Advertisment

জনাকীর্ণ এভারেস্ট, শৃঙ্গ ছোঁয়ার স্বপ্ন আগলেই সমতলের পথে পিয়ালি

বুধবার সকালে ৮৪০০ মিটার উচ্চতায় ব্যাল্কনি থেকেই ফিরে এসেছিলেন পিয়ালি। কথা ছিল বৃহস্পতিবার ফের চেষ্টা করবেন শৃঙ্গ ছোঁয়ার। কিন্তু সঙ্গে থাকা সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন ফুরিয়ে আসায় সম্ভবত ঝুঁকি নিচ্ছেন না ২৮ বছরের পিয়ালি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

এভারেস্ট অভিযানে পিয়ালি

বিশ্বের সর্বোচ্চ বিন্দুতে পা রাখার স্বপ্ন এবার অধরাই থাকল দামাল মেয়েটার। তবে সারা বাংলা এখন ঘরের মেয়েকে ঘরে ফিরে পেতে চায়  সুস্থ অবস্থায়। চন্দননগরের পিয়ালি বসাক। ২০১৯ এভারেস্ট অভিযানের এ রাজ্যের একমাত্র অভিযাত্রী পিয়ালি বসাক। সব ঠিক থাকলে বুধবার ভোরবেলায় ৮৮৪৮ মিটার উচ্চতায় তেরঙ্গা ওড়াতেন পিয়ালি। কিন্তু এভারেস্ট শৃঙ্গের পথে এবার দীর্ঘতম যানজট। অগত্যা ব্যাল্কনি (শৃঙ্গ থেকে মাত্র ৪৫০ মিটার নীচে) ফিরে আসতে হয় পিয়ালিকে। অভিযানের আয়োজক সংস্থা সেভেন সামিট ট্রেকের তরফে জানানো হয়েছে বুধবার সকালে ফের আরেকবার শৃঙ্গ ছোঁয়ার পরিকল্পনা থাকলেও পরে তা বাতিল হয়। বুধবার সন্ধের মধ্যেই ক্যাম্পে নেমে এসেছেন পিয়ালি এবং তাঁর শেরপারা।

Advertisment

এই মরসুমে এভারেস্টের চুড়োর কাছাকাছি তৈরি হয়েছে দীর্ঘতম ট্র্যাফিক জ্যাম। তাই বুধবার সকালে ৮৪০০ মিটার উচ্চতায় ব্যাল্কনি থেকেই ফিরে এসেছিলেন পিয়ালি। কথা ছিল বৃহস্পতিবার ফের চেষ্টা করবেন শৃঙ্গ ছোঁয়ার। কিন্তু সঙ্গে থাকা সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন ফুরিয়ে আসায় সম্ভবত ঝুঁকি নিচ্ছেন না ২৮ বছরের পিয়ালি। এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাংলার পর্বতপ্রেমীরা।

আরও পড়ুন, জীবন বাজি রেখে ঝুঁকি নয় পাহাড়ে, পিয়ালিকে পরামর্শ অভিজ্ঞ পর্বতারোহীদের

এভারেস্টে এবার সামিট উইন্ডো চার দিনের। অথচ শৃঙ্গ ছোঁয়ার অপেক্ষায় থাকা মানুষ এবার সবচেয়ে বেশি, শ'পাঁচেকের কাছাকাছি। বুধবার সকালেই প্রায় আড়াইশো অভিযাত্রীর লাইন থাকায় ফিরে আসতে হয় পিয়ালি বসাক এবং তাঁর দলে থাকা অন্যান্য সদস্যদের। তিন নম্বর ক্যাম্প ফিরে গিয়ে একদিন বিশ্রাম নিয়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সাপোর্ট সঙ্গে নিয়ে ফের আরোহণ করার সময় নেই হাতে। বৃহস্পতিবারই সামিট উইন্ডোর শেষ দিন।

গত সেপ্টেম্বরে অষ্টম উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ মানাসলু জয় করে পরপর এভারেস্ট এবং লোৎসে শৃঙ্গ ছোঁয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন পিয়ালি । তবে তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে ছিলেন বাংলার দক্ষ পর্বতারোহীরা। এমনিতেই বাংলা তথা সারা দেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে কালো হয়ে থাকবে ২০১৯। রাজ্যের দুই পর্বতারোহী কুন্তল কাঁড়ার এবং বিপ্লব বৈদ্যের কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানে অপ্রত্যাশিত মৃত্যু এবং মাকালু অভিযানে দীপঙ্কর ঘোষের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ক্ষত এখনও দগদগে বাঙালির মনে। তাই পিয়ালিকে নিয়েও উৎকণ্ঠা ছিল দ্বিগুণ।

এ রাজ্যের অ্যাডভেঞ্চার জগতের তিন দিকপালকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ বাংলা। এ অবস্থায় পিয়ালির শৃঙ্গ জয় উদযাপনের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুস্থ শরীরে নির্বিঘ্নে পিয়ালির ঘরে ফেরা। আপাতত স্বপ্ন ছোঁয়া বাকি থাকল। ঘরের মেয়েকে ছুঁয়ে থাকুক বাংলা।

Everest
Advertisment