Advertisment

রঞ্জি ফাইনালে অনবদ্য বাংলার বোলাররা, 'রিটায়ার্ড হার্ট' সৌরাষ্ট্রের 'রান মেশিন'

পাল্লা কিছুটা হলেও ঝুঁকে সৌরাষ্ট্রের দিকে, যেহেতু চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করবে বাংলা। তবে বাংলার অসামান্য বোলিংয়ের দৌলতে টসে জিতেও বিশেষ ফায়দা তুলতে পারল না সৌরাষ্ট্র।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
ranji trophy final 2020

অভিষেক রমনের ক্যাচে আউট হন হারভিক দেশাই। ছবি সৌজন্য: বিসিসিআই ডোমেস্টিক

রঞ্জি ট্রফি ফাইনাল (প্রথম দিন), বাংলা বনাম সৌরাষ্ট্র, রাজকোট

টসে জিতে ব্যাটিং নেয় সৌরাষ্ট্র

স্কোর: ২০৬-৫ (৮০.৫ ওভার); ব্যাটিং: অর্পিত ভাসাভাড়া, চেতন সাকারিয়া

বাংলা বোলিং: পোড়েল ১-৩৭, আহমেদ ১-৫৬, আকাশ ৩-৪১

Advertisment

রঞ্জি ট্রফি ২০২০ ফাইনালের প্রথম দিনের শেষে বলাই যায়, অমানুষিক পরিশ্রমের জোরে বাংলাকে লড়াইয়ে রাখলেন বোলাররা। রাজকোটের প্রায় কংক্রিটের পিচে যে রানের পাহাড় খাড়া করতে পারল না সৌরাষ্ট্র, তার কৃতিত্ব নিতেই পারেন শাহবাজ আহমেদ অ্যান্ড কোং। সঙ্গে যোগ করুন ডিহাইড্রেটেড হয়ে সৌরাষ্ট্রের 'রান মেশিন' চেতেশ্বর পূজারার মাঠ ছাড়া।

টসে জেতাটা খুব দরকার ছিল সৌরাষ্ট্রের। স্পষ্টতই বাংলার পেস আক্রমণকে ভোঁতা করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে অতি যত্নে তৈরি হয়েছে এই পিচ, যদিও ম্যাচের শেষ পর্বে স্পিনেরও বড়সড় ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে। তাতে অবশ্য বিন্দুমাত্র দমে যান নি বাংলার বোলাররা, বিশেষ করে আকাশ দীপ, শাহবাজ আহমেদ এবং ঈশান পোড়েল। স্পেলের পর স্পেল চ্যালেঞ্জ করে গেলেন প্রতিপক্ষের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপকে, যে চ্যালেঞ্জের মুখে নিজেদের স্ট্র্যাটেজি বদলাতে বাধ্য হলো সৌরাষ্ট্র। পিচ থেকে কোনোরকম সাহায্য ছাড়াই তাঁরা নিশ্চিত করলেন যে, সৌরাষ্ট্রকে রান তুলতে গেলে ঝুঁকি নিতে হবে। তার ফলও পেলেন দিনের শেষে: পাঁচ উইকেট, এবং 'রিটায়ার্ড হার্ট' পূজারা।

এখনও সঠিক জানা যায় নি কেন 'রিটায়ার্ড হার্ট', তবে প্রাথমিকভাবে যা শোনা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে মূলত 'জেট ল্যাগ' জনিত ক্লান্তিতে ভুগছেন ভারতীয় টেস্ট দলের তিন নম্বর ব্যাট। যদি তাই হয়ে থাকে, তবে কি সদ্য নিউজিল্যান্ড থেকে পূজারাকে তড়িঘড়ি মাঠে নামিয়ে ভুল করল সৌরাষ্ট্র? গুরুতর কিছু না হয়ে থাকলে অবশ্য আগামীকাল ফের নামবেন তিনি, এবং নিঃসন্দেহে তাঁর স্কোরের ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে এই ম্যাচের উপর সৌরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ।

