ধোনি তর্কাতীতভাবে বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক। মাঠে পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মহেন্দ্র সিং ধোনির জুড়ি মেলা ভার। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কীভাবে মাঠে ক্ষিপ্র হতে হয়, গেম এওয়ারনেসে কীভাবে প্রতিপক্ষকে পিছনে ফেলতে হয়, স্কিলের ঝলকের সঙ্গে কীভাবে বুদ্ধিমত্তায় প্রতিপক্ষকে কাত করতে হয়- এসব-ই মহেন্দ্র সিং ধোনির কাছে শিক্ষণীয়। নতুন প্রজন্মের অধিনায়কদের কাছে সাক্ষাৎ নেতৃত্বের ম্যানুয়াল তিনি।
ক্রিকেট মাঠে অজস্রবার স্রেফ বুদ্ধি ব্যবহার করে বিপক্ষকে মাটি ধরিয়েছেন। কুল-ই পায়নি বিপক্ষের প্লেয়াররা। পরে গোটা বিষয় বুঝতে পেরে ধোনির জন্য সম্ভ্রম প্রদর্শন করা ছাড়া হাতে কোনও অপশন-ই থাকে না।
কলকাতায় যখন বিশ্বকাপ ঘিরে তুমুল হৈচৈ। সেই সময়েই ধোনির পা পড়েছিল শহরে। ইডেনে বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের বিপক্ষে নামছে, সেই সময়েই কলকাতার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে নিয়ে কার্যত ট্রোল করার বসলেন ধোনি। কীভাবে? জেনে নেওয়া যাক ধোনির কথাতেই।
"খড়গপুরে যখন রেলওয়ের চাকরি করতাম, তখন আমার বাংলা অনেক ভালো ছিল। এখন বাংলা বলার চেষ্টা করলে হয়ত ভুলভাল হয়ে যাবে। অনেকের খারাপ লেগে যাবে। তবে আমি বাংলা খুব ভালো বুঝতে পারি।"
"আমরা একবার বাংলাদেশে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। ক্রিজে ব্যাট করতে নেমেছিলাম। ওঁদের তো ধারণাই নেই যে আমি বাংলা বুঝি। কিপার পিছন থেকে চিৎকার করে ফাস্ট বোলারকে নির্দেশ দিয়ে চলেছিল। আমিও আগাম জেনে যাচ্ছিলাম, বোলার কোন লেন্থে বল করতে চলেছে। ম্যাচ যখন খতম হয়েছিল, ওঁরা আমার সঙ্গে আলোচনা করছিল। তখন ওঁরা বুঝতে পেরে বলে, 'আরে এ তো বাংলা বুঝতে পারে!'
ধোনি যখন বাংলাদেশকে 'রোস্ট' করার মেজাজে সেই সময় ইডেনে আরও একবার হেরে ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই ছিটকে গেল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে পরাস্ত হয়ে বিশ্বকাপের প্ৰথম দল হিসেবে শেষ চারের লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত করল। টসে জিতে প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তানি পেসারদের সামনে শুরু থেকেই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ২৩/৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল একসময়। সেখান থেকে মাহমুদুল্লাহ এবনভ লিটন দাসের ৭৯ রান পার্টনারশিপ গড়লেও কাজের কাজ হয়নি। শেষদিকে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২০৪ রানের টার্গেট চেজ করতে নেমে পাকিস্তান ওপেনিং জুটিতেই ১২৪ রান যোগ করে দলের জয় নিশ্চিত করে যায়। ফখর জামান, আব্দুল্লা শফিক জোড়া হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়ে গেলেও পাকিস্তানকে জিতিয়ে দেন ইফতিকার আহমেদ এবং মহম্মদ রিজওয়ান। জয়ে সেমিফাইনালের সম্ভবনা বাঁচিয়ে রাখল পাকিস্তান।