Advertisment

ক্রিকেটে আর 'আম্পায়ার্স কল' রাখার অর্থ কী?

অ্যাশেজ থেকে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় তাঁর নিয়মিত কলামে ক্রিকেট দুনিয়ার রাউন্ডআপ করলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কেউ কেউ বলেন একটি গ্লাস অর্ধেক ভতি, কেউ কেউ বলেন সেটা অর্ধেক খালি। সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপে ইন্ডিয়ার পারফরম্যান্সটা অনেকে এভাবেই ভাবতে পারেন। সেমিফাইনালে পৌঁছানো খুব একটা লজ্জার নয়। কিন্তু সেরা দল হিসাবে আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনেকটাই বেশি ছিল।

Advertisment

বিশ্বকাপ এখন অতীত। শুরু হয়ে গিয়েছে দু'বছরের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ভারত শুরুটা করল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। এমন একটা দলের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলিরা খেললেন, যারা টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন দ্বিতীয় ডিভিশনেও আসে না। এটা বলতে আমার কোনও দ্বিধা নেই। এরকম একটা দলকে হারিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ সেমিতে হারের জ্বালা কতটা মিটল, সেটা দেখার বিষয়।

অপরদিকে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া খেলল অ্যাশেজ। দুই দল হাড্ডাহাড্ডি লড়ে সিরিজটা ড্র করল। একটা জিনিস ভুললে চলবে না, বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অত্যন্ত কঠিন একটা সিরিজ খেলল ইংল্যান্ড। অ্যাশেজের হাত ধরেই দুটো টিম নিজেদের টেস্ট দলটা সাজিয়ে ফেলল পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্টের জন্য।

অ্যাশেজে স্টিভ স্মিথের কথা না বললেই নয়। যিনি এক বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে ৭৭৪ রান করলেন ১১০.৫৭-এর গড়ে। অপরদিকে একটা বৈপরীত্য দেখা গেল তাঁর সতীর্থ ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটে। উনিও স্মিথের মতো এক বছর নির্বাসিত ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। ওয়ার্নারও সুপারস্টার। অথচ গোটা অ্যাশেজে ৯.৫-এর গড়ে করলেন মাত্র ৯৫ রান। তবে এই পারফরম্যান্সের বিচারে ওয়ার্নারকে ছোট করে দেখলে চলবে না। ওয়ার্নার ঘুরে দাঁড়াবেনই। ফিরে আসবেনই। উনি বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান।

অ্যাশেজে অত্যন্ত জঘন্য আম্পায়ারিং দেখলাম। এই প্রথমবার আইসিসি সিরিজের মাঝপথেই আম্পায়ারদের বদল করতে বাধ্য হলো। এবার সময় এসেছে আম্পায়ার্স কলের রিভিউ করার। আমরা যখন প্রযুক্তি ব্যবহার করছিই, তাহলে পুরো বিষয়টা প্রযুক্তির ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভাল।

বল যদি উইকেটে গিয়ে লাগে, তাহলে সেটা আউটই হয়। সেখানে আবার আম্পায়র্স কল কোথা থেকে আসছে? বল উইকেটে লাগছে, আম্পায়ার বলছে নট আউট, এটা কীরকম অদ্ভুত বিষয় নয় কী! তাহলে আম্পায়ারিংয়ে টেকনোলজির কোনও মানেই হলো না।

কিছু কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন বলব বল ট্র্যাকিং। যেটাকে একশ শতাংশ ফুলপ্রুফ করতে হবে। তাহলেই এই আম্পায়ার্স কল বিষয়টা উঠে যাবে। যেহেতু বল ট্র্যাকিং থ্রি-ডি-তে দেখতে পারি না, সেহেতু বিষয়টা ফুলপ্রুফ হচ্ছে না। ওই জন্য এখনও আম্পায়ারদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে আমাদের। বোলারের হাত থেকে বল বেরিয়ে আসার পর উইকেটে লাগছে, বল যদি লাইনে থাকে এবং লেগস্টাম্পের বাইরে পিচ না-করে থাকে, তাহলে সেটা ক্রিকেটীয় সংজ্ঞায় আউট। এখানে আম্পায়ার্স কলের কোনও প্রশ্নই নেই।

এবার ভারতের কথায় আসি। ইন্ডিয়া এই মুহূর্তে হোম সিরিজ শুরু করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিনটি টি-২০ ও তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলছে তারা। প্রথম টি-২০ টা আবার ধরমশালায় বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছে। ফলে সিরিজটা এখন দুই ম্যাচের হয়ে গিয়েছে।

টি-২০ র‌্যাঙ্কিংয়ের তিন ও চার নম্বর দল মুখোমুখি হয়েছে। ফলে ভারত কিন্তু চাপে থাকবে। দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু একটা যুব খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি টিম নয়। অনেকেই আছেন যাঁরা তিরিশের কোঠায়। হতে পারে তাঁরা দেরিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছেন বা, দেরিতে অভিষেক করতে চলেছেন দেশের হয়ে।

দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য এখন ২০২০ টি-২০ বিশ্বকাপ। সেভাবেই দল সাজাচ্ছে তারা। বেশ কিছু বিশ্ববন্দিত ক্রিকেটার অবসর নেওয়ার পর তারা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। ভারতও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকেই পাখির চোখ করে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। এই সিরিজ থেকেই যার শুরু।

তবে পরিশেষে ক্রিকেটের বাইরেও একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। ব্যাডমিন্টনের কথা না-বললেই নয়। দেশের সোনার মেয়ে পিভি সিন্ধুকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশপ জেতার জন্য । প্রথম মহিলা হিসাবে এই নজির গড়ার জন্য তাঁকে আমার সাধুবাদ। ভারতকে গর্বিত করলেন সিন্ধু। আশা করব পরবর্তী কালে সাইনা নেহওয়াল ও পিভি সিন্ধু আরও গর্বিত করবেন দেশকে। ভারতের ব্যাডমিন্টন যে অত্যন্ত সুরক্ষিত হাতে রয়েছে, সিন্ধুর বিশ্বজয় তারই প্রমাণ।

cricket Steve Smith David Warner
Advertisment