পাকিস্তান: ৪৪৮/৬, ১৪৬/১০
বাংলাদেশ: ৫৬৫/১০, ৩০/০
Pakistan vs Bangladesh 1st Test Result: গন্ধ পেয়ে গিয়েছিল আগেই। মুশফিকুর রহিমের ১৯১ রানের ম্যারাথন ইনিংসের সৌজন্যে পাকিস্তানের মাটিতেই পাকিস্তানকে পেড়ে ফেলার স্বপ্ন বোনা শুরু হয়ে যায় শনিবার-ই। আর ইতিহাস রবিবারই। পাকিস্তানের কার্যত শুইয়ে হারাল বাংলাদেশ।
চতুর্থ দিন ১১৭ রানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় পাকিস্তান দিন শেষ করে ২৩/১ অবস্থায়। সায়ুম আয়ুব ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে ব্যাট করছিলেন আব্দুল্লা শফিক এবং ক্যাপ্টেন শান মাসুদ। তখনও ৯৪ রানে পিছিয়ে ছিল।
রবিবার বাংলাদেশের লিড পেরোনোর আগেই পাকিস্তান ধসে গিয়েছিল ৮ উইকেট। তারপর পাকিস্তান অলআউট হয়ে যায় বাড়তি ৩০ রান যোগ করার আগেই। পাক ক্রিকেটারদের দ্বিতীয় ইনিংস স্থায়ী হয় মাত্র ৫৫.৫ ওভার। অলআউট মাত্র ১৪৬ রানে। সেই ৩০ রান বাংলাদেশ তৃতীয় সেশনে তুলে দেয় মাত্র ৬.৩ ওভারে। দুই ওপেনার জাকির হাসান (১৫) এবং সাদমান ইসলাম (৯) বিনা বাধায় দলকে জয়ের রানে পৌঁছে দেন। রাওয়ালপিন্ডিতে ১০ উইকেটে জয় পেয়ে সিরিজে অপ্রত্যাশিতভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
পঞ্চম দিনের ফার্স্ট সেশনেই বাংলাদেশের জয়ের দরজা খুলে দেন বোলাররা। প্ৰথম সেশনে ২৬ ওভারের মধ্যেই পাকিস্তান আরও পাঁচ উইকেট হারায়। সবমিলিয়ে প্ৰথম সেশনেই নিশ্চিত হয়ে যায়, কোনও মিরাকল না ঘটলে এই টেস্ট হারতে চলেছে মাসুদ বাহিনী। হাতে মাত্র ৪ উইকেট থাকা অবস্থাতেও সেই সময় পাকিস্তান পিছিয়ে ছিল ৯ রানে।
আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল চুরি করে টেস্ট জেতার অভিযোগ! হেরে গিয়ে বিস্ফোরণ শ্রীলঙ্কার ম্যাথিউসের
তবে দিনের শুরু থেকেই পাকিস্তান ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি। ৬৫/২ হয়ে গেলেও পাকিস্তানের ইনিংস চলছিল মসৃণভাবেই। তবে বাবর আজম ২২ রানে ফেরার পরেই বিপর্যয়ের সূত্রপাত। তারপর আঘা সালমান, সৌদ শাকিলও দ্রুত আউট হয়ে যান।
তবে বাবর নিজের ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে যেতে পারতেন। লিটন দাস ঝাঁপিয়ে পড়া ক্যাচ ঠিকমত তালুবন্দি করতে পারলে টানা দুই ইনিংসে শূন্য করার বিরল নজির গড়তে পারতেন। তবে তিনি ফেরার পরেই পাক ইনিংসে বিপর্যয় শুরু হয় মেহেদি হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে।
পাঁচ উইকেট পতনের পর ক্রিজে নামেন মহম্মদ রিজওয়ান। ক্রিজে নেমেই রিজওয়ান। প্রতি আক্রমণাত্মক ইনিংস শুরু করেন। কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই। রিজওয়ান এগ্রেসিভ খেললেও অন্য প্রান্তে ঝুঁকিবিহীন শট খেলছিলেন আব্দুল্লা শফিক। লাঞ্চের আগে তাঁকে ফিরিয়েই পাকিস্তানের ফিরে আসার রাস্তা একদম বন্ধ করে দেন সাকিব। তাঁকে মিড অফ দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলেন শফিক। তবে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন ক্রিজে টিকে যাওয়া শফিক।
আরও পড়ুন: BCCI ছাড়ছেন জয় শাহ, বোর্ডে ফেরার রাস্তা বন্ধ সৌরভের! বড় খবরে ঝড় উঠল আচমকাই
ঠিক দু বল পরে বাংলাদেশের হয়ে ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সালমান আঘাকে লোভনীয় অফব্রেক দেন। ঝুঁকে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সালমান।
এরপরে লাঞ্চের আগে বাকি ১৬ বল কোনওরকমে খেলে দেন রিজওয়ান-শাহিন আফ্রিদি। পরের সেশনে আরও দুরবস্থা হাজির হয় পাক বাহিনীর জন্য। খুরাম শেহজাদকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই শুরু করেন রিজওয়ান। দুজনে মিলে ১১ ওভার কাটিয়ে দেন। তবে মেহেদি মিরাজ রিজওয়ানকে বোল্ড করে দিতেই খেল খতম। সবমিলিয়ে মিরাজ নেন ৪ উইকেট। সাকিবের সংগ্রহে ৩ উইকেট।
২০২১-এর ফেব্রুয়ারি থেকে ঘরের মাঠে পাকিস্তান একটাও টেস্ট জেতেনি। চাটতে হারের পাশাপাশি পাঁচ ম্যাচ ড্র করেছিল পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয়ে ফেরার মঞ্চ তৈরি ছিল। তবে সেই অপেক্ষা আরও বাড়ল বাবরদের।