করোনা সংক্রমণের পরে বিশ্বের খেলাধুলার মানচিত্রটাই বদলে যাবে। এমনটাই মনে করছেন শচীন রমেশ তেন্ডুলকর। নিজের ৪৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে মাস্টার ব্লাস্টার মুখোমুখি হয়েছিলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। সেখানেই খেলা নিয়ে তাঁর গলায় আশা আশঙ্কার বার্তা।
প্রসঙ্গ: বলে লালার ব্যবহার
শচীন: ক্রিকেটে অনেক কিছুই বদলে যাবে। এই নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই। কেউই জানে না বল সাইন না করা হলে কিভাবে তা রেসপন্ড করবে। আমার মনে হয়না এতদিন পর্যন্ত কোনও দল বলে লালা, ঘাম না মাখিয়ে খেলেছে বলে। পাশাপাশি খেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। উইকেট নেওয়ার পর হাই ফাইভ বা সেলিব্রেট করা যাবে না একসঙ্গে। শুনেছি এই সংক্রমণ কাটিয়ে ওঠার পর প্রাথমিকভাবে ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলা হবে। ক্রিকেটাররা এতে বেশ সমস্যায় পড়বে। কারণ দর্শকরা সবসময় ক্রিকেটারদের উৎসাহ জোগায়। পাশাপাশি খেলার আগে নিরাপত্তার জন্য সরকারি ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে।
প্রসঙ্গ: লকডাউনে শ্রীলংকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবোয়ের মতো ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া
শচীন: প্রত্যেক ক্রিকেট বোর্ডই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে ভারতীয় বোর্ডই বলতে পারবে কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা। আমি নিশ্চিত সংকটের মুহূর্তে বিসিসিআই প্রত্যেক ক্রিকেট বোর্ডকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।
প্রসঙ্গ: একজন ক্রিকেটারের নেতৃত্বে বিসিসিআইয়ের করোনা পরবর্তী সময়ের লড়াই
শচীন: যদি আপনি অন্যদেশের ক্রিকেট বোর্ডের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন ক্রিকেটাররা বিভিন্ন পদে রয়েছেন। এটা যত না বেশি ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত, তার থেকে বেশি মানবিক বিষয় হয়ে পড়েছে। বোর্ডের বাকি সদস্যদের নিজস্ব মতামত রয়েছে। প্রত্যেকেই সাহায্য করতে প্রস্তুত। এই মুহুর্তে আপনি ক্রিকেটার হন বা না হন, প্রত্যেকেই সাহায্য করবে। আর সৌরভ ক্রিকেটার হিসাবে নয়, বোর্ড সভাপতি হিসেবে সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রসঙ্গ: ঘরোয়া ক্রিকেটারদের দুরবস্থা
শচীন: একটা সমাধান বের করতেই হবে। আমার মনে হয় এই মুহূর্তে এই বিষয়ের কথা কেউ ভাবছে না। সবাই ভাইরাস মোকাবিলার কথা ভাবছেন। তবে আমি নিশ্চিত ভারত নিশ্চই আগামীদিনে প্রত্যেককে সাহায্য করবে।
প্রসঙ্গ: র্যাঙ্কিংয়ে নীচে থাকা খেলোয়াড়দের সাহায্য করছেন ফেদেরার, নাদাল। ক্রিকেটে কি সম্ভব
শচীন: টেনিস ইন্ডিভিজুয়াল স্পোর্টস। ক্রিকেটে বোর্ড রয়েছে। টেনিসের অর্থের বিষয়টা ভালো জানি না। প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক খেলাই সমস্যার মুখে। বিসিসিআই নিশ্চয় দেশের ক্রিকেটারদের সাহায্য করবে।
প্রসঙ্গ: দেশীয় ক্রিকেট বাদ দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের রমরমা বাড়ার সম্ভবনা
শচীন: টি২০ ক্রিকেটের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির দাপট বাড়বে। টি টোয়েন্টি এমন এক ফরম্যাট যা তিন ঘন্টা পরিবারকে নিয়ে দেখা যায়। ক্রিকেট সেদিকেই বাঁক নিচ্ছে।
প্রসঙ্গ: ভাইরাস নিয়ে ব্যক্তিগত শঙ্কা
শচীন: এই মুহূর্তে সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। 'আমার কিছু হবে না' মার্কা ধারণার জন্য এটা ছড়াচ্ছে। এই ভাবভঙ্গি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। দুঃখিত হওয়ার থেকে নিরাপদে থাকা বেশি বাঞ্ছনীয়। ইউনিসেফের আম্বাসাডর হিসাবে আমি সবাইকে বলছি হাত ধোয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার কোম্পানিও জনগণকে সাহায্য করছে। সবসময়ই মানুষ সমস্যায় থাকে। তাই শুধু এই সময়েই নয় সবসময়েই সাহায্য করছি আমরা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সাহায্য করে যেতে চাই।