প্রায় একমাস অসুস্থ ছিলেন। এসএসকেএম-এ চিকিৎসা চলছিল। তবে সুস্থ হয়ে আর ফেরা হল না কিংবদন্তি বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ৯২ বছরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন এই ক্যাপ্টেন।
হাওড়ার বালিতে জন্ম। সেখানেই ফুটবলে প্রাথমিক পাঠ। মোহনবাগান ওয়েবসাইটে এক সাক্ষাৎকারে কিংবদন্তি বলেছিলেন, "বাবা ভীষণ কড়া ছিলেন। পড়াশুনা না করার জন্য প্রায়ই বাবার কাছে বকুনি খেতাম। তা সত্ত্বেও আড্ডায় ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডানের মত ক্লাবের কথা শুনতে মুখিয়ে থাকতাম।"
ফুটবলে হাতেখড়ি বালি হিন্দু স্পোর্টিং ক্লাব এবং বালি ওয়েলিংটন ক্লাবে। ১৯৪৮-এ বালি প্রতিভা স্পোর্টিং ক্লাব কলকাতা ফুটবল লিগের তৃতীয় ডিভিশনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। সেই লিগেই নজর কেড়ে নেন তরুণ বদ্রু। পরের বছরেই বিএনআর সই করায় কিংবদন্তিকে। বিএনআরকে লোয়ার ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন কফে বদ্রু প্রিমিয়ার লিগে যোগ্যতা অর্জনে সাহায্য করেন। তারপরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
মোহনবাগানে নাম লেখান ঠিক পরের মরশুমে। সেখানেই আট বছর সবুজ মেরুন জার্সি গায়ে চাপানো এবং প্রায় সমস্ত খেতাব অর্জন করা।
খেলতে খেলতেই মেডিক্যাল স্টুডেন্ট হিসাবে আরজি কর কলেজে ভর্তি হন। একসময় তাঁকে হয় চিকিৎসক অথবা মেডিক্যাল স্টুডেন্ট- একটা পথ বেছে নিতে হত। তিনি ফুটবলকেই বেছে নেন।
মোহনবাগানের হয়ে ট্রফির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। ডুরান্ড কাপ জিতেছেন ১৯৫৩-এ। কলকাতা ফুটবল লিগ জিতেছেন চারবার (১৯৫৪, ১৯৫৫, ১৯৫৬, ১৯৫৯)। তার নামের পাশে আইএফএ শিল্ড তিনবার (১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৫৬)। রোভার্স কাপ জিতেছেন ১৯৫৬-এ।
ক্লাবের হয়ে দুর্ধর্ষ পারফর্মার শুধু নয়। দেশের হয়েও আলো ছড়িয়েছেন। ১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক ঘোষিত হন তিনি। দেশের হয়ে জিতেছেন কলম্বো কাপ-ও।
বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে ভারতীয় ফুটবলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।