ঠিক যেন কোয়ার্টার ফাইনালের অ্যাকশন রিপ্লে! টপ অর্ডারের ভরাডুবির পর ওড়িশার বিরুদ্ধে যেভাবে অনুষ্টুপ মজুমদার আর শাহবাজ আমেদের জুটি পাল্টা লড়াই পৌঁছে দিয়েছিলেন বিপক্ষ শিবিরে, ইডেনে কর্ণাটকের বিরুদ্ধে রঞ্জি সেমিফাইনালের প্রথম দিনে প্রায় একই ছবি।
টস জিতে কর্ণাটক ফিল্ডিং নেওয়ার পর ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলার সামনে যখন একশোর মধ্যে মুড়িয়ে যাওয়ার লজ্জা হাতছানি দিচ্ছে, ত্রাতা হয়ে দেখা দিলেন ওড়িশা ম্যাচের সেঞ্চুরিকারী সেই অনুষ্টুপ মজুমদার। ১৮টি চার আর একটি ছয়ে সাজানো যাঁর অনবদ্য ১২০ নট আউটের সৌজন্যে বাংলা প্রথম দিনের শেষে ২৭৫-৯। যোগ্য সঙ্গত করলেন শাহবাজ আমেদ (৩৫) আর আকাশদীপ (৪৪)।
ইডেনের সবুজ উইকেটে টস জিতে বাংলাকে ব্যাট করতে পাঠাবেন কর্ণাটক অধিনায়ক করুন নায়ার, জানা ছিল। অভিমন্যু মিঠুন-প্রসিধ কৃষ্ণ-রনিত মোরে-কৃষ্ণাপ্পা গৌতমকে নিয়ে গড়া কর্ণাটক বোলিং যথেষ্ট শক্তিশালী, জানা ছিল। জানা ছিল না, ঘরের মাঠে এভাবে নিউমোনিয়া রোগীর মতো কাঁপবে বাংলার টপ অর্ডার, বোর্ডে ৭০ পেরনোর আগেই আধ ডজন ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নের পথ ধরবেন! অভিষেক রমন শূন্য রানে ফিরে শোভাযাত্রা শুরু করলেন। ক্যাপ্টেন অভিমন্যু ঈশ্বরনের (১৫) রানের খরা অব্যাহত। আর কবে রান করবেন, ঈশ্বরই জানেন। বহুদিন পরে দলে ফিরে সুদীপ চ্যাটার্জির অবদান ৮৩ বলে কেঁদে-ককিয়ে ২০। মনোজ তিওয়ারিও ব্যর্থ (৮), অর্ণব নন্দীও তথৈবচ (১৫)। শ্রীবৎস গোস্বামী? শূন্য।
It's Stumps on Day one of the #BENvKAR @paytm #RanjiTrophy semifinal in Kolkata.
Bengal end the opening day at 275/9, scoring 102 runs in the final session.
Scorecard ???????? https://t.co/8vuWwOBGXI pic.twitter.com/1XHwi9Sozz
— BCCI Domestic (@BCCIdomestic) February 29, 2020
৬৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলা যখন ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়ার মুখে, কোচ অরুণলালের মুখ দেখে যখন 'করুণলাল' মনে হচ্ছে, চলতি মরশুমে বাংলার আবিষ্কার শাহবাজ আমেদকে সঙ্গে নিয়ে জীবনদায়ী ওষুধ হিসেবে দেখা দিল অনুষ্টুপ মজুমদারের ব্যাট। অহেতুক গুটিয়ে না গিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখলেন নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনে, মাথায় চড়তে দিলেন না বিপক্ষ বোলিংকে। সপ্তম উইকেটে শাহবাজকে (৩৫) নিয়ে যোগ করলেন ৭২ রান। অষ্টম উইকেটের জুটিতে ১০৩ রান এল অনুষ্টুপ-আকাশদীপের ব্যাটে। ওই অকুতোভয় ৪৪ রানের ইনিংস আকাশদীপ না খেললে বাংলা দুশো-সোয়া দুশোর মধ্যে আজই শেষ হয়ে যেত। স্বপ্নের ফর্মে থাকা অনুষ্টুপ দিনের শেষে ব্যাটিং ১২০। কী ইনিংসটাই না খেললেন! স্কোর তিনশো পেরোতে কাল তিনিই বাংলার আশা-ভরসা।
কে এল রাহুল-করুন নায়ার-মনীশ পাণ্ডেদের নিয়ে গড়া কর্ণাটক ব্যাটিং লাইন আপের কাছে তিনশো সাড়ে তিনশো আদৌ দুর্লঙ্ঘ্য কিছু নয়। তবু লড়াই করার মতো একটা রানের পুঁজি অন্তত বাংলার বোলাররা পেয়েছেন। অনুষ্টুপ-শাহবাজ-আকাশদীপের মরিয়া লড়াইয়ের মর্যাদা দেওয়ার দায়িত্ব এখন বোলারদের সামনে।