Advertisment

নতুন বিনিয়োগের ডানায় ভর করে ভবিষ্য়তের রূপরেখা ইস্ট বেঙ্গলের

ইউবি-র সঙ্গে বিচ্ছেদ পর্বের দু’ মাসের মধ্যেই ৯৮ বছরের এতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠানের হাত শক্ত করতে চলে এল বেঙ্গালুরুর লিডিং বিজনেস সার্ভিসেস প্রোভাইডার কোয়েস। এখন থেকে কিংফিশার ইস্ট বেঙ্গল হয়ে গেল কোয়েস ইস্ট বেঙ্গল এফসি প্রাইভেট লিমিটেড (কিউইবিএফসি)

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Quess come on board as East Bengal’s investor Express Photo Shashi Ghosh

বিনিয়োগের ডানায় ভর করে ভবিষ্য়তের রূপরেখা ইস্টবেঙ্গলের। ছবি- শশী ঘোষ।

গত ৯ মে ইস্ট বেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে দ্য ইউনাইটেড ব্রিউয়ারি (ইউবি) গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেছিলেন ক্লাব তাঁবুতে। এরপরেই লাল-হলুদের সাধারণ সচিব কল্যাণ মজুমদার জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইউবি-র সঙ্গে দীর্ঘ ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছেন তাঁরা। আর ইস্টবেঙ্গলের প্রধান স্পনসর হিসেবে থাকছে না কিংফিশার, সহকারি স্পনসর হিসেবে থাকবে বিজয় মালিয়ার সংস্থা।

Advertisment

ইস্ট বেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেই দিয়েছিলেন, আগামি মরসুমে ইস্ট বেঙ্গলের পাশে থাকবে অন্য কোনও স্পনসর। ইউবি-র সঙ্গে বিচ্ছেদ পর্বের দু’মাসের মধ্যেই লাল-হলুদ পেয়ে গেল নতুন বিনিয়োগকারী। ৯৮ বছরের এতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠানের হাত শক্ত করতে চলে এল বেঙ্গালুরুর লিডিং বিজনেস সার্ভিসেস প্রোভাইডার কোয়েস। এখন থেকে কিংফিশার ইস্ট বেঙ্গল হয়ে গেল কোয়েস ইস্ট বেঙ্গল এফসি প্রাইভেট লিমিটেড (কিউইবিএফসি)

কিংফিশার কখনই বলেনি, যে তারা ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক করতে চলেছে। সমস্যা হয়েছিল অন্য জায়গায়। ইস্ট বেঙ্গলকে প্রতি মরসুমে কিংফিশার দিত সাড়ে তিন কোটি টাকা। কিন্তু আচমকাই তারা দু’কোটি টাকা কমিয়ে দেড় কোটি টাকা করে দেবে বলে জানায় লাল-হলুদকে। আর এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি গঙ্গাপারের এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। ইস্ট বেঙ্গলের নয়া বিনিয়োগকারী কোয়েসের বয়স মাত্র দশ। কিন্তু এই কয়েক বছরে কোম্পানির আয় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যারা ইতিমধ্যেই ইস্ট বেঙ্গল ছাড়াও ২২টি সংস্থাকে অধিগ্রহণ করেছে। বিশ্বের ১০টি দেশে শাখাও বিস্তার করেছে।

publive-image বক্তব্য রাখছেন দেবব্রত সরকার। ছবি: শশী ঘোষ

ইস্ট বেঙ্গলের সভাপতি প্রণব দাশগুপ্ত নতুন চুক্তির সম্বন্ধে বলছেন, "কোয়েস আর ইস্ট বেঙ্গল আজ বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হল। আমি যতদিন এই ক্লাবের সভাপতি হিসেবে থাকব, ডিভোর্স হবে না। এটা আস্বস্ত করতে পারি আপনাদের। বাইচুং ভুটিয়া স্বপ্ন দেখেন, ২০২৬-এ ভারত বিশ্বকাপ খেলবে। আমি আশা করি সেই স্বপ্ন সত্যি হবে যদি আমাদের আর কোয়েসের পার্টনারশিপ এইভাবে চলতে থাকে।" কিংফিশারের চলে যাওয়া আর কোয়েসের আসা। এই প্রসঙ্গে কল্যাণ বাবু বলছেন, "যত দিন মশাল আছে, তার আগুন নিভবে না। আমাদের বুকে তির বিঁধেছিল। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা আমরা নিয়েছিলাম। আশা করি কোয়েসের হাত ধরে নতুন দিগন্তে উন্মোচন হবে।"

