প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে মোহনবাগান পেল নয়া ইনভেস্টর সংস্থা। মার্কিন মুলুকের টেকনোলজি কোম্পানি স্ট্রিমকাস্ট এলো গঙ্গাপারের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবে। দীর্ঘদিন ধরেই স্পনসরের সমস্যায় জর্জরিত সবুজ-মেরুন। এবার নয়া বিনিয়োগকারীকে পাশে পেয়ে আগামী নভেম্বরে আইপিএল-এর দরপত্র জমা দেবে ময়দানের এই প্রধান। বাগানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং পাশের পাড়ার ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এখন কর্পোরেট। সেই পথেই হাঁটছে মোহনবাগান।
বুধবার মোহনবাগান তাঁবুতে সাংবাদিক বৈঠক করে নয়া বিনিয়োগকারী সংস্থার নাম ঘোষণা করলেন ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র। তিনি জানালেন, মোহনবাগানে শুধু ফুটবলের জন্য ১০ বছর ধরে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে স্ট্রিমকাস্ট। এবং আরও ১৫০ কোটি টাকা তারা বাজার থেকে তুলবে। মোহনবাগানের ৭৪ শতাংশ শেয়ার থাকবে স্ট্রিমকাস্টের কাছে। যদিও ক্লাবের নাম পরিবর্তন হবে না। বিনিয়োগকারীদের নাম জুড়বে না ক্লাবের আগে বা পরে। কোম্পানির নাম মোহনবাগান প্রাইভেট লিমিটেডই থাকছে। পাবলিক লিমিটেডের কথা পরে ভাবা হবেই বলেই জানা যাচ্ছে। অঞ্জন বাবু বললেন, “এদিন সকালে এমার্জেন্সি এক্সিকিউটিভ কমিটর বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্লাবের অনান্য ডিরেক্টররাও সমর্থন করেছেন।”
আরও পড়ুন: নতুন বিনিয়োগের ডানায় ভর করে ভবিষ্য়তের রূপরেখা ইস্ট বেঙ্গলের
অঞ্জনবাবু আরও জানিয়েছেন, অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়েই স্পনসরের বিষয়ে তাঁরা এবার অনেক বেশি সতর্ক। এর আগে দু’বার স্পনসর ক্লাবে এসেও চলে গিয়েছিল। এবার তাঁরা ভাল কিছু হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। এখনও পর্যন্ত কাগজে-কলমে কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেই জন্য মোহনবাগান-স্ট্রিমকাস্টের মধ্যে মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। অঞ্জনবাবু আশাবাদী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত হয়ে যাবে সব কিছু। বাগানের ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "মোহনাবাগান আগামী নভেম্বরেই আইপিএল-এর দরপত্র জমা দেবে।” ক্লাব কর্মসমিতির সদস্য এবং অঞ্জন কন্যা সোহিনী চৌবেও স্বপনের সুরে গলা মিলিয়েছেন।
গত জুলাই মাসে ইস্টবেঙ্গল নয়া স্পনসর হিসেবে পেয়েছিল বিজনেস সার্ভিসেস প্রোভাইডার কোয়েসকে। দু’মাসের মধ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান পেয়ে গেল তাদের নয়া স্পনসর। এখন একথা হলফ করে বলাই যায় যে, আগামী বছর কলকাতার দুই প্রধানই খেলবে আইএসএল। সামনেই মোহনাবাগানে নির্বাচন। নির্বাচনের আগেই অঞ্জন মিত্র দিয়ে দিলেন মাস্টার স্ট্রোক। টুটু গোষ্ঠীকে কার্যত চাপে ফেলে দিলেন তিনি। যদিও অঞ্জনবাবু রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয়, বিষয়টাকে দেখছেন মোহনবাগানের স্বার্থেই। শেয়ার ছাড়া নিয়েও তর্কবিতর্ক থাকছেই। কিন্তু বাগান সচিব বলছেন, ক্লাবের স্বার্থে সবাই এগিয়ে আসবেন।