প্রচুর ক্রিকেট সমর্থক এবং পণ্ডিতেরা মত পোষণ করেছিলেন রোহিত শর্মার টেস্ট ক্রিকেটের ব্য়াটিং সম্পর্কে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ৩০৩ রান ( প্রথম ইনিংসে ১৭৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৭) করে রোহিত প্রমাণ করে দিলেন যে, সর্বোচ্চ স্তরের ক্রিকেটেও তিনি একই ভাবে বিরাজ করতে পারেন। যেভাবে তিনি ক্রিকেটের ছোট ফর্ম্য়াটে রাজত্ব করেন।
টেস্ট ক্রিকেট থেকে বাদ যাওয়ার আগে রোহিতের অ্যাভারেজ (৩৯.৬২) খুব একটা খারাপ ছিল বলা যাবে না। রোহিত যখন সাদা বলের ক্রিকেটের মতো ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি তখনই উনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েন। অনেকে আবার তাঁর টেকনিক নিয়ে সরব হয়েছিলেন টেস্টের আগে প্র্যাকটিস ম্য়াচে রান না করায়। রোহিতের পা আর মাথা নিয়ে তারা উঠেপড়ে লেগেছিলেন। রোহিতের থেকে তাঁদের মাথা ব্য়থা একটু বেশি ছিল বলেই মনে হয়। ইতিবাচক সমালোচনা ভাল, কিন্তু কিছু লোক অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে। সেটা জিনিসটাকে তেতো করে ফেলে। যাই হোক দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ভারতীয় ওপেনার হিসাবে দুই ইনিংসে শতরান করলেন রোহিত। ক্রিকেটের একটি প্রবাদ তিনি অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ করে দিলেন, "ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।"
আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো সহজে লড়াই ছাড়বে না দক্ষিণ আফ্রিকা
গৌতম গম্ভীর ও বীরেন্দ্র শেহওয়াগ ভারতীয় দল থেকে চলে যাওয়ার পর নির্বাচকরা ওপেনিংয়ে অনেককেই সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কেউই স্থায়ী জায়গা করতে পারেননি। প্রথম টেস্টে ৩০০ রানের পার্টনারশিপ করে রোহিত শর্মা ও ময়ঙ্ক আগরওয়াল কিছুটা হলেও ভারতীয় থিঙ্কট্য়াঙ্ককে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ দিয়েছে। ময়ঙ্ক যবে থেকে সুযোগ পেয়েছেন তাঁর সদ্ব্য়বহার করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর এই দ্বি-শতরান তাঁকে ও ভারতীয় টিম ম্য়ানেজমেন্টকে স্বস্তি দেবে।
আচ্ছা বলতে পারেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে কেন বাদ পড়েছিলেন? টেস্টে ঘরের মাটিতে তাঁর পরিসংখ্য়ান ঈর্ষণীয়। এই টেস্টে ফিরে এসে সাতটি উইকেট নিয়ে প্রমাণ করলেন যে, ভারতীয় একজন কোয়ালিটি স্পিনারকে মিস করছিল। মুরলীথরনের সঙ্গে সব থেকে দ্রুত ৩৫০ উইকেটে পৌঁছে গেলেন এই তামিলনাড়ুর কিংবদন্তি। আর রবীন্দ্র জাদেজা প্রমাণ করলেন যে, টেস্ট হোক বা ওডিআই, কিম্বা টি-২০ ক্রিকেটে তাঁর উপকারিতা। ৭০ রান আর সাত উইকেট মন্দ নয়।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটে আর ‘আম্পায়ার্স কল’ রাখার অর্থ কী?
সর্বশেষে যার কথা উল্লেখ না করলে নয়, সে বাংলার মহম্মদ শামি। উপমহাদেশের উইকেট পেস বোলারদের বদ্ধভূমি বলা হয়। সেখানে তিনি দ্বিতীয় ইনিংসে যা বল করলেন তা অনেক দিন স্মৃতির মণিকোঠায় রয়ে যাবে। তাঁর ফিটনেস ও বিরিয়ানির প্রতি আশক্তি সর্বজনবিদিত। শেষ দু'বছর নতুন বা পুরনো বলে যা বল করছেন তা আকন্ঠ প্রশংসার যোগ্য। ওয়াসিম আক্রম কেকেআরের মেন্টর থাকাকালীন এমএস ধোনিকে শামির কথা বলেছিলেন। জহুরী একটি রত্ন উপহার দিলেন ভারতকে। তাঁর ঔজ্জ্বল্যে পরিস্ফুট হচ্ছেন যখনই মহম্মদ শামি বল করছেন। সাবাশ শামি।