পুলিশের তরফে বুকি সঞ্জীব চাওলার বিরুদ্ধে যে অতিরিক্ত চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে, তা পুরোপুরি 'কল্পনাপ্রসূত' বলে উড়িয়ে দিলেন তাঁর উকিল।
সঞ্জীব চাওলার আইনজীবী বিকাশ পাওয়া এদিন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়ে দেন, "পুলিশের তরফে সঞ্জীব চাওলার যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তা পুরোটাই পুলিশের কল্পনাশক্তি থেকে আসা। এই নথি কখনই ওঁকে দেখানো হয়নি। তাই এই নথিতে সই করতে অস্বীকার করার ঘটনাও পুরোপুরি মিথ্যা। ওর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট যখন আদালতে পেশ করা হয় সেই সময়ে উনি প্রথমবার এই নথির বিষয়ে জানতে পারেন।"
সেই বিবৃতিতে পুলিশের পক্ষে দাবি করা হয়েছিল সঞ্জীব চাওলা ক্রিকেট গড়াপেটায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের বিষয় স্বীকার করে নিয়েছিলেন। পাশাপাশি সঞ্জীব চাওলা জানান, কোনো ম্যাচই ক্রিকেটের স্পিরিট মেনে খেলা হয়না। সেইসঙ্গে আরো বলেন, ক্রিকেট গড়াপেটার সিন্ডিকেট দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি ডিজি রামগোপাল নায়েককে টার্গেট করতে পারে।
এই বক্তব্য খণ্ডন করেই চাওলার আইনজীবী জানান, "এই নথিতে উল্লিখিত কোনো সিন্ডিকেট কিংবা মাফিয়া জগতের বিষয়ে আমার মক্কেল অবহিত নন। উনি কিংবা অন্য কারোর জীবনে কোনোরকম প্রাণ সংশয় নেই। আমার মক্কেল ম্যাচ গড়াপেটার বিষয়ে কোনোভাবেই জড়িত নন। উনি কোনো ক্রিকেট বুকিও নন।"
দিল্লি পুলিশ অতিরিক্ত চার্জশিটে জানিয়েছিল, চাওলা এই তদন্তে সাহায্য করছেন না, এর থেকেই পরিষ্কার উনি এই গড়াপেটায় যুক্ত। ট্রায়াল কোর্টের জামিনের অর্ডারে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ জারি না করায় চলতি মাসেই তিহার জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন সঞ্জীব চাওলা। তারপরেই সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে গিয়েছে দিল্লি পুলিশ। আগামী মাসেই তার শুনানি হওয়ার কথা। জানা গিয়েছে, চাওলার অন্য সহযোগীরা হলেন, কৃষণ কুমার, রাজেশ কালরা, সুনীল দারা।
২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত সফরে কীভাবে গড়াপেটা করা হয়েছিল, তার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে চার্জশিটে। পাশাপাশি হ্যান্সি ক্রোনিয়ের সঙ্গে চাওলার কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংও রয়েছে পুলিশের কাছে।
জেরায় চাওলা পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৯৯৩ সালে তিনি ভারত ছেড়ে পাকাপাকিভাবে লন্ডনে ঘাঁটি গাড়েন। অক্সফোর্ড স্ট্রিটে তাঁর দোকানও রয়েছে। তিনি জানান, কৃষণ কুমার, রাজেশ কালরা, সুনীল দারা তাঁর পুরোনো বন্ধু এবং বুকি কাণ্ডেও জড়িত। দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে থাকায় তিনি ইউকে র নাগরিকত্বও নিয়ে নেন ২০০০ এর শুরুর দিকে। দীর্ঘদিন প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া চালানোর পর এই বছরেই চাওলাকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়।