বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশি উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে। গোটা বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কলঙ্কের ইতিহাস গড়েছেন তিনি। প্ৰথম বাংলাদেশের ব্যাটার হিসাবে হ্যান্ডলিং দ্যা বল করে ফিল্ডিংয়ে বাধা সৃষ্টি করার জন্য আউট হয়েছেন।
আর তারপরেই তাঁর গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হল গড়াপেটার কালো দাগ। বাংলাদেশের একাত্তর টিভির তরফে সরাসরি মুশফিকুরের বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগ আনা হল। তোলপাড় ফেলা রিপোর্টে একাত্তর টিভি জানিয়ে দিল, মুশফিকুরের হ্যান্ডলিং দ্য বল-এ গড়াপেটার যোগাযোগ থাকতে পারে।
এরপরেই ক্ষিপ্ত মুশফিকুরের তরফে আইনি নোটিশ পাঠানো হল টিভি চ্যানেলটিকে। বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সেই নোটিশ পাঠিয়ে একাত্তর টিভিকে নির্দেশ দিলেন, প্রমাণ দিতে হবে এই গড়াপেটা তত্ত্বের। নাহলে গোটা দেশের সামনে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের তরফে গড়াপেটার যাবতীয় রিপোর্ট মুছে ফেলতে হবে। সেই সঙ্গে লিখিতভাবে জানাতে হবে, এরকম ঘটনা ভবিষ্যতে আর ঘটবে না।
মুশফিকুর রহিমের তরফে যে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে লেখা হয়েছে, "বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজ চলাকালীন গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ‘আউট অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ কে কেন্দ্র করে ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ! সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে!’— শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ৭১ টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান খেলাযোগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে প্রচার করা হয়। প্রতিবেদনে মুশফিকের আউট নিয়ে মনগড়া, অসত্য, উদ্দেশ্য-প্রণোদিত তথ্য পরিবেশন করে তাঁর দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ওপর কালিমা লেপন করা হয়েছে এবং তাঁর সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি এমন সময়ে করা হয়েছে যখন বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট চলমান। উক্ত প্রতিবেদনের কারনে মুশফিকুর রহিম পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে সুনাম ক্ষুন্নের শিকার হয়েছেন এবং তিনি এই বিকৃত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের কারনে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সময় পার করেছেন।"
কী ঘটেছিল?
দ্বিতীয় টেস্টে প্ৰথমে বাংলাদেশ ব্যাটিং করতে নেমেছিল। মুশফিকুর রহিম যখন ব্যক্তিগত ৩৫ রানে ব্যাটিং করছিলেন, সেই সময়েই অনভিপ্রেত ঘটনা দেখা যায়। কাইল জেমিসনের একটি বল রক্ষণাত্মকভাবে ডিফেন্স করেছিলেন। বল যখন বাউন্স করছিল সেই সময়েই হাত দিয়ে বল সরিয়ে দেন তিনি। ঘটনা হল, বল বাউন্স করলেও তা মোটেই স্ট্যাম্পের দিকে ধাবমান হচ্ছিল না। তা স্বত্ত্বেও কেন বল হাতেল দিয়ে সরাতে গেলেন, তা নিয়ে একরাশ বিস্ময় ক্রিকেট মহলে।
ঘটনার পরেই অনফিল্ড আম্পায়াররা নিজেদের মধ্যে শলা-পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের হস্তক্ষেপের দাবি করেন। এই এতেই ক্রিকেটের নিয়ম মেনে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’-এর কারণে আউট দেওয়া হয় মুশফিকুরকে।