আর কোনওদিন কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারকে সাত নম্বর জার্সিতে আন্তর্জাতিক স্তরে খেলতে দেখা যাবে না। বোর্ডের তরফে অভূতপূর্ব সম্মাননা জ্ঞাপন করা হল মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্য। দীর্ঘ দেড় দশক ধরে যে জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাঁপিয়ে গিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী মহানায়ক, সেই জার্সিকে অবসরে পাঠানো হল।
ধোনির আগে একমাত্র শচীনের ১০ নম্বর আইকনিক জার্সি অবসরে পাঠিয়েছিল বোর্ড। বিসিসিআইয়ের তরফে জাতীয় দলের সমস্ত ক্রিকেটারকে বিশেষত অভিষেক করতে চলা তারকাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কোনওভাবেই বহু স্মৃতি জড়িয়ে থাকা ১০ এবং ৭ নম্বর জার্সি বাছাই করার সুযোগ পাবেন না।
ভারতে নতুনদের জন্য জার্সি বাছাইয়ের অপশন এতে আরও সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্রিকেটার ১ থেকে ১০০ যে কোনও নম্বরের জার্সি পরতে পারেন। তবে বিসিসআইয়ের অভ্যন্তরীণ নিয়ম একটু আলাদা। কতটা? বোর্ডের এক আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "জাতীয় দলের নিয়মিত অথবা ভাবনায় থাকা তারকাদের জন্য ৬০ পর্যন্ত জার্সি নম্বর বরাদ্দ রয়েছে। কোনও ক্রিকেটার এক বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও তাঁর জার্সি অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া হয় না। তাই অভিষেককারীদের ৩০টি ভিন্ন নম্বরের মধ্যে বাছাই করতে হয়।"
চলতি বছরের শুরুর দিকে যখন যশস্বী জয়সোয়াল টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে অভিষেক করেন, তাঁর পছন্দ ছিল ১৯ নম্বর জার্সি। যে জার্সিতে তিনি রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেন। তবে সেই জার্সি বরাদ্দ ছিল ক্রিকেট থেকে ধারাভাষ্যকার বনে যাওয়া দীনেশ কার্তিকের। সেই কারণেই যশস্বী বেছে নেন ৬৪ নম্বরের জার্সি।
এমনকি ভারতের যুব পর্যায়েও জার্সি নম্বর নিয়ে এই লড়াই চালু রয়েছে। দেশের প্রতিশ্রুতিমান তারকা হিসেবে গিলের পছন্দ ছিল ৭ নম্বর জার্সি। অবশ্যই তা মহেন্দ্র সিং ধোনি নামক এক ব্যক্তির দৌলতে। তবে গিলে সেই পছন্দের নম্বরের জার্সি আগেই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। এরপরে ৭৭ নম্বর জার্সিতে খেলতে শুরু করেন তিনি। সিনিয়র পর্যায়েও এই জার্সি নম্বর একই রয়েছে তাঁর।
কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদদের জার্সি নম্বর অবসরে পাঠানো বহু পুরোনো ট্র্যাডিশন। দিয়েগো মারাদোনার সম্মানে সিরি-এ ক্লাব নাপোলিতে কেউ বহুদিন ১০ নম্বর জার্সি পরেন না। ছয়বার এনবিএ খেতাব জেতা সর্বকালের সর্বসেরা বাস্কেট বল তারকা মাইকেল জর্ডনের ২৩ নম্বর জার্সি অবসরে পাঠিয়েছে চিকাগো বুলস।
ধোনি-শচীনের পরবর্তীতে বতর্মান সময়ে কোহলি-রোহিত সবথেকে জনপ্রিয় তারকা। কোনওকারণে ভবিষ্যতে বিরাটের ১৮ নম্বর এবং রোহিতের ৪৫ নম্বর জার্সিকে যদি অবসরে পাঠানো হয়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।