মরুঝড়ের কথা কে ভুলতে পারে! ক্রিকেটপ্রেমীদের এখনো নস্টালজিয়ায় ডুবিয়ে দেয় মরুঝড়ের স্মৃতি। ১৯৯৮ এর ২২ এপ্রিল শচীনের ব্যাটে লাঞ্ছিত হতে হয়েছিল অস্ট্রেলীয় বোলারদের। শারজায় কোকাকোলা কাপে ১৩১ বলে ১৪১ রানের ইনিংসে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। শচীনের দুরন্ত ইনিংস সত্ত্বেও ম্যাচ হারতে হয়েছিল ভারতকে। হার হওয়া কোনো ম্যাচে শতরানের শচীনের সেই ইনিংস এখনো আলোচনায় উঠে আসে বারবার।
ঐতিহাসিক সেই ম্যাচেই শচীন নাকি ভিভিএস লক্ষ্মণের উপর মেজাজ হারিয়েছিলেন। এমন কাহিনীই শেয়ার করেছেন মাস্টার ব্লাস্টার স্বয়ং। শচীন জানিয়েছেন, কীভাবে জয়ের নেশায় নিজের আবেগে সংযম লাগাতে পারেননি তিনি। কিংবদন্তির রূঢ় ব্যবহারের জন্য বাড়িতে ফিরে দাদা অজিত তেন্ডুলকরের কাছেও বকা খেতে হয়েছিল।
স্টার স্পোর্টসের ক্রিকেট কানেক্টেড অনুষ্ঠানে শচীন বলছিলেন, "বেশ কয়েকবার নিজের আবেগে বেড়ি পড়াতে পারিনি আমি। রান নেওয়ার সময় লক্ষ্মণের ওপর চিৎকার করে বলেছিলাম, দু রান নেওয়ার কথা! তুমি দৌড়াচ্ছ না কেন! এটা তো আমার কল।"
এরপরের ঘটনাও শচীন ব্যক্ত করেছেন, "বাড়ি ফিরেই দাদার কাছে বকা খাই। ও আমাকে স্পষ্ট বলে, মাঠে এমন ঘটনা মোটেই ঘটা উচিত নয়। ও তোমার টিমমেট। তোমার সঙ্গেই খেলছে। ও-ও দলের জন্য খেলছে। ম্যাচটা শুধু তোমার একার নয়। সেদিন বাড়িতে কার্যত লুকিয়ে ছিলাম।"
কেন শচীন সেদিন মেজাজ হারিয়েছিলেন, তাঁর ব্যাখ্যাও মিলেছে। লিটল মাস্টার জানিয়েছেন, "সেই ম্যাচে জিতে ফাইনালে উঠতে চেয়েছিলাম। কারণ জিতে ফাইনালে গেলে মানসিকভাবে এগিয়ে নামা যাবে। শুধু ফাইনালে ওঠা এবং প্রতিপক্ষকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।"
এরপর শচীনের আরো সংযোজন, "মানসিকভাবে এগিয়ে থাকার তাগিদেই সেই ম্যাচে জিততে চাই। তারপরে ফাইনালে আরো একবার হারানোর পরিকল্পনা ছিল।"
বিধ্বংসী সেই ম্যাচে ভারতের শুরুতে টার্গেট ছিল ২৮৫। এর পর ৪ ওভার কমে যাওয়ার সঙ্গেই সংশোধিত টার্গেট দাঁড়ায় ২৭৬। পঞ্চম উইকেটে শচীন ও লক্ষ্মণ ১০৫ রান যোগ করেছিলেন। তারপরে শচীন আউট হতে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় ভারত। লক্ষ্মণ ২৩ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকলেও ম্যাচ ভারত হারে ২৬ রানে। ভারত হারলেও নেট রানরেটের হিসাবে ফাইনালে পৌঁছেছিল।