Harpreet Singh Cheema and Navneet Kaur Cheema scale mt everest: এভারেস্টের চূড়ায় গুরু নানকের স্মৃতি বিজড়িত 'গগন প্রধান থাল' ধর্মীয় স্তোত্র পাঠ করলেন প্রবাসী শিখ দম্পতি। গত ২৩ মে সকাল ৭টা ৫০-এ তাঁরা বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ স্পর্শ করেন। এই দম্পতি হলেন হরপ্রীত সিং চিমা ও নবনীত কউর চিমা। হরপ্রীতের বয়স ৪৭। নবনীতের ৪০। দু'জনেই বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের হাতেগোনা দম্পতি এভারেস্ট জয় করেছেন। তাঁদের তালিকায় ঢুকে গেলেন এই দুই প্রবাসী ভারতীয়।
First Sikh couple at Mt Everest: গত বছর, ২০২৩ সালেও এই দম্পতি দুটি পর্বত আরোহণের রেকর্ড গড়েছেন। ১২ জুন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ৬,১৯৪ মিটার উঁচু মাউন্ট ডেনালিতে আরোহণ করেছেন। তারও আগে গতবছরই ১৪ জানুয়ারি, আর্জেন্টিনার মাউন্ট অ্যাকনকাগুয়াও তাঁরা জয় করেন। আর, এবার মে মাসেই ৮,৮৪৮.৮৬ মিটার উঁচু বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জিতে নিলেন।
কাঠমান্ডু থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় হরপ্রীত সিং বলেছেন, 'আমরা গ্রহের সর্বোচ্চ স্থানে দাঁড়িয়ে সর্বশক্তিমানকে স্মরণ করেছি। গুরু নানক বিশ্বকে এই প্রার্থনার স্তোত্র দান করেছেন। আমাদের কাছে অক্সিজেন কম ছিল। চূড়ায় বেশিক্ষণ থাকার সময় সময় হাতে ছিল না। কিন্তু, আমাদের দু'জনেরই মনে হয়েছিল, এটা ঈশ্বরের কৃপা। না-হলে মাউন্ট এভারেস্টে একসঙ্গে উঠতে পারতাম না। সেই জন্যই এভারেস্টের চূড়া থেকেই সর্বশক্তিমানকে স্মরণ করেছি।'
হরপ্রীতের বাড়ি পঞ্জাবের সাংরুরের কাছে কামো মাজরায়। আর, নবনীতের হোশিয়ারপুর জেলার জিয়ান গ্রাম। লুধিয়ানার গুরু নানক দেব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের স্নাতক হরপ্রীত মুম্বইয়ের একটি চিকিৎসা সরঞ্জাম কোম্পানি অ্যাবট ল্যাবসে কাজ করতেন। ২০০৭-এ নবনীত কউরের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তাঁরা বিয়ে করেন। আর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। প্রথমে সিয়াটেল এবং পরে মিশিগান শহরে তাঁরা থাকতে শুরু করেন। সেখানে ম্যারাথন এবং সাইকেল রাইডে অংশ নিতে শুরু করেন। সেই সময়ই তাঁদের ট্রেকিংয়ে আগ্রহ জন্মায়। আর, তাতেই এল সাফল্য।
নবনীত বর্তমানে মিশিগানের ভ্রমণ সংস্থা এক্সপিডিয়ারের একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বলেন, 'আমরা যখন সিয়াটলে থাকতাম, ২০০৮ থেকে ২০১৪, প্রতি বছর সিয়াটেল ম্যারাথনে অংশ নিয়েছি। আমরা মাউন্ট রেইনিয়ারের চারপাশে, সিয়াটেল আর পোর্টল্যান্ডের মধ্যে বাইক রাইডেও অংশ নিয়েছি। যখন মিশিগানে থাকতে শুরু করি, তখন থেকে আমাদের ট্রেকিংয়ে আগ্রহ জন্মায়। ২০১৫ থেকে আমরা প্রতিবছর ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেস ম্যারাথনে অংশ নিচ্ছি।'
পর্বতারোহণের শুরুটা হয়েছিল পেরুতে ২,৪৩০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত প্রাচীন ইনকা সভ্যতার শহর মাচু পিচুতে ভ্রমণের পর। সেটা ২০১৮ সালের ঘটনা। তারপর এই দম্পতির পর্বতারোহণের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। ২০১৯ সালে, তাঁরা আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত ৫,৮৯৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মাউন্ট কিলিমিঞ্জারো জয় করেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, বিশ্বের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বা সপ্তশৃঙ্গ জয় করবেন। অর্থাৎ, প্রতিটি মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করবেন। এভারেস্ট, সেই তালিকারই অংশ ছিল।
আরও পড়ুন- ফোন করে টুইট মোছার জন্য ‘চাপ’ রায়নাকে! অতীতের ‘রক্তাক্ত’ স্মৃতি ভেসে উঠতেই অস্থির আফ্রিদি
হরপ্রীত বর্তমানে মিশিগানের অন্যতম সেরা মার্কিন স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ট্রিনিটি হেলথের ভাইস-প্রেসিডেন্ট। তিনি জানিয়েছেন, 'আমরা বন্ধুদের সঙ্গে মাউন্ট কিলিমিঞ্জারো গিয়েছিলাম। ট্রেকটা সহজই মনে হয়েছিল। তখনই, আমরা সপ্তশৃঙ্গ জয়ের সিদ্ধান্ত নিই। ২০২২-এ ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রাস জয় করেছি। এবার এভারেস্ট করলাম।'