Advertisment

কলকাতায় গোলাপি বলের বাজার: ইডেন টেস্ট কি আদৌ ফ্যাক্টর?

বুধবার বিকালে যখন বিরাট কোহলিরা ইডেনে প্র্যাাকটিস সারছিলেন, ঠিক তখনই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা কলকাতার বিসি রায় মার্কেটে ঢুঁ মারল কলকাতায় গোলাপি বলের হালহকিকত জানতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

শহর কলকাতা এখন 'গোলাপি' জ্বরে আচ্ছন্ন। ভারতের প্রথম দিন-রাতের টেস্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে খাস ক্রিকেটের মক্কা ইডেন গার্ডেন্সে। ভারত-বাংলাদেশ চলতি সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পোশাকি নাম 'পিঙ্ক বল টেস্ট।' চেনা লাল বলে নয়, পদ্মাপারের দেশের বিরুদ্ধে বিরাট অ্যান্ড কোম্পানির বাইশ গজের লড়াই হচ্ছে গোলাপি বলে। যাবতীয় লাইমলাইট একাই কেড়ে নিয়েছে এই বিশেষ বল।

Advertisment

বুধবার বিকালে যখন বিরাট কোহলিরা ইডেনে প্র্যাাকটিস সারছিলেন, ঠিক তখনই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা কলকাতার বিসি রায় মার্কেটে (পড়ুন ময়দান মার্কেট) ঢুঁ মারল কলকাতায় গোলাপি বলের হালহকিকত জানতে।

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ এবার খেলবে এসজি টেস্ট পিঙ্ক বলে। ভারতে দীর্ঘতম ফরম্যাটের খেলা হয় একমাত্র এসজি টেস্ট রেড বলেই। এই প্রথম খেলা হচ্ছে গোলাপিতে। এসজি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ইডেনে টেস্টে যে বলটায় খেলা হবে, তার দাম ২,৭০০ টাকা। সেখানে তাদের তৈরি লাল টেস্ট বলের দাম ১,৯০০ টাকা।

publive-image এসজি-র বলেই খেলা হবে ইডেন টেস্ট। (ছবি-টুইটার, বিসিসিআই)

ক্লাব স্তরে বা প্রথম শ্রেণির ম্য়াচেও মাত্র একটি বলের জন্য় স্বাভাবিকভাবেই এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ভরসা ময়দান মার্কেট বা ক্রীড়া সরঞ্জামের দোকানগুলি। ভারতে গোলাপি বলের আঁতুড়ঘর উত্তরপ্রদেশ। মীরাটেই তৈরি হচ্ছে এই বল। তা পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকী বিদেশেও।

ময়দান মার্কেটে চৌধুরি স্পোর্টসের কৌশিক বিশ্বাস বলছেন যে, সারা বছর গোলাপি বলের চাহিদা সেভাবে থাকে না। খুব অল্পই বিক্রি হয় এই বল। তিনি জানালেন, "সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের জন্য় ইডেনে পিঙ্ক টেস্ট হচ্ছে। কলকাতায় খেলা হচ্ছে বলেই লোকে শেষ কয়েক'টা দিন ময়দান মার্কেটে এসে গোলাপি বলের খোঁজখবর নিয়ে যাচ্ছে। আমার কাছে একরকম কোয়ালিটির পিঙ্ক বলই আছে। দাম ৫০০ টাকা। ধরলেই বুঝতে পারবেন যে, ময়দানে পাওয়া বাকি ২০০-৩০০ টাকার গোলাপি বলগুলোর থেকে কোথায় সেটা আলাদা।"

publive-image এই বলের দাম ৫০০ টাকা (ছবি - শশী ঘোষ)

ময়দান মার্কেট বলছে যে, বলের সেলাই ও ফিনিশিংয়ের ওপরেই দামটা নির্ভর করে। কৌশিকবাবুই বলছেন, বলের মধ্যে একটা কর্কের মতো উপাদান থাকে। সেটার গুণমানের হেরফেরেই বলের দামেরও হেরফের হয়। কিন্তু ৫০০ টাকা দিয়েও গোলাপি বল নেওয়ার লোক হাতে গোনা। অনেকেই দেখছেন, নেড়েচেড়ে রেখে দিচ্ছেন।

ময়দান মার্কেটের সোনম স্পোর্টসের ওয়াসিম খান কিন্তু শোনাচ্ছেন অন্য কথা। তিনি বললেন, "আমাদের মীরাটে নিজস্ব ইউনিট আছে। ফলে ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকার মধ্য়ে আমি বল বিক্রি করতে পারি। সারা বছরই এর চাহিদা রয়েছে। আমি শেষ কয়েকদিনেও প্রচুর বল বিক্রি করেছি। সারা বছর কম করে ২০০-৩০০টা বল বিক্রি করি। ইডেন টেস্টের জন্য়ই অনেকে আবার নিজেদের সংগ্রহে একটা করে গোলাপি বল রেখে দিচ্ছে।"

ময়দান মার্কেটে একাধিক ক্রীড়া সরঞ্জামের দোকান থাকলেও সকলের কাছে গোলাপি বল পাওয়া যায় না। হাতে গোনা কয়েকটি দোকানেই পাওয়া যায় এই বল। দাম মোটামুটি ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্য়ে। আর এই দামের মধ্য়েই কিন্তু লাল বা সাদা বলও পাওয়া যায় অনায়াসে। কেউ আবার ৩৫ ওভার পর্যন্ত বলের রঙ এক থাকবে বলেও গ্যারান্টি দিচ্ছেন। তার অন্যথা হলে বলের পয়সা ফেরত দেবেন বলেও দাবি তাঁদের।

publive-image ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এই গোলাপি বল। ছবি - শশী ঘোষ

মীরাটে তৈরি হওয়া গোলাপি বল ইংল্যান্ডেও পৌঁছে দিচ্ছে শ্যামবাজারের বি দাসগুপ্ত অ্যান্ড কোম্পানি। কলকাতার এই বিখ্যাত দোকান স্পোর্টস সরঞ্জামের ডিলার হিসাবে দীর্ঘদিন পরিচিত। দোকানের কর্মচারী বিপুলা গুহ রায় বলছেন, কলকাতায় পিঙ্ক বল টেস্টে হওয়ার সঙ্গে তাঁদের দোকানে বলের বিক্রির কোনও সম্পর্ক নেই। সারা বছরই তাঁদের গোলাপি বল বিক্রি হয় একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে। বি দাসগুপ্তের নিজস্ব প্রোডাকশনের তিনটি কোয়ালিটির বল রয়েছে। দাম যথাক্রমে ২৯০, ৩০০ ও ৩৫০ টাকা। এই বলই চলে যাচ্ছে ইংল্যান্ডে। সেখানে ক্লাব পর্যায় খেলা হয় এই বলে।

২০১৬ সালে দলীপ ট্রফি খেলা হয়েছিল গোলাপি বলে। তখন ব্যবহার করা হয়েছিল কুকাবুরা বল। সেসময় এক একটি বলের দাম ছিল প্রায় ৮,০০০ টাকা! দামের কথা ভেবেই বিসিসিআই নির্দেশ দিয়েছিল যে, কোনও ক্রিকেটার ম্য়াচের পর স্মারক হিসাবে এই বল নিয়ে যেতে পারবেন না। এবারের বলের দাম তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। সেক্ষেত্রে হয়তো মহম্মদ শামি বা ইশান্ত শর্মারা বল কালেক্ট করার সুযোগ পাবেন।

Bangladesh BCCI India
Advertisment