গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলেই বোঝা গিয়েছিল যে, ৩ অক্টোবর ঠিক কী হতে চলেছে! বাস্তবে সেটাই ঘটল। মোহনবাগানের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না অঞ্জন মিত্র। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে সচিব পদ থেকে নিজের নাম তুলে নিলেন তিনি । তাঁকে সঙ্গ দিলেন হকি সচিবের পদপ্রার্থী শৈলেন ঘোষ ও এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য শুভাশিস পাল।
স্বপনসাধন বসু এবং অঞ্জন মিত্রের বন্ধুত্বের বয়স প্রায় ছয় দশকের কাছাকাছি। আগামী ২৮ তারিখ তাঁদের ভোটের ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বীতার করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটা আর হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ম্যাচে নামার আগেই চ্যাম্পিয়ন টুটু বসু, ধোঁয়াশায় মোড়া বিপক্ষ শিবির
ময়দানে কান পাতলে এখন একটা কথাই শোনা যাচ্ছে। সম্পর্কের কথা ভেবেই বন্ধুর সঙ্গে সম্মুখসমরে নামলেন না অঞ্জন। নির্বাচনটাকে ডার্বি ম্যাচের নজরেই দেখেছিল ময়দানি মহল। কিন্তু সেটা ভীষণ ভাবেই ছিল একতরফা। সৌজন্যে বাগানের বটবৃক্ষ টুটু বসু। ভোটের প্রচারে তাঁর সমর্থনে ফ্লেক্সে ছেয়ে গিয়েছিল শহরের বিভিন্ন প্রান্ত। এখানেই শেষ নয়। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো ও লক্ষ্মীরতন শুক্লারা টুটুবাবুর হয়েই প্রচার করেছিলেন। অন্যদিক বিরোধী শিবির প্রচার থেকে ছিল শতহস্ত দূরে।
যেদিন বাগান তাঁবুতে টুটু বসু মনোনয়ন জমা দিয়ে ২২ সদস্যের প্যানেল ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, সেদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে মনোনয়ন জমা দিতে আসেননি অঞ্জন। এমনকী তাঁর কন্যা সোহিনী মিত্র ও জামাই কল্যাণ চৌবে দীর্ঘক্ষণ ক্লাবের মধ্যে বৈঠক করেও মনোনীত একজন সদস্যের নাম বলতে পারেননি। সেসময় ক্লাবের লনে টুটু বসুর জন সমর্থন ও শরীরি ভাষা দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি যেন ম্যাচ না-খেলেই ট্রফি জিতে নিয়েছেন। বলরাম চৌধুরী ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে মিডিয়ার সামনে একেবারে মন খুলে ব্যাট চালিয়েছিলেন।
অঞ্জন মিত্রর সঙ্গেই বকেয়া বেতন, স্পনসরহীনতা শব্দগুলো জড়িয়ে গেছিল। এগুলোই তাঁকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। তার ওপর ফুটবল সচিব স্বপন (বাবুন) বন্দোপাধ্যায়ও চলে এসেছিলেন টুটু বসুর দলে। এটাও ছিল অঞ্জনবাবুর কাছে বড় ধাক্কা।
জয়েন্ট প্যানেলের কথা শোনা গিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ২৮ তারিখ নির্বাচন হচ্ছেই। কিন্তু অঞ্জন গোষ্ঠীর মাথার ওপর থেকে ছাতাটাই সরে গেল।