মনে প্রাণে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক। কলকাতার বাইরে থাকলেও প্রিয় দলের প্রতি খোঁজ খবর রাখতেন নিয়মিত। এহেন লাল-হলুদ সমর্থক বাপ্পি লাহিড়ীকেই নিয়েই বড়সড় পরিকল্পনা কষেছিলেন মোহনবাগানের তৎকালীন সচিব প্রয়াত অঞ্জন মিত্র।
তাঁর পরিকলনা ছিল নামি বিদেশি ক্লাবের আদলে মোহনবাগানেরও নিজস্ব থিম সং থাকবে। সবুজ মেরুন ফুটবলারদের উদ্দীপ্ত করা ছাড়াও যে গান হিল্লোল তুলবে দল মাঠে নামলেই। আর সেই থিম সংয়ের জন্য অঞ্জন মিত্রের পছন্দ ছিল ডিস্কো কিং বাপ্পিদা।
আরও পড়ুন: অমিত কুমারের সঙ্গে লতার ডুয়েট ইস্টবেঙ্গল মাঠে! এখনও অমলিন লাল-হলুদ সেই স্মৃতি
জানা যায়, অঞ্জন মিত্র স্বয়ং বাপ্পি লাহিড়ীর গানের ভক্ত ছিলেন। তবে 'আয়াম আ ডিস্কো ড্যান্সার'-এর স্রষ্টাকে দিয়ে থিম সং বানানোর প্রচেষ্টা সফল হয়নি। কেন? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে মোহনবাগান শীর্ষকর্তা দেবাশিস দত্ত বলছিলেন, "ক্লাবের এরকম এক পরিকল্পনা প্রায় ফাইনাল হয়ে গিয়েছিল। তবে বাপ্পি লাহিড়ী চূড়ান্ত ব্যস্ত থাকায়, কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। যদিও পরে সেই থিম সং বানানো আর হয়ে ওঠেনি।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220216-WA0040.jpg)
মোহনবাগান ক্লাবে নিয়মিত হাজির হতেন মান্না দে। বাপ্পি লাহিড়ী অবশ্য কলকাতার পাঠ চুকিয়েছিলেন বহু বছর আগে। কয়েক দশক ধরে আরব সাগরের তীরে জুহুর বাসিন্দা। শেষদিকে অসুস্থতা কলকাতার সঙ্গে আরও ব্যবধান বাড়িয়ে দেয়। সেই হিসাবে ময়দানি ফুটবলের সঙ্গে যোগসূত্রও ক্ষীণ হয়ে এসেছিল শেষের দিকে।
ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক হিসাবে অবশ্য নাম লিখিয়েছিলেন বহুদিন আগেই। ক্লাবের লাইফ টাইম মেম্বার ছিলেন তিনি। ক্লাবের ৬৬৯ নম্বর মেম্বার তারাদের দেশের অতিথি হয়ে যাওয়ার পরে ইস্টবেঙ্গলে নেমে আসে শোকের ছায়া। তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়। প্রিয় সুরকারকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ক্লাবের লাল হলুদ পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220216-WA0039.jpg)
ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা রাজা গুহ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলছিলেন, "উনি কলকাতায় থাকতেন না। সেই জন্য ক্লাবে যাওয়া আসা কমে এসেছিল। দল মুম্বইয়ে গেলে তখন দেখা-সাক্ষাৎ হত। তবে উনি পাঁড় ইস্টবেঙ্গল সমর্থক ছিলেন।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220216-WA0038.jpg)
ইস্টবেঙ্গলের তরফেও নাকি ছিল থিম সং বানানোর পরিকল্পনা। তবে ক্লাবের একশো বছরের থিম সং গেয়েছেন অরিজিৎ সিং। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে রাজা গুহ বলছিলেন, "একশো বছরের থিম সং তো অরিজিৎ গেয়েছে। আসলে বাপ্পি দা গত দু-তিন বছর ধরেই প্রবল অসুস্থ ছিলেন। গান বাজনার মধ্যেই তো উনি ছিলেন না।"
ইস্টবেঙ্গল কিংবা মোহনবাগানের থিম সংয়ে থাকল না বাপ্পিদার ছোঁয়াচ, ময়দানের বিষণ্নতা আপাতত বুধবারের পরে আরও প্রকট।