তাঁর পরিচিত একজন বুকি আছেন, এই কথাটাই জিজ্ঞাসাবাদের সময় সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছিলেন রাজস্থান রয়্যালসের মালিক রাজ কুন্দ্রা। তদন্তকারী বি বি মিশ্র যখন রাজ কুন্দ্রাকে এক চেনা বুকির থেকে 'উপহার' নিয়েছিলেন নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন, তখন রাজ কুন্দ্রা বুঝতে পারেন, ওই বুকি তদন্তকারী অফিসারদের সামনে সব তথ্যই উগরে দিয়েছে। আই পি এল দুর্নীতি প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন মিশ্র।
বিবি মিশ্র জানিয়েছেন, "একদিকে, কুন্দ্রা বলেছিলেন কোনও বুকির সাথে ওঁর পরিচয় নেই, অথচ কুন্দ্রার ফোনে বুকির নাম্বার সেভ করা আছে। এক্ষেত্রে রাজ কুন্দ্রার যুক্তি ছিল, তিনি নম্বর সেভ করেছিলেন এই ভেবে, যাতে ভবিষ্যতে ফোন এলে আগে থেকে বুঝতে পারবেন এবং ফোন ধরবেন না। সেটাও বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু অচেনা মানুষের কাছ থেকে 'উপহার' নেওয়া? যার সঙ্গে আমি কথা বলতেই উৎসাহী নই, তাঁর থেকে কোনও রকম কোনও উপহার নেব আমি? ফলে আমাকে ওই উপহার নেওয়ার কথাটা মনে করিয়ে দিতে হয়েছিল।''
আরও পড়ুন,প্রথমসারির ক্রিকেটারের সঙ্গে বুকির যোগ ছিল, তদন্তের সময় পেলাম না: আইপিএল তদন্তকারী
সাংবাদিকদের অবশ্য কুন্দ্রা বলেছেন জনৈক বুকির দেওয়া ১০ গ্রাম সোনার চেন এবং মিষ্টি তিনি না নিলেও, তা সত্ত্বেও বাড়ির দারোয়ানের কাছে রেখে যাওয়া হয়েছে ওই উপহারগুলি রেখে যাওয়া হয়েছিল। "কারোর মুখ দেখে তো আর বোঝা যায় না কে বুকি। ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা এক বন্ধুর পার্টিতে। ওঁর ছেলের জন্য আমার কাছে আইপিএল-এর টিকিট চেয়েছিল। আমার বডিগার্ড ওকে টিকিট দিয়ে দেয়। পরে আমার বাড়িতে এসেছিলেন একদিন। আমার ছেলের জন্য একটা ১০ গ্রাম সোনার হার আর মিষ্টি নিয়ে। তাড়ায় ছিলাম বলে খুব একটা প্রশ্রয় দিইনি। তখন সে বাড়ির দারোয়ানের কাছে উপহারগুলো রেখে যায়। ব্যাস, এই দু'দিন ছাড়া আর কখনও ভদ্রলোকের সাথে দেখা করিনি"। হোয়াটসঅ্যাপে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিককে জানিয়েছেন কুন্দ্রা।
আইপিএল দুর্নীতির তদন্তের জন্য তৈরি হওয়া মুকুল মুদ্গল কমিটিতে ২০১৪ সালে আসেন বি বি মিশ্র। বিহার পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি ও নন্দীগ্রাম কাণ্ডের মতো ঘটনার তদন্তভার সামলেছেন। এই মুহর্তে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে যুক্ত।
আইপিএল দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়দানের পর মিশ্র জানান, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের যোগ ছিল বুকির সঙ্গে, তাঁকে তদন্তের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
রাজস্থান রয়্যালসের রাজ কুন্দ্রা ও চেন্নাই সুপার কিংসের গুরুনাথ মেইয়াপ্পানকে বেটিংয়ের দায়ে পরে আজীবন নির্বাসিত করা হয়।