Algerian boxer Imane Khelif wins Paris Olympics gold: তাঁর লিঙ্গ পরিচয় ঘিরে উত্তাল হয়েছে অলিম্পিক। তাঁর শারীরিক গঠন, জন্ম পরিচয়, ক্রোমজমের বৈশিষ্ট্য, এমনকি তাঁর শরীরে পুং হরমোনের উপস্থিতির মাত্রা নিয়ে কার্যত পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনাসভা বসে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমন ঘটনাকে সামনে রেখেই গত শুক্রবার ওয়াল্টার ওয়েট বিভাগে সোনা জয় সম্পন্ন করেছেন আলজেরিয়ার বক্সার ইমেন খেলিফ।
তবে তাঁর দায়িত্ব এখনই শেষ হচ্ছে না, ভার্চুয়াল জগতে ক্রমাগত গালিগালাজের মুখে শেষ পর্যন্ত আইনি পথে হাঁটতে চলেছেন বিতর্কিত বক্সার। ইমেন খেলিফের আইনজীবী রয়টার্স-কে জানিয়ে দিয়েছেন, গত শুক্রবারেই আইনি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ইটালিয়ান বক্সার এঞ্জেল কারিনির সঙ্গে তাঁর ডুয়েল টিকেছিল মাত্র ৪৬ সেকেন্ড। নাকে প্রবল ঘুঁষি হজম করে কাঁদতে কাঁদতে রিং ছেড়েছিলেন ইতালিয়ান মহিলা। তারপরেও চোখে জল নিয়ে বিস্ফোরকভাবে বলে দেন, কোনও মহিলা প্রতিপক্ষ বক্সারের কাছ থেকে এরকম প্রবল ঘুঁষি কখনও হজম করেননি। তারপরেই ঝড় বয়ে যায় দুনিয়া জুড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইমেন খেলিফের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকেন একের পর এক সেলেব। জড়িয়ে যায় রাজনীতিও। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি এঞ্জেল কারিনির হয়ে মুখ খোলেন। এমনকি মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী কমলা হ্যারিস যেভাবে ইমেন খেলিফকে সমর্থন করেছিলেন, সেই বিষয়টিও তাঁর প্রচারে ব্যবহার করেন। ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রীও অলিম্পিক কমিটিকে তুলোধোনা করেন।
এমন গনগনে বিতর্কের আবহেই ইমেন খেলিফ শুক্রবারেই ওয়াল্টার ওয়েট বিভাগের ফাইনালে চিনের ইয়াং লিউকে হারিয়ে সোনা জিতে বলে দেন, নারী হয়ে জন্মেছেন তিনি। এবং নারী হিসেবেই এতদিন বেঁচেছেন। “অন্য নারীর মতই আমিও নারী। নারী হয়ে জন্মেছি। বড় হয়েছি। তবে সব সাফল্যের শত্রু থাকে। তাঁরা আমার সাফল্য সহ্য করতে পারছে না। আমি কোয়ালিফাই করেছি কিনা, নারী কিনা- এই নিয়ে বহুবার মিডিয়ার সামনে নিজের বক্তব্য রেখেছি। যেভাবে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে আমাকে, তাতে এই সোনা জয় আরও বেশি মধুর মনে হচ্ছে।” বলেন তিনি।
২০২৩-এ বিশ্ব বক্সিং প্রতিযোগিতায় খেলিফ এবং দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তাইওয়ানের লিনকে নামার ছাড়পত্র দেয়নি বিশ্ব বক্সিং প্রতিযোগিতা। সাংবাদিক সম্মেলনে আইবিএ-র তরফে বলা হয়েছিল, লিঙ্গ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি দুজন। জানা গিয়েছিল দুজনের শরীরে নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় বেশিই রয়েছে টেস্টোস্টেরন। তাছাড়া XY ক্রোমোজম নিয়ে জন্মেছিলেন খেলিফ।
বক্সিং সংস্থার সেই লিঙ্গ নির্ধারণ অবশ্য ধর্তব্যের মধ্যে আনেনি অলিম্পিক কমিটি। সরাসরি খেলিফকে খেলার ছাত্রপত্র দেয় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। ২০১৬ এবং ২০২০-র অলিম্পিক নিয়ম অনুযায়ী খেলিফকে খেলার অনুমতি দেয় আইওসি। যে নিয়মে লিঙ্গ পরিচয় বাধ্যতামূলক নয়।