Sachin Tendulkar BCCI Ranji Trophy: ভারতীয় ক্রিকেটে ধুন্ধুমার বিতর্কের ইতিহাসে নতুন কাহিনী কিছুদিন আগেই যোগ হয়েছে। সীমিত ওভারের ফরম্যাটে টিম ইন্ডিয়ার দুই তারকা ঈশান কিষান এবং শ্রেয়স আইয়ারকে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে ছেঁটে ফেলার পরেই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত। সেই আলোচনা পিছনের সারিতে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে ভারত-ইংল্যান্ড চলতি সিরিজের খবরা-খবরও।
বোর্ডের অবাধ্য হয়েছিলেন দুই তারকা। বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে ফর্মে ছিলেন শ্রেয়স। তবে তারকার মিথ্যাচারিতা বেআব্রু হয়ে গিয়েছিল আগেই। চলতি ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের পর ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর শ্রেয়সকে বলা হয়েছিল মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে। তবে পিঠে ব্যথার অজুহাত দেখিয়ে বরোদার বিলক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে নামতে রাজি হননি। সেই সময় এনসিএ-এ মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান নীতিন প্যাটেল রীতিমত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল শ্রেয়সের নতুন কোনও ইনজুরি নেই। শেষমেশ রঞ্জির সেমিতে তামিলনাড়ুর বিপক্ষে মুম্বইয়ের জার্সিতে শ্রেয়স খেলতে রাজি হলেও ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
ঈশান আবার বারবার জাতীয় দলে উপেক্ষিত থাকার কারণে অসন্তুষ্ট ছিলেন। রিজার্ভ বেঞ্চে টানা বসে থাকতে থাকতে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর চলাকালীন ঈশান ছুটি চেয়ে নেন বোর্ডের তরফ থেকে। তারপর ক্রিকেটে ফিরলেও ঝাড়খণ্ডের হয়ে রঞ্জিতে খেলছিলেন না তারকা। হার্দিক-ক্রুনাল পান্ডিয়ার সঙ্গে বরোদায় অনুশীলন করছিলেন নিজের উদ্যোগে। দ্রাবিড় আগেই বলে দিয়েছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললেই ঈশানকে ভাবা হবে জাতীয় দলের জন্য। তাই এই বাদ পড়া যেন প্রত্যাশিতই ছিল।
আরও পড়ুন: ঈশান-শ্রেয়সকে বাদ দিতেই মুখ খুললেন সৌরভ! জয় শাহের BCCI নিয়ে করলেন বড় মন্তব্য
জয় শাহ কেন্দ্রীয় চুক্তি তালিকা প্রকাশের আগে প্রকাশ্যে এসে কার্যত শাসিয়ে বলেন, বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ যে তারকারা রঞ্জি খেলবেন না, তাঁদের জন্য ফলাফল হবে ভয়াবহ। রঞ্জি খেলা সকলের জন্য অবিশ্যিক। একাধিক প্রচারমাধ্যমের খবর, অনুযায়ী, নির্বাচক কমিটি এবং টিম ম্যানেজমেন্ট দুই তারকার বিষয়ে জয় শাহকে অবহিত করে। তারপরে দুজনকে কেন্দ্রীয় চুক্তি তালিকার বাইরে রাখার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন বোর্ড সচিব।
বোর্ড বনাম বিদ্রোহী দুই তারকার সংঘাতে এবার জয় শাহদের পাশেই দাঁড়ালেন শচীন রমেশ তেন্ডুলকর। টুইটারে শচীন সরাসরি লিখেছেন, "দুরন্ত একটা রঞ্জি ট্রফি সেমিফাইনাল ম্যাচ হল। ব্যাটিংয়ের দুর্দান্ত কামব্যাক ঘটিয়ে মুম্বই ফাইনালে পৌঁছে গেল। অন্য সেমিফাইনালের উত্তেজনা শেষদিন পর্যন্ত বজায় ছিল। মধ্যপ্রদেশের জয়ের জন্য ৯০ প্লাস রানের দরকার ছিল। বিদর্ভের প্রয়োজন ছিল ৪ উইকেট। গোটা কেরিয়ার জুড়েই রঞ্জিতে খেলার বিষয়ে আমি সবসময়েই প্যাশনেট ছিলাম। সুযোগ পেলেই মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি খেলতাম। বেড়ে ওঠার সময় আমাদের ড্রেসিংরুমে ৭-৮ জন টিম ইন্ডিয়ার প্লেয়ার ছিল। ওঁদের সঙ্গে খেলাটা উপভোগ্য ছিল।"
এর পাশাপাশি লিটল মাস্টার আরও বলেছেন, "জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যখন ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেয়, তখন সেই টুর্নামেন্টের মান অনেকটাই বেড়ে যায়। তরুণরা নিজেদের আরও উন্নত করে। অনেক সময় জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই খেলার প্রাথমিক বিষয়গুলি নতুন করে আয়ত্ত করে। আর সেরা সেরা তারকারা অংশ নিলে সমর্থকরাও ঘরোয়া দলগুলিকে আরও বেশি করে ফলো করা শুরু করে। বোর্ড যে রঞ্জি ট্রফিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, এটা বেশ ভালো বিষয়।"
কোথাও শ্রেয়স এবং ঈশানের নাম না নিলেও মাস্টার ব্লাস্টারের টুইটের ছত্রে ছত্রে রঞ্জি ট্রফির গুরুত্ব বোঝানোর প্রয়াস। কিংবদন্তির এই উপদেশ বাক্য কি কানে তুলে নিজেদের শুধরে নেবেন শ্রেয়স-ঈশান, সেটাই আপাতত দেখার।