Advertisment

"বিরাট কোচ বেছে নিতে পারলে, হরমনপ্রীত কেন পারবেন না?"

টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে আসেন হরমনপ্রীত কাউরের টিম ইন্ডিয়া। আর তারপর থেকেই ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ওপর দিয়ে একের পর এক ঝড় বয়ে চলেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
edulji-harmanpreet-759

এক অনুষ্ঠানে হরনমপ্রীত কাউরের সঙ্গে ডায়না এডালজি (ছবি প্রদীপ দাস)

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সুস্থ এবং স্বচ্ছ পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট গঠন করেছে কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ)। ঘটনাচক্রে এই সিওএ-র সদস্যরাই বিভিন্ন বিষয় সহমত পোষণ করতে পারেন না। এরকম একাধিক দৃষ্টান্ত রয়েছে অতীতে। এবার ভারতীয় মহিলা দলের কোচ বাছাইয়ের ইস্যুতে সিওএ-প্রধান বিনোদ রাইয়ের সঙ্গে সিওএ-র সদস্য ডায়না এডালজির সংঘাত এল প্রকাশ্যে।

Advertisment

টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে আসেন হরমনপ্রীত কাউরের টিম ইন্ডিয়া। আর তারপর থেকেই ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ওপর দিয়ে একের পর এক ঝড় বয়ে চলেছে। শুরুটা হয়েছিল কেন সেমিফাইনালের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মিতালি রাজকে বাদ দিয়েই দল সাজানো হয়েছিল? এরপর বোর্ড আর প্রাক্তন কোচ রমেশ পাওয়ারের বিরুদ্ধে পত্রবোমা নিক্ষেপ করেন মিতালি । চলে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ। গত ৩০ নভেম্বর রমেশ পাওয়ারের কোচ হিসেবে ভারতীয় দলের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়। মিতালি বনাম রমেশ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বিসিসিআই মাঠে নামে। তারা পাওয়ারের সঙ্গে আর চুক্তিনবীকরণ করেনি।

আরও পড়ুন: পাওয়ারের অধ্যায় শেষ, নতুন কোচের সন্ধান শুরু বোর্ডের

রমেশ পাওয়ারের পরিবর্তে নতুন কোচ নিয়োগের জন্য বোর্ড আবেদনপত্র গ্রহণ করতেও শুরু করে দেয়। পাশাপাশি কোচ বাছাইয়ের জন্য গত মঙ্গলবার অ্যাড-হক কমিটি গঠন করে সিওএ। ক্রিকেটার কপিল দেব, অংশুমান গায়কোয়াড় ও এস রঙ্গস্বামীকে নিয়েই গঠিত হয়েছে তিন সদস্যের এই কমিটি। হার্শেল গিবস, মনোজ প্রভাকর, দিমিত্রি মাসক্যারেনহাস ও ওয়েস শাহর মতো প্রাক্তন ক্রিকেটাররা ইতিমধ্যেই কোচ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বায়োডেটা পাঠিয়েছেন বোর্ডকে।

ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ও সিওএ সদস্য এডালজি পুরো বিষয়ে একেবারেই খুশি নন। তাঁর সাফ বক্তব্য, বিরাট কোহলির আবেদনে যদি অনিল কুম্বলকে সরিয়ে রবি শাস্ত্রীকে কোচ করা হয় থাকে তাহলে হরমনপ্রীতের আবেদনে কেন পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তি বাড়াল না বোর্ড? তিনি সাফ বলছেন যে, বিরাট যদি একটা এসএমএস করে বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে, তাহলে হরমনপ্রীতরা কেন মেইল করতে পারবেন না? এর উত্তরে সিওএ-র প্রধান বিনোদ রাই বলেছেন যে, ভারতীয় পুরুষ দল কোচের সমর্থনে বা বিপক্ষে কোনও মেইল পাঠায়নি। এডালজি, রাইয়ের সঙ্গে ইমেইল চেইনে রয়েছেন ক্রিকেট অপারেশনসের জেনারেল ম্যানেজার সাবা করিম।  আছেন মহিলা কোচ বাছাইয়ে ইস্যুতে বোর্ডের আইনি উপদেষ্টা ইন্দ্রনীল দেশমুখ। একটা বিষয় এখানে পরিস্কার যে, সিওএ-র দুই সদস্যের সংঘাতই ফের একবার প্রকাশ্যে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সেই মেইলগুলি পেয়েছে।

