চলে গেলেন পান্নালাল চট্টোপাধ্য়ায়। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্য়াগ করেন ফুটবলপাগল মানুষটি। রেখে গেলেন ৭৮ বছরের স্ত্রী চৈতালি চট্টোপাধ্য়ায়কে।
কলকাতা ময়দানে পানুদা বলেই পরিচিত ছিলেন পান্নালালবাবু। তিনি আর তাঁর স্ত্রী মিলে গড়েছেন এক অনন্য় কীর্তি। খিদিরপুরে রাম কমল স্ট্রিটের এই দুই বাসিন্দা একসঙ্গে ১০টি বিশ্বকাপ মাঠে বসেই দেখেছিলেন। আর এরপরেই তাঁরা হয়ে যান তিলোত্তমার ‘সেলিব্রিটি দম্পতি’।
ফুটবলের শহর কলকাতা যখন সাদা-কালো টিভি সেটে প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাদ নিয়েছিল তখন এই দম্পতি সোজা স্পেন উড়ে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপ দেখতে। সেই ১৯৮২ থেকে ২০১৮। নিজের চোখের সামনে দেখেছেন মারাদোনার বিখ্য়াত 'হ্য়ান্ড অফ গড'। কিংবদন্তি পেলের সঙ্গে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে তাঁদের দেখা হয়েছিল। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল আইকন তাঁদের দেখে চিনতে পেরে বলেই ফেলেছিলেন, "তুমি আবার এসেছ!"
আরও পড়ুন-UCL Draw: রিয়াল মাদ্রিদের সামনে ম্য়াঞ্চেস্টার সিটি, বার্সেলোনার মুখোমুখি নাপোলি
ব্রাজিল বিশ্বকাপের টিকিট হাতে সস্ত্রীক পান্নালাল (ছবি-টুইটার)
রাশিয়া বিশ্বকাপেও হাজির ছিলেন পান্নালাল ও চৈতালি। মোহনাবাগানের অন্ধভক্ত ছিলেন পান্নালাল। একজন বাঙালি হিসাবে এতগুলো বিশ্বকাপ দেখার নজির তাঁর আর চৈতালি ছাড়া কারোরই নেই।
ইতালি, মেক্সিকো, স্পেন, ব্রাজিল, রাশিয়া কোথায় না ছুটে গিয়েছেন পান্নালাল। রাশিয়া থেকে ফিরে আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আশা অসম্পূর্ণই রয়ে গেল তাঁর। আর দেখা হবে না কাতার বিশ্বকাপ। শেষ ৩৬ বছরের বিশ্বকাপ সফরে টানতে হল ইতি।
আরও পড়ুন-ফের জোড়া গোলে ঝলসালেন ফ্রান, মোহনবাগান ২-১ হারাল কেরালাকে
চৈতালি জানিয়েছেন যে দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্য় জনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তাঁর স্বামী। অবস্থার আরও অবনতি হওযায় গত বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু ডাক্তারদের চেষ্টাতেও বাঁচানো যায়নি পান্নালালবাবুকে।
শুধু ফুটবল ফ্য়ান হিসাবেই নয়, পান্নালালকে মনে রাখতে হবে ফুটবলার হিসাবেও। মেওয়ালাল, রশিদ এবং সলিমদের সঙ্গেও ফুটবল খেলেছেন তিনি। কলকাতা ময়দানের প্রায় প্রতিটি ক্লাবেই যাতায়াত ছিল পান্নাবাবুর। আজ মহামেডান ক্লাবে প্র্যাকটিস শুরুর আগে পান্নালালের জন্য় খেলোয়াড়রা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।