পিকে, চুনীর সঙ্গে একসঙ্গে উচ্চারিত হত তাঁর নাম। পিকে, চুনী, বলরামকে বলা হত ভারতীয় ফুটবলের ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর। পিকে, চুনী আগেই অচেনা জগতে পাড়ি দিয়েছিলেন। এবার না দেখার দেশে পাড়ি দিলেন বলরামও।
গত কয়েকমাস ধরেই অসুস্থ ছিলেন বলরাম। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মূত্রনালীতে সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হতে হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।
তিনি ভারতের সোনার ফুটবল সময়ের প্রতিনিধি। ১৯৬২-তে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে রূপকথা গড়েছিল ভারত। ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে পরাস্ত করে সোনার মুকুট পরে ভারত। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখিয়ে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেন বলরাম। সেসব ঘটনা আগেই মিথ হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবারের পর সেই মিথ হয়ে যাওয়া ইতিহাস ধাক্কা খেল।
৫০, ৬০-এর দশকে পিকে, চুনীর সঙ্গে দেশের ফুটবলকে অবিশ্বাস্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন বলরাম। ১৯৬০-এ রোম অলিম্পিকে ভারতের লড়াই দেশের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। গ্রুপ অফ ডেথ-এ ভারতের সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, পেরুর মত শক্তিশালী দল। প্ৰথম ম্যাচেই ভারত হাঙ্গেরির কাছে ১-২ গোলে হেরে যায়। ভারতের হয়ে একমাত্র গোল করেন তুলসিদাস বলরাম। গ্রুপে ফ্রান্সের বিরূদ্ধে নিজের ফুটবল প্রতিভার ঝলক দেখান তিনি।
ভারতীয় ফুটবলে তর্কাতীতভাবে অন্যতম সেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড। তবে উইঙ্গার হিসাবেও আস্থা অর্জন করেছেন কোচের। হায়দরাবাদেই জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। হায়দরাবাদকে সন্তোষ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন করানোর পর জাতীয় দলে সরাসরি ডাক পেয়ে যান। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশকে একের পর এক সাফল্যের শৃঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন তিনি।