এখনও পাল্লা কিছুটা হলেও ঝুঁকে সৌরাষ্ট্রের দিকে, যেহেতু চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করবে বাংলা। তবে বাংলার অসামান্য বোলিংয়ের দৌলতে টসে জিতেও বিশেষ ফায়দা তুলতে পারল না সৌরাষ্ট্র। আগামীকাল নতুন বল দিয়ে শুরু হবে প্রথম সেশন। এই ম্যাচের ভবিষ্যৎ আপাতত নির্ভর করছে ওই সেশনের ওপর। এই পিচে প্রথম ইনিংসে সৌরাষ্ট্রের স্কোর ৩৫০-এর নীচে রাখতে পারলে বাংলার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবি কিন্তু রীতিমতো জোরালো হয়ে উঠবে।

বাংলার ঋদ্ধিমান সাহার মতোই গত বুধবার নিউজিল্যান্ড থেকে ফেরেন পূজারা। গতকাল তিনি বলেছিলেন, তিনদিন ধরে ভোর চারটেয় ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাঁর, এবং দুপুর বারোটা নাগাদ 'জেট ল্যাগের'কারণে ফের ঘুম পাচ্ছে। অন্য 'টাইম জোনে' মাসখানেক কাটানোর পর এমনটা হতেই পারে। আজও তিনি নামলেন ছ'নম্বরে।এর পেছনে কৌশলগত কোনও কারণ থাকতেই পারে, কিন্তু দেখেশুনে যা মনে হচ্ছে, পূজারা সত্যিই অসুস্থ। ক্রিজে যেটুকু সময় ছিলেন তিনি, তার মধ্যে তিনবার 'ফিজিও' এসে দেখে গেছেন তাঁকে, সঙ্গে জলের বোতল। মাত্র ২৫ বল খেলেই (যার মধ্যে ২৩টি বলে রান আসে নি) আর খেলতে পারলেন না পূজারা।

ফলত মাঠে আপাতত অর্পিত ভাসাভাড়ার সঙ্গে ব্যাট করছেন চেতন সাকারিয়া, যিনি সেমিফাইনালে গুজরাটের বিরুদ্ধে যা ব্যাটিং দেখিয়েছেন, তা কোনও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে সচরাচর দেখা যায় না।

অবশ্য বাংলার চিন্তার কোনও কারণ নেই, এমনও নয়। লাঞ্চের পর থেকেই মাঠের বাইরে রয়েছেন কোয়ার্টার-ফাইনাল এবং সেমিফাইনালের নায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার। স্লিপে নিচু ক্যাচ নিতে গিয়ে আঙুলে চোট পাওয়ার পর থেকেই। সাবস্টিটিউট ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামেন অভিষেক রমন। ভয় একটাই, স্ক্যান করে যদি অনুষ্টুপের আঙুলে ফ্র্যাকচার পাওয়া যায়, সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে কি বাংলা? একজন ব্যাটসম্যান কমে যাওয়া, তাও আবার অনুষ্টুপের মতো ব্যাটসম্যান, সামান্য কথা নয়। আশা করা যাক, কাল সুখবর পাওয়া যাবে।

সৌরাষ্ট্র: হারভিক দেশাই, অভি বারোট, বিশ্বরাজ জাদেজা, অর্পিত ভাসাভাড়া, শেলডন জ্যাকসন, চেতেশ্বর পূজারা, চেতন সাকারিয়া, প্রেরক মানকড়, ধর্মেন্দ্রসিং জাদেজা, জয়দেব উনাদকাট (অধি), চিরাগ জানি

বাংলা: অভিমন্যু ঈশ্বরন (অধি), সুদীপ ঘরামি, সুদীপ চ্যাটার্জি, মনোজ তিওয়ারি, ঋদ্ধিমান সাহা, আকাশ দীপ, অনুষ্টুপ মজুমদার, মুকেশ কুমার, অর্ণব নন্দী, ঈশান পোড়েল, শাহবাজ আহমেদ

Advertisment