Bangladesh Olympics medal: অলিম্পিকের পর্দা পড়ছে রবিবার রাতেই। এবার অলিম্পিক ভারতের কাছে পদক জয়ের সংখ্যায় ছাপিয়ে যাওয়ার ছিল। তবে টোকিও অলিম্পিক বিবেচনায় একটি পদক কম জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ভারতীয় শিবিরকে। টোকিওয় সবমিলিয়ে ৭ পদক জিতেছিল ভারত। এবার সেই পদকজয়ের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬টিতে।
হাফডজন পদকের মধ্যে পাঁচটিই ব্রোঞ্জ। একটি রুপো। ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে মানু ভাকের ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এরপরে এয়ার পিস্তল মিক্সড ইভেন্টে সর্বজিৎ সিংকে নিয়ে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি। ৫০ মিটার রাইফেল ইভেন্টে স্বপ্নিল কুশারিও ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এরপরে ভারতের হকি দল ব্রোঞ্জ জয় করে স্পেনকে হারিয়ে।
নিশ্চিতভাবেই এবারে ভারতের পদক জয়ের সংখ্যা বেশি হতেই পারত। আশা জাগিয়েও লক্ষ্য সেন পদক জিততে পারেননি ব্যাডমিন্টনে। কুস্তিতে ভিনেশ ফোগতের ট্রফি হারানো ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ট্র্যাজিক ঘটনা হিসাবেই রয়ে যাবে। তবে তিরন্দাজি, ব্যাডমিন্টন কিংবা টেবিল টেনিস, কুস্তি- থেকে ভারতের পদক জয়ের সম্ভবনা ছিল। যদিও তা হয়নি।
আরও পড়ুন: USA-ব্রিটেন-জার্মানি নয়, অলিম্পিক সোনাজয়ীদের সর্বাধিক টাকা দেয় এই দেশ, জনসংখ্যা ১ কোটিরও কম
অলিম্পিকের সময়েই বাংলাদেশে উত্তাল ছাত্র আন্দোলন এবং তারপর হাসিনা সরকারের পতন দেখেছে বিশ্ব। তারপর নির্বিচারে খুন, জখম, রাহাজানিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সংখ্যালঘু এবং আওয়ামি লিগের কর্মী-সমর্থকদের ওপর নেমে এসেছে হাড়হিম করা সন্ত্রাস। ভয়ঙ্কর সন্ত্রাস ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে বাংলাদেশ।
এর মধ্যেই চুপিসারে বাংলাদেশ অলিম্পিক থেকে ফিরছে কোনও পদক না জিতেই। ভারত যেখানে শতাধিক প্রতিযোগী পাঠিয়েছিল প্যারিসে। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিযোগীর সংখ্যা মাত্র পাঁচজন। বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তিরন্দাজি (সাগর ইসলাম), এথলেটিক্স (ইমরানুর রহমান), শ্যুটিং (মহম্মদ রবিউল ইসলাম) এবং সাঁতার-এ (সামিউল ইসলাম রফি এবং সোনিয়া খাতুন)। সবমিলিয়ে পাঁচ ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ খালি হাতেই ফিরছে এবারের প্যারিস অলিম্পিক থেকে। এদের মধ্যে কোনও ইভেন্টেই বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা ফাইনাল পর্বেই পৌঁছতে পারেননি।
শুধুমাত্র প্যারিস অলিম্পিকেই নয়। এর আগে আরও দশটি অলিম্পিক সংস্করণে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক জিততে পারেননি দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। ঘটনাচক্রে অন্যান্য দেশের ক্রীড়াবিদকে যেখানে অলিম্পিকের কোয়ালিফিকশন পর্ব অতিক্রম করে মূল অলিম্পিকে অংশ গ্রহণ করেন, সেখানে বাংলাদেশের কোনও ক্রীড়াবিদই যোগ্যতাঅর্জন পর্বের বাধা পেরিয়ে মূল অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার ইতিহাস নেই। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থার তরফে ওয়াইল্ড কার্ড পদ্ধতি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের মূল পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় অলিম্পিকের ইতিহাসে কখনও পদক না জেতা সর্বাধিক জনবহুল দেশের সর্বাগ্রে রয়েছে বাংলাদেশ।
কেন বাংলাদেশ অলিম্পিকের মত বৈশ্বিক মঞ্চে পারফর্ম করতে পারে না? এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ অলিম্পিক সংস্থার প্রধান ওয়ালি উল্লাহ বলেছিলেন, দুর্বল অর্থনীতির কারণে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের পক্ষে অলিম্পিকের মত মঞ্চে পারফর্ম করা সম্ভব হয় না।
১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের অলিম্পিক কমিটি প্ৰথম গঠিত হয়। ১৯৮০-তে সেই সংস্থা অলিম্পিকের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার স্বীকৃতি পায়। গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে বাংলাদেশ একাধিকবার অংশ নিলেও শীতকালীন অলিম্পিকে বাংলাদেশ কখনও অংশগ্রহণ করেনি।