টানা ১৬ বছরের গৌরবোজ্জ্বল কেরিয়ার। ৩৯ বছরে সেই প্যাশন-প্রফেশনকেই বিদায় জানালেন ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাঠে হোক কিংবা মাঠের বাইরে তিনি সর্বদাই 'ক্যাপ্টেন কুল'। স্ট্র্যাটেজি-রসবোধে সতীর্থ, সাংবাদিক, ভক্তকুল সকলকেই মাতিয়ে রাখতে জানতেন 'মাহি ভাই'। ক্রিকেটের ইতিহাসে উইকেট কিপার হিসেবে স্ট্যাম্পিংয়ে নজির রেখেছেন তিনি। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়েই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতেন শুধু বাক্য বিনিয়মে। অবসরের পর সেই সব অডিও ক্লিপই এবার প্রকাশ্যে এল।
ভারতের কুল-চা কে সবাই চেনে! 'কুলচা' নয় এ হল কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চাহলের জুটির নাম। দুজনেই স্পিন বোলার। সবে ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম ম্যাচ। ডেভিড ওয়ার্নারকে একের পর এক ভুল লেংথে বল দিচ্ছিলেন কুলদীপ। উইকেটের পিছন থেকেই নবীন প্রজন্মকে ধোনি বলে উঠলেন, "থোড়া পিছে ডালো"। ব্যাস! কাজ হাসিল। কুলদীপের পরের বলে কাট শট মারতেই আউট ওয়ার্নার। একই ম্যাচে চাহালকেও সঠিক দিশা দেখিয়েছিলেন ধোনি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফেরাতে উইকেটের পিছন থেকেই বলে ওঠেন, "ডান্ড পে ডাল" (উইকেট লক্ষ্য করে বল ছোড়)। একবাক্যে সকলেই স্বীকার করেন উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়েই ম্যাচের মোড় ঘোরাতে পারদর্শী ছিলেন মাহি।
মাঠে তিনি কড়া মেজাজের অধিনায়ক একেবারেই নয়। বরং মজার মজার কথা বলেই দলের বাকিদের মনসংযোগ বাড়ানোর কাজটা করে যেতেন অবলীলায়। আমেদাবাদের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচের একতা উদাহরন দেওয়া যাক। নিউজিল্যান্ড তখন ৩৯১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। হঠাৎই স্পিন বোলিং লাইন আপ থামিয়ে শ্রীসন্থ কে নিয়ে এলেন ধোনি। প্রথম দুটি বল লেংথ মত হল না। অধিনায়ক মাহি ভাই অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। বোলারের লেংথ ফেরাতে দাওয়াই দিলেন, "ওয়ে শ্রী, গার্লফ্রেন্ড নেহি হ্যায় উধার, ইধার আজা থোডা"।
"পূজারা কো উধার তালি বাজানে নেহি রাখখা হ্যায়"
২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ। ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম এবং ওয়াটলিং তখন ক্রিজে। রবীন্দ্র জাদেজাকে এনে জুটি ভাঙতে উদ্যোগী ধোনি। কিন্তু জাদেজার স্পিনে জাদু হচ্ছে না। কিছুটা রেগে গেলেন ধোনি। কিন্তু তিনি সেন্স অফ হিউমারের রাজা। উইকেটের পিছন থেকেই বলে উঠলেন, "জাড্ডু থোড়া অফ মে ডাল, পূজারা কো উধার তালি বাজানে নেহি রাখখা হ্যায়"
বোলার বিরাটকে বিশেষ উপদেশ
২০১৬ সালের টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। বোলিংয়ে বদল আনতে বিরাট কোহলিকে (চিক্কু নামেই ডাকতেন মাহি) নামালেন। নেমেই কেভিন পিটারসনকে ইয়র্করে প্যাভেলিয়ানে ফেরান বিরাট। এরপর আনন্দের চোটে বলে ভ্যারিয়েশন আনতে যান। যার ফলে একের পর এক ওয়াইড আর বাই রান হতে শুরু করে। উইকেটের নেপথ্যে থেকে ভেসেই আসে "জিতনা বোলা উতনা হি কর, বোলার মাত বন।"