Advertisment

শতবর্ষের আগেই কী 'গোল্ডেন হ্যান্ডশেক' ইস্টবেঙ্গল-কোয়েসের, জল্পনা তুঙ্গে

মধুচন্দ্রিমা শেষ হওয়ার আগেই কী সরকারিভাবে ছিন্ন ইস্টবেঙ্গল-কোয়েসের সম্পর্ক? ময়দানি ফুটবলে জোর জল্পনা। নতুন সমীকরণের দিকে তাকিয়ে সকলেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
East Bengal

অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল দল (ফেসবুক)

গত বছরেই বহুজাতিক সংস্থা কোয়েসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল ইস্টবেঙ্গল। তারপরে আইলিগে চ্যাম্পিয়ন না হলেও কোয়েস-ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স হৃদয় জয় করে নিয়েছে সমর্থকদের। স্প্যানিশ কোচ আলেয়ান্দ্রো-স্তুতিতে মগ্ন এখনও আপামর সমর্থককুল । তবে মধুচন্দ্রিমার হ্যাং-ওভার কাটতে না কাটতেই কোয়েস-ইস্টবেঙ্গলের সংযুক্তি ছিন্ন হওয়ার পথে। জল্পনা এমনই।

Advertisment

কী কারণে বিচ্ছেদের পথে হাঁটছে কোয়েস ও ইস্টবেঙ্গল? জল্পনার নেপথ্যে ২৮ তারিখে ক্লাব ও বিনিয়োগকারী সংস্থার বৈঠক। জানা গিয়েছে, সেখানে কোয়েসের পক্ষ থেকে নাকি তিনটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে-
এক, আইএসএল নয়, কোয়েসের পাখির চোখ আপাতত আইলিগ।
দুই, স্বল্প বাজেটের দল গড়তে হবে।
তিন, ইস্টবেঙ্গল চাইলে সন্ধি ভুলে বিচ্ছেদের সরণিতে হাঁটতে তৈরি তারা।

আরও পড়ুন

নতুন বিনিয়োগের ডানায় ভর করে ভবিষ্য়তের রূপরেখা ইস্ট বেঙ্গলের

জবি-কাণ্ডের পরে এবার ফেডারেশনের সম্ভাব্য় শাস্তির মুখে ইস্টবেঙ্গল, তুঙ্গে সংঘাত

জবি যুদ্ধে নাছোড় ইস্ট-এটিকে, বিতর্কের মধ্যেই তারকার গলায় উত্তেজনা

অন্তত, ২৮ মার্চ ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে কোয়েসের বৈঠকের নির্যাস এমনই। সেই বৈঠকেই লাল-হলুদ কর্তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইস্টবেঙ্গল যদি উন্নতমানের বিনিয়োগকারী সংস্থার সন্ধান পায়, তাহলে 'গোল্ডেন হ্যান্ডশেক' করতে প্রস্তুত বর্তমান ইনভেস্টর কোয়েস। এরপরেই 'অন্যরকম ভাবতে শুরু করেছেন ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা।

আসলে, তলে তলে চাপান উতোর চলছিল অনেক দিন-ই। তবে সুপার কাপ খেলা নিয়ে ইস্টবেঙ্গল বনাম কোয়েস কর্তৃপক্ষের মতপার্থক্য প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। তারপরে ফেডারেশনের শৃঙ্খলাভঙ্গ কমিটির কাছে ইস্টবেঙ্গল ও কোয়েস পৃথক পৃথকভাবে হাজিরা দেয়।

সংঘাতের পরিস্থিতিতেই কোয়েসের তরফে ২৮ তারিখের বৈঠকে আবার ইস্টবেঙ্গলকে জানানো হয়, আইএসএলে খেলার বিষয়ে আপাতত কোনও ভাবনাই নেই কোয়েসের। আইলিগে খেলতে ইচ্ছুক কোয়েস কর্তৃপক্ষ। ঘটনাচক্রে, বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তির অন্যতম শর্তই ছিল, তিন বছরের মধ্যে আইএসএলে অংশ নিতে হবে। অথচ, চুক্তির দ্বিতীয় বছরেই বিনিয়োগকারী সংস্থা বেসুরো গাওয়ায় আপাতত বেশ সমস্যায় পড়েছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। পাশাপাশি, সুপার কাপ না খেলার জন্য ফেডারেশন থেকে শাস্তির খাড়া নামতে পারে ইস্টবেঙ্গলের উপরে। আইলিগ থেকে নির্বাসন বা জরিমানা- যেকোনও কিছুই হতে পারে। সেই বিষয়েও চিন্তা বাড়ছে কর্মকর্তাদের।

কোয়েসের কাছ থেকে এমন বার্তা পেয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারাও বিকল্প ব্যবস্থা বেশ কিছু সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা শুরু করছেন। ময়দানি ফুটবলে জোর জল্পনা এমনটাই। অন্যদিকে, কোয়েস কর্তারা আবার মোহনবাগানের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে রেখেছেন। এমন গুজবও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

দ্বিতীয়ত, কোয়েসের ফুটবলার বাছাইয়েও সন্তুষ্ট নন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। গত বছর বিদেশি বাছাই প্রায় একার দায়িত্বেই সেরেছিল কোয়েস। এবছরে সেই ছয় বিদেশির অধিকাংশই থাকছেন না। জনি অ্যাকোস্টা, এনরিকে, টনি ডোভালে থাকছেন না। কাশিমকে নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি কর্তারা। সূত্রের খবর, থাকতে পারেন কেবলমাত্র দুই বিদেশি- হাইমে স্যান্টোস এবং ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পড়া বোরহা গোমেজ। দেশীয় ফুটবলার নেওয়ার বিষয়েও গড়িমসি করছেন কোয়েস কর্তারা, ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের একাংশের অভিযোগ এমনটাই। ক্লাব কর্তাদের একাংশ বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী দল গঠনই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এক মরশুম পরেই বিদেশিদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কেন!

তবে ইস্টবেঙ্গলের ক্লাব কর্তাদের কাছে এই মুহূর্তে নতুন বিনিয়োগ খোঁজা বেশ কঠিন। কারণ, সামনেই শতবর্ষ। সেই শতবর্ষেরও স্পনসর খুঁজতে হচ্ছে। তার উপরেই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থার সন্ধান করতে হচ্ছে। ময়দানি জল্পনা কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যে, তা নিয়ে ধন্দে প্রত্যেকেই।

সবমিলিয়ে, ইস্টবেঙ্গল, কোয়েস এবং মোহনবাগান- এর ত্রিভুজী সমীকরণ কোথায় বাঁক নেয়, আপাতত সেটাই দেখার।

Eastbengal East Bengal Kolkata Football Mohun Bagan
Advertisment