Advertisment

শামি খেললেন না কোন যুক্তিতে, এখনও মাথায় আসছে না

কেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হারতে হল ধোনি-বিরাটদের? ঠিক কোথায় হলো ভুল? এসব নিয়েই এই ময়না তদন্ত করলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার বিশ্বকাপ বিশেষজ্ঞ শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
reason-behind-indias-semifinal-loss-againgst-newzeland

কেন হারল ভারত, কী বলছেন শরদিন্দু মুখোপাধ্য়ায়!

ম্যাঞ্চেস্টারে স্বপ্নভঙ্গ! লিগ পর্যায়ে অসাধারণ 'ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট' খেলেও তীরে এসে তরী ডুবল ইন্ডিয়ার। নিউজিল্যান্ডের কাছে ১৮ রানে হেরেই এবারের মতো বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হল বিরাট কোহলিদের। অপেক্ষা আরও চার বছরের, ২০২৩-এ ফের ভারতে বিশ্বকাপের। কিন্তু কেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হারতে হল ধোনি-বিরাটদের? এই নিয়েই কথা বললেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার বিশ্বকাপ বিশেষজ্ঞ শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়। 

Advertisment

১) ম্যাচ দু'দিনে গড়ানোয় কি সমস্যায় পড়ল ভারত? 

খেলাটা দুদিনে গড়ানোয় একটা অসুবিধা তো হয়েছেই। প্রথম দিন ওরা কিন্তু শুকনো পিচে টসে জিতে ব্যাট করেছিল। ব্যাটিং-সহায়ক উইকেট হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু ভারতীয় বোলারদের তারিফ করতেই হবে। দুর্দান্ত বল করে নিউজিল্যান্ডকে ৪৬.১ ওভারে ২১১ রানের মধ্যে রাখতে পেরেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরের দিন অনবরত বৃষ্টির জন্য কিছুটা ময়শ্চার কভারের তলায় চলে যায়। যতই পিচ কভারে ঢাকা থাকুক না কেন, উইকেট কিন্তু ভেজা থাকেই। ফলে অনেক লাইট হয়ে যায়। আর এটার পুরোপুরি ফায়দা তুলেছেন কিউয়ি বোলাররা। খেলাটা প্রথম দিন হলে ভারত  জিততে পারত। একটা রাতে অনেকটা ফারাক গড়ে দিল। মোমেন্টামটাই সরে গেল।

২) নিউজিল্যান্ডের বোলাররা কতটা ফারাক গড়ে দিলেন?

আমি প্রাক ম্যাচ বিশ্লেষণেই বলেছি, লড়াইটা ছিল নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। লকি ফার্গুসন ফিরে আসায় ওরা একটা গতি পেয়েছে। ম্যাট হেনরি অসাধারণ সুইং বোলার। বোল্টও দুরন্ত সুইং বল করেন। এদের সঙ্গেই জিমি নিশাম, কলিন ডে গ্রান্ডহোম ও মিচেল স্যান্টনার রয়েছেন। দেখতে গেলে পাঁচজনই অত্যন্ত কোয়ালিটি বোলার। ওরা অতিরিক্ত ব্যাটসম্যানের বদলে অতিরিক্ত বোলার নিয়ে খেলল। আর ভারত ঠিক উল্টোটা করল। শামিকে খেলানো দরকার ছিল।

আমার তো মাথায় আসছে না, ১৪টা উইকেট নিয়ে যে বোলার ফর্মে আছেন, তাঁকে কোন যুক্তিতে খেলানো হলো না? যদি জাদেজাকেই খেলাতে হতো, তাহলে স্পিনার হিসেবেই খেলাতে পারত। আর দীনেশ কার্তিকের বদলে চারে কেদার যাদবকে খেলোনো যেতে পারত, যিনি প্রয়োজনে অফস্পিনটা করে দিতে পারেন।

৩) দল নির্বাচন আর ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে কী বলবেন?

টিম সিলেকশন এবং ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পাঁচ রানের মধ্যে যখন তিন উইকেট পড়ে গেল, তখন কার্তিকের পর এমএস ধোনিকে নামানো উচিত ছিল। একটা পার্টানারশিপ গড়ে উঠতে পারত। পরের দিকে আস্কিং রেট ১০-১২-র কাছাকাছি চলে গেলে কিন্তু ঋষভ পন্থ আর হার্দিক পাণ্ডিয়া খেলে দিত। রবীন্দ্র জাদেজা রয়েছেন এরপর।

সাতে ধোনির কোনও জায়গাই নেই। ধোনি তাও শেষ পর্যন্ত খেলেছেন। নিজে হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন। জাদেজার সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ১১৬ রান যোগ করেছে স্কোরবোর্ডে। আমি বলব, ধোনির পাঁচে নামা উচিত ছিল। ধোনির সঙ্গে কার্তিক যদি ২০ ওভারের পার্টনারশিপ গড়ে দিতে পারতেন, তাহলে পরের দিকে পন্থ, পাণ্ডিয়া এবং জাদেজার জন্য কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেত।

৪) তুল্যমূল্য বিচারে নিউজিল্যান্ড কোথায় বাজিমাত করল?

আমি কিন্তু নিউজিল্যান্ডকেই কৃতিত্ব দেব। ওরা খাতায়-কলমে ভারতের থেকে পিছিয়ে। ২৩৯ রানটাকেই ২৭০-এর মতো করে দিয়েছিল, কারণ ওরা ২৪০-৫০ রান করলেও স্রেফ ফিল্ডিংয়ের জোরে ২০-৩০ রান বাঁচিয়ে দেবে। তিনটে অসাধারণ রান-আউট আর দুটো দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে নেবে। বোলারদের সমসময় এই সমর্থনটা ওরা জুগিয়ে আসছে। আমি বলব ওরা সেরা ফিল্ডিং সাইড। অস্ট্রেলিয়ার থেকেও ভাল। অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মধ্যে যেই ফাইনাল খেলুক, তাদের কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে ২০-৩০ রান অতিরিক্ত ধরেই চলতে হবে।

৫) ইংল্যান্ডে এই সময় কি বিশ্বকাপ করাটা আদৌ যুক্তিযুক্ত হলো?

যদি জুলাই-অগাস্ট মাসে বিশ্বকাপ হতো, তাহলে আরও অনেক বেশি শুকনো উইকেট পেতাম। তাহলে বৃষ্টিতে এতগুলো খেলা ভেস্তে যেত না। বৃষ্টির ভ্রূকুটি কোনওভাবে প্রভাব ফেলত না। বৃষ্টির ভয় আমাদের তাড়া করেছে। পরিবেশ দেখে খেলতে হয়েছে। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ে এত ভাবতে হতো না। গ্রীষ্মের সেকেন্ড হাফে হলে এই সমস্যা পোহাতে হতো না।

India New Zealand Cricket World Cup
Advertisment