করোনা ভাইরাসের কারণে প্রবল আর্থিক সমস্যা। সেই কারণেই মোহনবাগান ফুটবলার এবার সবজি বিক্রি করতে শুরু করে দিলেন। মোহনবাগান যুব দলের নামি ফুটবলার দীপ বাগকে দেখে এখন সকলের চক্ষু ছানাবড়া।
গোটা দেশে করোনা পরিস্থিতি প্রত্যেকদিনই খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। গোটা দেশে লকডাউন জারি ছিল প্রায় তিনমাস। এখনও কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে লকডাউন জারি করা হয়েছে।
এমন অবস্থাতেই প্রবল আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। মোহনবাগানের জার্সিতে খেলা দীপ বাগও এই সমস্যায় জর্জরিত। হুগলি জেলার কোন্নগরের বাসিন্দা দীপ পরিবারের খরচ টানতে না পেরে তাই রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।
দুর্গাপুর মোহনবাগান একাডেমিতে অনুশীলন করা দীপ গত বছর চুটিয়ে ক্লাবের জার্সিতে খেলেছেন। স্টপার পজিশনে খেলতেন। একাডেমিতে থাকাকালীন দীপ ১০০০ টাকা করে স্টাইপেন্ড পেতেন। সেই টাকা আর বাবার উপার্জনের টাকায় সংসারের খরচ চলত। তবে এখন খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন এই ফুটবলার।
অতিমারীর প্রকোপ বাড়তেই খেলা ছেড়ে বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তারপর ৬৮ বছরের বৃদ্ধ বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের তাগিদেই এরপরে রাস্তায় সবজি বিক্রি করতে নেমে পড়েন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দীপ বাগ জানালেন, "লকডাউনের সময় বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই রিকশা টানতে পারছেন না। সেই কারণেই এই কাজ বেছে নি-ই। এখন অন্তত পরিবারের মুখে দুবেলা খাবার জোটে।"
গত বছর অনুর্দ্ধ-১৯ পর্যায়ে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে সেই বিতর্কিত ডার্বি ম্যাচে খেলেছিলেন সবুজ মেরুন জার্সিতে। দর্শকদের হাঙ্গামার পরে শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচ বাতিল করে ইস্ট-মোহন দুই দলকেই যুগ্ম জয়ী ঘোষণা করা হয়।
ফুটবলারের দুর্দশা দেখে ফ্যান ক্লাব এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই দীপ বাগকে সাহায্যের বার্তা দিয়ে ফান্ড তোলার কাজ শুরু করে সেই ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা। দিল্লি মেরিনার্সের তরফে বলা হয়েছে, "আমরা ফান্ড তৈরি করেছি। পাশাপাশি রঞ্জিত বাজাজের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ট্রায়ালের কোনো উপায় নেই। তবে স্টাইপেন্ডের বন্দোবস্ত করার প্ৰতিশ্রুতি দিয়েছেন। লকডাউন উঠলেই ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হবে যাতে খেলা থেকে দীপ হারিয়ে না যায়।"
দীপ যদিও বলেছেন, খেলা ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই। কারণ তিনি বিকালে অনুশীলন জারি রেখেছেন। "একবার এই সময় কেটে যাক, তারপরে পেশাদারিভাবে আবার মাঠে ফেরার চেষ্টা করব। আশা করি আইলিগে খেলতে পারব। কারণ ফুটবলই আমার কাছে একমাত্র স্বপ্ন।" বলছেন তিনি।