কোয়েসের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজিত আইস্যাক বলছেন, "ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে পার্টনারশিপ করে আমরা বিশ্বের এক নম্বর স্পোর্ট, ফুটবলে অবদান রাখতে চাই দেশের মাটিতে। ইস্ট বেঙ্গলের স্পোর্টিং কার্যকলাপে এবার একটা গতি আসবে। আইএসএল-এ অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে প্লেয়ার বেস বাড়ানো, ট্রেনিং ও অনান্য পরিকাঠামোর বদল ঘটিয়ে আরও বেশি ট্রফি আনতে হবে।"

Quess come on board as East Bengal’s investor Express Photo Shashi Ghosh অজিত আইস্যাকের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গল দল। ছবি: শশী ঘোষ।

কোয়েসের সামর্থ্য এবং শক্তির পরিচয় পাওয়া গেল দেবব্রতর কথায়। তিনি সাফ বলে দিলেন, কোয়েসের কাছে টাকাটা কোনও ইস্যুই নয়, ফুটবলের উন্নয়নের জন্য তারা সবরকম ভাবে সাহায্য় করবে। ময়দানের নীতু বলছেন, "প্রয়োজন হলে কোয়েস ১০০ কোটি টাকাও বিনিয়োগ করতে রাজি আছে। বাজেটটা কোনও সমস্যাই নয়। পুরো খরচা ওরা দেবে। যে কোম্পানিটা ফর্ম হয়েছে তাতে ওদের আর আমাদের চারজন করে ডিরেক্টর রয়েছে বোর্ডে। ওদের ৭০ শতাংশ ভাগ আর ইস্ট বেঙ্গলের ৩০ শতাংশ। কিন্তু আমাদের বোর্ড মেম্বারের সংখ্যা এক। কাজের ক্ষেত্রেও কোন সমস্যা হবে না। কোম্পানি চাইলে যে কোন স্পনসর এবং সহকারি স্পনসর আনতে পারে। পুরোটাই কোম্পানির উপর নির্ভর করছে।" বিনিয়োগের হাত ধরে ইস্ট বেঙ্গল এবার জেলায়-জেলায় ফুটবল স্কুল খুলবে। কফি শপের ফ্র্যাঞ্চাইজি দেবে। পাশাপাশি মার্চেন্ডাইজিংয়ের হাত ধরেও তারা বাজার ধরতে চাইছে। এমনটাই জানিয়েছেন দেবব্রত।

অন্যদিকে আইএসএল-এ অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গে দেবব্রত বলছেন, তাঁদের কাছে আইএসএল বা আই-লিগটা বড় ব্যাপার নয়। ইস্ট বেঙ্গল চাইছে দুটো লিগ মিলে যাক। দেবব্রত এ প্রসঙ্গে বলছেন, "আইএসএল এর থেকে ক্লাবগুলো আই-লিগে ভাল ফুটবল খেলে। কিন্তু আমি আবারও বলছি, আমরা একটাই লিগ চাইছি। যেখানে সব দল খেলবে। আইএসএল-এ যদি ফের দরপত্র নেওয়া হয়, ইস্ট বেঙ্গল অবশ্যই দরপত্র জমা দেবে। আইএসএল আর আই-লিগের একত্রীকরণ হোক এটাই চাই। দেখি কী হয়! এএফসি-র উত্তরের অপেক্ষায় আছি আমরা।"

East Bengal Kolkata Football Vijay Mallya
Advertisment