চন্দননগরের গর্ব তিনি। আগে জয় করেছেন অমরনাথ থেকে মানাসুলু, ধৌলগিরি। এবার সেই পিয়ালী বসাক ইতিহাস গড়ে প্ৰথম বাঙালি কন্যা হিসাবে জয় করে ফেললেন বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট।
মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্ট তিনি। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিনিধিত্বও করেছেন। আইস স্কেটিংয়েও রয়েছে নজরকাড়া সাফল্য। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গত মার্চের ২৮ তারিখ চন্দননগর থেকে এভারেস্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
বঙ্গ তনয়া এই পর্বতারোহীর স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হল রবিবার, ২২ মে। সকাল সাড়ে আটটায় এভারেস্টের চূড়ায় পা রাখেন পিয়ালি। তা-ও আবার অক্সিজেন ছাড়াই এল বেনজির এই সাফল্য। প্ৰথম বাঙালি হিসাবে রেকর্ড বইয়ে ঢুকে পড়লেন সেই সঙ্গে।
আরও পড়ুন: আমার দুর্গা: পিয়ালি বসাক
চন্দন নগরের বাসিন্দা পিয়ালি বসাক (৩১) অঙ্ক নিয়ে স্নাতক পাশ করে এখন এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। ২০১৯-এ খবরে এসেছিলেন এভারেস্ট অভিযানকে কেন্দ্র করে। সেবার অল্পের জন্য এভারেস্টের চূড়ায় ওঠা হয়নি তাঁর। সেবার নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়েও নিশ্চিত ছিলেন না অভিযান আদৌ হবে কী না। অভিযানের মাঝপথেই বারবার চরম অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে। ক্রাউড ফান্ডিং-এর টাকা একটু একটু করে ভরসা জুগিয়েছিল পিয়ালিকে। তারপরেও স্বপ্ন ছোঁয়া হয়নি পিয়ালির।
পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকায় এভারেস্ট শিখরের মাত্র ৪৫০ মিটার নীচ থেকে সমতলে ফিরে আসতে হয়েছিল বঙ্গ কন্যা পিয়ালিকে।
পিয়ালি সেই সময় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেছিলেন, “এভারেস্ট সামিট যখন হবে না বুঝতে পারছি, আমার অক্সিজেন সিলিন্ডারও শেষ হয়ে যাচ্ছে, কেঁদে কেঁদে সবাইকে অনুরোধ করেছি। হতাশা মুহূর্তের জন্য আসেনি, তা নয়। তবে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আবার তৈরি করতে শুরু করেছি। আগামী বার আমায় শিখরে পৌঁছতেই হবে।"
নিজের প্রতিজ্ঞা রাখলেন তিনি বছর তিনেকের মধ্যেই বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করে। এর আগে অনেক পর্বতারোহীই এভারেস্ট জয় করেছিলেন। কিন্তু অক্সিজেন ছাড়াই ৮৮৪৮ মিটারে? বাঙালির ইতিহাসে এমনটা আগে ঘটেনি।