মৃত্যু মিলিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি এবং পেলের মাকে। মোদি হারিয়েছেন শতায়ু মাকে। অন্যদিকে, সন্তান হারানোর যন্ত্রণায় কাতর পেলের মা সেলেস্তে। যিনি কয়েকদিন আগেই শতবর্ষে পা দিয়েছিলেন।
বিশ্বকাপের পরেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ভাসিয়ে দিয়েছিল ফুটবল জগৎকে। শুক্রবার গভীর রাতে পেলের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া মাত্রই শোকে আচ্ছন্ন হয়ে যায় ক্রীড়া দুনিয়া।
আরও পড়ুন: পেলের মৃত্যু ঘোচাল সমস্ত শত্রুতা! কান্নায় ভেসে গেলেন মেসি-রোনাল্ডো-নেইমার-এমবাপে
প্রায় এক মাস ধরে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। ক্রিসমাস কেটেছিল হাসপাতালে পরিবারের সঙ্গে। তবে নতুন বছর আর দেখা হল না কিংবদন্তির। পেলের এজেন্ট জো ফ্রাগা তাঁর মৃত্যুর খবর কনফার্ম করেছিলেন শুক্রবার রাতে।
বেশ কয়েকসপ্তাহ ধরেই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে অসম লড়াই করছিলেন ফুটবল সম্রাট। ক্যান্সারে নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি ঘটছিল।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিলেন একাই, পেলের মৃত্যুতে উথলে উঠছে পুরোনো সেই স্মৃতি
গত কয়েকবছর ধরেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে। কোনও অনুষ্ঠানে যেতেন না। হুইলচেয়ার ছিল সর্বক্ষণের সঙ্গী। কিছুদিন আগেই ১৯৭০-এ বিশ্বজয়ী ব্রাজিল দলের জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁর মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠানেও হাজির থাকতে পারেননি। ৮০ তম জন্মদিন পালন করেছিলেন পরিবারের সঙ্গে বিচ হোমে।
তবে পেলের এই মৃত্যু ছুঁয়ে গিয়েছে তাঁর মা সেলেস্তেকেও। কয়েক মাস আগেই মায়ের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে পেলে ছবি পোস্ট করেছিলেন জন্মদাত্রীর সঙ্গে।
তিরিশ-চল্লিশের দশকে পেলের মা মিনাস গ্রেসিয়াস রাজ্যের ট্রেস কোরাকয়েস রাজ্য থেকে শহরে চলে এসেছিলেন। ব্রাজিলের শহর থেকে দূরবর্তী স্থানের মত ট্রেস কোরাকোয়েসেও ছিল না কোনও বিদ্যুৎ। তবে ছিল একের পর এক ফুটবল ক্লাব। সেখানেই পেলের মায়ের সঙ্গে দেখা তাঁর বাবা জোয়াওয়ের। মিলিটারিতে সার্ভিস করার সময় যিনি স্থানীয় ক্লাবে খেলতেন ডনডিনহো নামে।
সেই পরিণয় গড়ায় বিবাহে। প্ৰথম সন্তানের জন্মের সময় গ্রামে চলে আসে ইলেক্ট্রিসিটি। সেই কারণেই ইলেক্ট্রিসিটির স্রষ্টার নামে সন্তানের নাম রাখা হয় থমাস এডিসন। যদিও আসল নাম এডসন আরান্তেস ডি নাসিমেন্টো। ওরফে পেলে।
আরও পড়ুন: ‘পেলে’ নামে ছিল চরম ঘেন্না! কেউ ডাকলেই রেগে যেতেন, জানুন প্রয়াত কিংবদন্তির নাম-রহস্য
১৯৬৬-এ ব্রাজিলের জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময় ছেলেকে সারপ্রাইজ দিতে হাজির হয়েছিলেন। চমকে গিয়ে টিনএজার পেলে জড়িয়ে ধরেছিলেন মাকে।
পেলে নিজের উত্তুঙ্গ সাফল্যের পিছনে মায়ের অবদান বারবার স্বীকার করেছেন। ব্রাজিলের বিখ্যাত প্রচারমাধ্যম ও গ্লোবোর তরফে সম্প্রতি তাঁকে বর্ষসেরা মায়ের সম্মান দেওয়া হয়েছিল।
সন্তান হারানোর যন্ত্রণায় যিনি আপাতত কাতর।