পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। সাধারণ মানুষ তো দূর, সমাজের নামি দামি ব্যক্তিরাও এই ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হওয়ার ভুরিভুরি নজির রয়েছে। ইউসুফ ইউহানা থেকে মহম্মদ ইউসুফ হওয়ার পিছনেও নাকি জাতীয় দলের সুযোগ পাওয়ার আকাঙ্খা। পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলে এমনিতেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপস্থিতি খুব কম। পারফরম্যান্স বিবেচ্য হলেও ধর্মীয় পরিচয় নাকি পাকিস্তান ক্রিকেটে সুযোগ পাওয়ার অন্যতম কারণ, এমন বলা হয়।
এই নিয়েই এবার বোমা ফাটালেন পাকিস্তানের প্রাক্তন স্পিনার দানিশ কানেরিয়া। সরাসরি আফ্রিদির বিপক্ষে অভিযোগ করলেন। বলে দিলেন, তাঁকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য রীতিমত চাপ দেওয়া হয়েছিল। তা স্বত্ত্বেও নিজের ধর্মীয় পরিচয় বিসর্জন দেননি তিনি।
আজ তক-এ এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেট শিকারি স্পিনার জানিয়েছেন, "পাকিস্তানে খেলার সময় কেরিয়ারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। দেশের পাশাপাশি কাউন্টি ক্রিকেটেও খেলতাম। ইনজামাম আমাকে অনেক সমর্থন করেছেন। একমাত্র পাকিস্তানি অধিনায়ক তিনি যিনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। শোয়েব আখতারও সমর্থন করত আমাকে।"
"শাহিদ আফ্রিদি সহ বাকি পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা সমস্যায় ফেলতেন। আমার সঙ্গে খেতেও চাইত না ওঁরা। ওঁরা সবসময় ধর্ম বদলে ফেলার জন্য চাপ দিত। এর মূল হোতা ছিল আফ্রিদি। বহুবার ও আমাকে ধর্ম বদলে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে। তবে আমার কাছে ধর্মই আগে। ইনজামাম উল হক কখনই এভাবে আমার সঙ্গে কথা বলতেন না।"
কেরিয়ারে অভাবনীয় সাফল্য স্বত্ত্বেও পাকিস্তান ক্রিকেটে একঘরে হয়ে পড়েছিলেন। এমনটাই বলছেন তিনি। জানিয়েছেন, "পিসিবি আমাকে কখনই সমর্থন করেনি। হিন্দু হওয়ার জন্য। আমি সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারতাম। স্রেফ পারফরম্যান্সের জন্যই আমাকে বাদ দিতে পারত না ওঁরা। পাকিস্তান কখনই চায় না, কোনও হিন্দু সমস্ত সকলের ঊর্ধে উঠে সব রেকর্ড ভেঙে দিক। ভারতে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধে উঠে সকলকে সমান সুবিধা দেওয়া হয়। সেই সময় আমার বাবা-ও মারা গিয়েছিলেন। ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েছিলাম।"