কিছুদিন আগেই মহম্মদ শামি জানিয়েছিলেন, হতাশার শিকার হয়ে আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন তিনি। এই ডিপ্রেশনের শিকার কেবল শামিই নন। অন্যান্য ভারতীয় ক্রিকেটাররাও মানসিক রোগের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবারই যেমন জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার রবিন উথাপ্পা জানিয়ে দিলেন, তিনিও আত্মহত্যা করার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
রাজস্থান রয়্যালস এর অনলাইন প্লাটফর্ম 'মাইন্ড, বডি এন্ড সোল' এ এসে তারকা ব্যাটসম্যান জানান, "২০০৬ সালে যখন জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটাই, তখন নিজের বিষয়ে পুরোপুরি সচেতন ছিলাম না। তারপর থেকে অবশ্য অনেক কিছু শিখেছি। বর্তমানে নিজের চিন্তা ভাবনা, নিজেকে নিয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল আমি।"
২০০৬ সালে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটানোর ৪৬টি ওডিআই এবং ১৩টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। উথাপ্পা এদিন বলেন ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বারেবারেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত তার মাথায় ভিড় করে এসেছিল।
তিনি বলেছিলেন, "আমি কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি। একসময় মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। বারেবারেই সুইসাইডের চিন্তা মাথায় আসত। ২০০৯ থেকে ২০১১ এর মধ্যে প্রতিদিন আমার মনে রয়েছে। রোজ নিয়ম করে মৃত্যুর চিন্তা ভিড় করে আসতো।"
কতটা কঠিন ছিল সেই জীবন, সেই কথা জানাতে গিয়ে কেকেআরের প্রাক্তন জানিয়েছেন, "এমন সব দিন ছিল যে সময় ক্রিকেট আমার মাথাতেই আসতো না। দূরতম ক্ষেত্রেও ক্রিকেটের কোনো স্থান ছিল না। প্রতিদিন ভাবতাম আজকের দিনটা কিভাবে কাটিয়ে পরের দিনে পা রাখতে পারব।"
ক্রিকেটের হাত ধরেই ভয়ঙ্কর সেই দিনগুলো কাটিয়েছেন তিনি। জানিয়ে উথাপ্পা বলেছেন, "ক্রিকেট এসব চিন্তা থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখত। তবে অফসিজন এবং ম্যাচ ছাড়া দিনগুলো ভীষণ কষ্টের ছিল। সেই দিনে আমি চুপচাপ বসে ভাবতাম- তিন গুনব, দৌড়াবো এবং ব্যালকনি থেকে সটান ঝাঁপ মারব। তবে কোনো একটা বিষয় এসব করা থেকে আমাকে বিরত রাখত।"
কেকেআর থেকে রাজস্থান রয়্যালসে যাওয়া এই কর্ণাটকি ব্যাটসম্যান আরো জানিয়েছেন, জীবন নিয়ে তাঁর আর কোনো আক্ষেপ নেই। "কখনও কখনও নেতিবাচক হওয়া প্রয়োজন। আমি জীবনের ভারসাম্য এ যেমন বিশ্বাস করি তেমনই জানি কেউ সারাজীবন সবসময় পজিটিভ থাকতে পারেন না। নেতিবাচক হওয়া, নেতিবাচক বিষয়ের অভিজ্ঞতা হওয়া জীবনে প্রয়োজন হয়ে পড়ে মাঝে মধ্যে। আমার সমস্ত অভিজ্ঞতা আমাকে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। জীবনে যেসব নেতিবাচক বিষয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আমার অনুশোচনা নেই। কারণ সেগুলোই আমাকে জীবন পজিটিভ করে দিয়েছে।" দার্শনিক গলায় বলেন উথাপ্পা।