেড খালি পায়ে খেলে হারিয়েছিল ইংরেজদের।
ফি-বছর বাগান দিবসেই ক্লাবের প্রাক্তন কিংবদন্তি ফুটবলারকে তুলে দেওয়া হয় মোহনবাগান রত্ন। এবার সম্মানিত হলেন সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন ও ডিফেন্ডার প্রদীপ চৌধুরি। পেলের কসমসের বিরুদ্ধে মাঠে নামা এই ডিফেন্ডার ক্লাবকে এনে দিয়েছিলেন প্রচুর ট্রফি। ঝুলিতে রোভার্স, শিল্ড, বরদলুই ও কলকাতা লিগ রয়েছে তাঁর। সুব্রত ভট্টাচার্যর সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দিতেন অবলীলায়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/07/mohun-bagan-tent-1.jpg)
আজীবন নিজেকে ক্লাবের সমর্থক বলেই দাবি করলেন প্রদীপ। ১৯৭৬-এ মুম্বই ছেড়ে কলকাতায় আসার পর মোহনবাগান ছাড়া আর অন্য ক্লাবের জার্সি গায়ে চাপাননি। এদিন বলছিলেন সবটাই স্বপ্নের মতো। কখনও ভাবেননি যে এই ক্লাবের হয়ে খেলবেন, তারপর অধিনায়ক হয়ে গেলেন। আর আজ মোহনবাগানের এই স্বীকৃতি। আজ তিনি সব পেয়েছির দেশে। জীবনের অন্যতম সেরা দিনে মনে করছেন বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।
এদিন প্রদীপ বাবুই ভাগ করে নিলেন একটা মজার ঘটনা। বললেন, " আমি তখন এইট-নাইনে পড়ি। খড়্গপুরে থাকতাম। বাড়ির মালিক ছিলেন উত্তরপ্রদেশের। ওনার ছেলে রামু দা ছিলেন কট্টর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। সেবার নয়া দিল্লিতে একটা টুর্নামেন্টে ইস্টবেঙ্গল তিন গোলে আমাদের হারিয়েছিল। আমি স্কুল থেকে ফিরেই এই খবরটা পাই। দিয়েছিল রামু দা। আর বলছিল কেমন তিন গোল দিলাম। আর বলতে বলতেই আমার দু'কান ধরে মাথাটা ওপর দিকে তুলে ধরছিল। শুনে এত রাগ হয়েছিল যে, আমি ছুটে গিয়ে ওপরের ঘর থেকে হকি স্টিক নিয়ে এসে রামু দা'র মাথায় মারতে গেছিলাম। সরে যেতে স্টিকের বাড়িটা ঘাড়ে এসে পড়েছিল। অনেক দিন অসুস্থ ছিল ও। আমি এতটাই বড় বাগান সমর্থক ছিলাম।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/07/mohun-bagan-pradip.jpg)
এদিন প্রথামাফিক ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র প্রদীপের হাতে বাগান রত্ন ও এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন। প্রদীপ বাবু আরও বলেছেন মুম্বইতে থাকাকালীন তাঁর ফুটবলের মান অনেক ভাল ছিল। ওখানে কোনও চাপ ছিল না খেলার। কিন্তু এখানে অসম্ভব চাপ নিয়েই মাঠে নামতেন। আর বললেন ৭৬-এ তাঁর খেলা কোনও ম্যাচে মোহনবাগান হারেনি। ড্র আর জয় দেখেছিলেন তাঁরা। আর জানালেন সে সময় দল হারলে তাঁরা ভাবতেন যে ব্যর্থতা তাঁদেরই। এমনকি তিনি আর শ্যাম থাপা ফুটবলের হারের কথা ভেবেই মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়তেন। আর ঘুমোতে পারতেন না। এতটাই ফুটবল অন্ত প্রাণ ছিল। নিজেকে ভাল ফুটবলার বলতে নারাজ। শুধু বললেন সততা, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেছেন গোটা কেরিয়ারে। স্পিড, ফিটনেস আর পাওয়ার ছিল তাঁর সম্বল।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/07/mohun-bagan-day-celebration.jpg)
এদিন চুনী গোস্বামী সহ প্রাক্তন অধিনায়কদের হাতে গোল্ড কার্ড তুলে দেওয়া হল। নতুন মরসুমের দলের সঙ্গে পরিচয় পর্ব সেরেই আত্মপ্রকাশ পেল নয়া রূপে সজ্জিত ওয়েবসাইট।
দেখে নেওয়া যাক বাকি পুরস্কার প্রাপকের নাম:
বর্ষসেরা ফুটবলার: শিলটন পাল
বর্ষসেরা ক্রিকেটার: সুদীপ চট্টোপাধ্যায়
সেরা যুব ফুটবলার: সৌরভ দাস
অনুর্ধ ১৭ বিশ্বকাপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বিশেষ পুরস্কার পেলেন রহিম আলি।