ময়দানি ফুটবলের পরিচিত মুখ তিনি। এক বছর আগে আবার ডোপ কেলেঙ্কারিতেও নাম লিখিয়েছিলেন। সেই রানা ঘরামি এবার শিরোনামে করোনার সময়ে। নিজের গ্রামের বাড়িতে রানা দুঃস্থদের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ওড়িশা এফসির প্রাক্তন ডিফেন্ডার রানা ঘরামি থাকেন হুগলির গড়ালগাছায়। সেখানেই তিনি বেনজির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
গত বছর এপ্রিলে নমুনায় নিষিদ্ধ বস্তুর সন্ধান পাওয়া যাওয়ায় রানা ঘরামিকে সাসপেন্ড করে নাডা। আইএসএলের কোনো ফুটবলারের ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ার বিরল ঘটনা ঘটে রানা ঘরামি কাণ্ডে।
সেই সময় দিল্লি ডায়নামোসে খেলেছিলেন তিনি। ৬ মাস পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ফেরার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয় তাঁকে।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে রানা জানাচ্ছিলেন, "ওই দিন গুলো ভয়ঙ্কর ছিল। ওই ঘটনা আর মনে করতে চাই না। অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। একটা সময়ে আমি ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।"
লকডাউনের কারণে দরিদ্র মানুষের, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের দুর্দশা, কষ্ট তাঁকে ছুঁয়ে গিয়েছে। এদের সাময়িক স্বস্তি দিতেই রানা শৈশবের ক্লাব গড়ালগাছা জুনিয়র স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতায় ত্রাণের বন্দোবস্ত করেন তিনি প্রথম পর্বের লকডাউনে।
রানা বলছিলেন, "এদের দেখে বড় হয়ে উঠেছি। এখন এঁরা দুবেলা দুমুঠো খেতেও পারছে না। এদের দেখে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। ওঁরা আমাদের পরিবারের বৃহত্তর অংশের মত। ওদের সাহায্য করতে পেরে ভালো লাগছে।"
প্রথম পর্বের লকডাউনের সময় ১৫০ প্যাকেট ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল। রানা বলছিলেন, "আরো অনেক লোক এসে আমার বাড়ির সামনে বলছিলেন তারা কিছু পাননি। এর পরে বন্ধুদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আরও কিছু পরিবারের দায়িত্ব নিই।"
টোকেনের ব্যবস্থা করা হয়।।সেই টোকেন দেখিয়েই দেওয়া হয় চাল, মসুর ডাল, সবজি, তেল এবং আরো কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য যেমন সাবান, সানিটাইজার ইত্যাদি।
মোহনবাগান ও মোহামেডানের প্রাক্তন এই ডিফেন্ডার বলছিলেন, "ওঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আশীর্বাদ নিয়ে ভালো লাগছে। সমাজের জন্য কিছু করতে পারা দারুন স্বস্তির বিষয়। আমরা খুব শীঘ্রই আরো এক রাউন্ড ত্রাণের বন্দোবস্ত করছি।"
নতুন মরশুমে রানা এখনও দলে যোগ দেননি। তিনি আরো জানান, "আমার কেরিয়ারের শুরুর দিকে উঠতি ফুটবলারের কিটস দিয়ে সাহায্য করতাম। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। চাইনা, অন্য কেউ এমন পরিস্থিতিতে পড়ুক।"