আরও পড়ুন: জোহরি ইস্যুতে অথৈ জলে বিসিসিআই

রাই এবং এজালজির মধ্যে একাধিক ইস্যু থাকলেও একটা বিষয় ভীষণভাবে প্রকট। কোনও ইস্যুতে রাইয়ের ভিটো ক্ষমতা মানতে পারেন না এডালজি। দু’জন সদস্যের সহমত বা অনুমোদন ছাড়াই বিষয়গুলো কিভাবে ঘটে যায় তা নিয়েও সন্দিহান এডালজি। তাঁর প্রশ্নের মেইল পাঠানোর মিনিট খানেকের মধ্যে কী করে রাইয়ের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি বার করা হয়! এখানে অ্যাড-হক কমিটির কথা বলা হয়। এখানেই প্রশ্ন এডালজির। রাই যদিও এডালজির প্রশ্নের উত্তরে লেখেন, “বিরাট আর কুম্বলের মধ্যে একটা মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল। যার ফলে কুম্বলে সরে আসেন।”ভারতের পুরুষ দল কোচ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনও মেইল পাঠায়নি। মহিলা দলকেও বুঝতে হবে যে, দলের ভোটে কোচ নির্বাচন হয় না।"

এডালজি লিখেছেন, “কোচের পদত্যাগের ইস্যুতে মহিলা ক্রিকেটারদেক মেইল পাঠানোয় কোনও ভুল দেখি না আমি। তারা মত প্রকাশ করেছে সততার সঙ্গে। ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত ও ভাইস ক্যাপ্টেন স্মৃতি তাদের পছন্দটা জানিয়েছে। এই দু'জন সিনিয়র ক্রিকেটারের পছন্দকে শ্রদ্ধা জানিয়েই আমাদের পাওয়ারকে রেখে দেওয়া উচিত। বিরাট কিন্তু প্রায়শই সিইও-কে মেইল পাঠাত কোচ পরিবর্তনের ব্যাপারে। তারপরেই কোচ পরিবর্তন হয়। আরও একটা বিষয় আমি আপত্তি জানিয়েছিলাম, কোচের পদে আবেদন করার জন্য একটা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কারোর ক্ষেত্রে সেটাও বাড়ানো হয়েছে। কারণ সে সময়ের মধ্যে আবেদন করেননি। মিস্টার কুম্বলে একজন কিংবদন্তি। তাঁকে দলের ব্যর্থতার মুখ হিসেবে দেখিয়ে ভিলেন বানানো হয়েছিল। তিনি অত্যন্ত সদয় ব্যক্তি যে, বিষয়টি থেকে বেরিয়ে যান। এই জন্যই ওনাকে আমি সম্মান করি। এছাড়াও অনান্য অনেক নিয়ম ভাঙা হয়েছে। যার প্রতিবাদ আমি করেছিলাম।”

এডালজি একাধিক মেইল করেছেন। সেখানে তিনি রাইয়ের অ্যাড-হক কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর যুক্তি  ইতিমধ্যেই যখন বোর্ডে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শচীন তেন্ডুলকর ও ভিভিএস লক্ষ্ণণের ক্রিকেট অ্যাডভাইজরি কমিটি রয়েছে, তখন নতুন এই অ্যাড-হক কমিটির কী প্রয়োজন। এডালজি জানান যে, কোচ হিসেবে পাওয়ারেরই থাকা উচিত। দলটা কোনও বিভক্ত হয়ে যাওয়া ঘরের মতো নয়। তিনি লিখেছেন, “কারেরা প্রচ্ছন্ন অভিসন্ধির জন্যই মেইলগুলি লিক হয় যায়। দেখানো হয় যে, দলের মধ্যে একাট বিভেদ রয়েছে।”

Women Cricket BCCI
Advertisment