Advertisment

শোয়েবের সঙ্গে লকডাউনে বিচ্ছেদ, সানিয়ার মনে দুশ্চিন্তার পাহাড়

দেশকে ফেড কাপের মূলপর্বে তুলেই সানিয়া ক্যালিফোর্নিয়ায় উড়ে গিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান ওয়েলস মাস্টার্স খেলতে। তবে ওখানে পৌছেই সানিয়া জানতে পারেন ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে টুর্নামেন্টই বাতিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সানিয়া ভারতে, শোয়েব পাকিস্তানে। লকডাউনে সানিয়া-শোয়েবের বিচ্ছেদ।।এমন পরিস্থিতিতেই টেনিসের গ্ল্যামার কুইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে লাইভ চ্যাটে জানালেন, পুত্র ইজহান কবে আবার বাবাকে দেখতে পাবে, তা নিয়ে তিনি যথেষ্ট সন্দিহান।

Advertisment

লাইভে সানিয়া জানান, "শোয়েব পাকিস্তানের শিয়ালকোটে আটকে পড়েছে। আমি হায়দরাবাদে। এই পরিস্থিতি সামলানো বেশ কঠিন। কারণ আমাদের এক ছোট বাচ্চাও রয়েছে। ইজহান কবে আবার বাবাকে দেখতে পাবে, তা নিয়ে আমি তা নিয়ে বেশ চিন্তিত। আমরা বাস্তবসম্মত মানুষ। পাকিস্তানে শোয়েবের ৬৫ বছরের মা রয়েছেন। তাই শোয়েবের ওখানে থাকা ভীষণ প্রয়োজন।"

৪ বছর পর ফেড কাপে প্রত্যবর্তন করেছিলেন আগেই। ১৮ মাসের সন্তান ইজহানকে গ্যালারিতে সাক্ষী রেখে সানিয়া প্রথমবার ফেড কাপের মূলপর্বে ভারতকে যোগ্যতা নির্ণয়ে সাহায্য করেছিলেন। ২০১৮ র অক্টোবরে পুত্র ইজহানের জন্মের পর বেশ কয়েকমাস কোর্টের বাইরে ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কোর্টে ফিরেই হবার্ট এ মহিলা ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নাদিয়া কিচেনককে সঙ্গী করে। এই লকডাউনের মধ্যেই সানিয়া আবার ফেড কাপের হার্ট আওয়ার্ডও জিতেছেন।

তবে লকডাউনে টেনিসের চিন্তা একেবারেই নেই সানিয়ার। তিনি সাফ জানালেন, "এই মুহূর্তে টেনিস নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনাই করছি না। কয়েকদিন আগেও এত দুর্ভাবনা হত না। এখন অকারণেই খারাপ চিন্তা মাথায় ভিড় করে আসে। চারিপাশের পরিস্থিতিতে ভীষণই অনিশ্চয়তা।"

গোটা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত। জর্জরিত মধ্যবিত্ত থেকে দরিদ্র মানুষেরা। খসদ্যের7 অভাব, টাকার অভাবে হাহাকার চতুর্দিকে। এই বিষয় মন ছুঁয়ে গিয়েছে সানিয়ারও। টেনিস তারকা জানিয়েছেন, তিনি টাকা জমিয়ে রমজানের মাসে জাকাতের (দান) কাজ করছেন। তবে সানিয়া এখনও সংশয়ে, এই সাহায্যও যথেষ্ট কীনা তা নিয়ে। "মনে হচ্ছে একটু ভালো অবস্থায় থাকায় মানসিকভাবে নিজেকে দোষী মনে হচ্ছে।" বলছেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছুদিন আগেই একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে এক শিশুকে দেখা যাচ্ছে লাগেজের ওপর শুইয়ে ব্যাগ টানছেন হতদরিদ্র মা। সেই ছবি দেখে চোখের জল আটকাতে পারেননি সানিয়া, "এটা হৃদয় পুরো নিংড়ে দেয়। যারা দিন এনে দিন খায় তাদের অবস্থা অনুভব করতে পারছি। সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো আমার মতো অনেকেই অন্যকে সাহায্য করার মত অবস্থায় রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে যতটা সম্ভব সাহায্য করছি। তিন সপ্তাহের মধ্যে ইয়ুথ ফিড ইন্ডিয়া মুভমেন্টের মাধ্যমে আমরা ৩.৩ কোটি টাকার ফান্ড করেছি। তবে আমাদের দেশের জনসংখ্যা এতটাই বেশি যে এই সাহায্য কতটা, তা নিয়ে আমরা নিজেরাই সংশয়ে।"

দেশকে ফেড কাপের মূলপর্বে তুলেই সানিয়া ক্যালিফোর্নিয়ায় উড়ে গিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান ওয়েলস মাস্টার্স খেলতে। তবে ওখানে পৌছেই সানিয়া জানতে পারেন ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে টুর্নামেন্টই বাতিল হয়ে গিয়েছে। তার পর আর কোনো টুর্নামেন্ট অনুষ্টিত হয়নি। অলিম্পিকে ফেরার মোটিভেশন নিয়ে কোর্টে নামতেন সানিয়া। সেই টুর্নামেন্টও পিছিয়ে গিয়েছে একবছর।

সানিয়া নিজের হতাশার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, "এটা এথলিটদের জন্য একদমই খারাপ খবর। যারা অলিম্পিকের কথা ভেবে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছিল, তাঁদের কি হবে! টেনিসের তবু গ্র্যান্ড স্ল্যাম সহ আরো অনেক টুর্নামেন্ট রয়েছে। অনেক খেলায় আবার বছরে দু-তিনটে মাত্র টুর্নামেন্ট খেলা হয়। এটা শারীরিক ও মানসিকভাবে সবাইকে বিপর্যস্ত করে দেবে। আমাকেও।"

ফুটবল খেলা ইতিমধ্যেই শুরু হতে চলেছে। বিসিসিআইও ক্রিকেটারদের অনুশীলনে ফেরার ব্যবস্থা করছে। তবে সানিয়া মনে করছেন, পুরো সংক্রমণ না যাওয়া পর্যন্ত টেনিস বন্ধ রাখা হোক। তাঁর বক্তব্য, "যেই মুহূর্তে কেউ ট্র্যাভেল করবে, প্লেনের সিটে বসবে সেই মুহূর্তে সে সংক্রমণের শিকার হতে পারে। ১০০টা আলাদা আলাদা দেশের ৫০০ প্রতিযোগীকে নিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো ভীষণ কঠিন কাজ। এটা অনেক বড় রিস্ক হয়ে যাবে।"

Sania Mirza
Advertisment