সেভেন সামিট, সপ্তশৃঙ্গ জয়। সত্যরূপের কাছ থেকেই বাঙালি জেনেছে কী এই সেভেন সামিট। এবার জানল সেভেন ভলকানো সামিটের কথা। অর্থাৎ কি না সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরির চূড়ায় পা রাখা। হ্যাঁ, আমাদের স্বপ্নও যত উঁচুতে পৌঁছোতে ভয় পায়, সত্যরূপ এক অদম্য জেদ বুকে চেপে পৌঁছে যায় সেখানে। সামনেই সেই স্বপ্নের শেষ ধাপটুকু উঠতে চলেছে সে। আন্টার্ক্টিকার সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি মাউন্ট সিডলির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লেন বছর ৩৫ -এর যুবক।
ব্যাঙ্গালোর প্রবাসী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত ২০১৭ সালের ডিসেম্বরেই দেশের প্রথম অসামরিক বাঙালি সপ্তশৃঙ্গজয়ী হিসেবে নজির গড়েছিলেন। এ বারেও তাঁর জন্য অপেক্ষা করে আছে বিশ্ব রেকর্ড। সবচেয়ে কম বয়সে সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরির শৃঙ্গে পা রাখার বিশ্ব রেকর্ড।
আরও পড়ুন, ওশিয়ানিয়ার সবচেয়ে উঁচু আগ্নেয়গিরির চূড়ায় বাংলার সত্যরূপ
বুধবার রাতেই মাউন্ট সিডলির উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র সত্যরূপ। বুধবার বিকেলে মায়া আর্ট স্পেসে ছিল তারই সাংবাদিক বৈঠক। ওই অনুষ্ঠানে সত্যরূপকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বাংলার অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস জগতের দিকপালরা। ছিলেন পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস, ন্যাটমো-র প্রাক্তন জয়েন্ট ডিরেক্টর ত্রিদিব কুমার বসু, আন্টার্কটিকার সঙ্গে বাঙালির প্রথম ভাব জমানো ভূ-বিজ্ঞানী সুদিপ্তা সেনগুপ্ত, ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরে পার হওয়া বুলা চৌধুরী ও আরও অনেকে। সত্যরূপের হাতে তুলে দেওয়া হল ভারতের জাতীয় পতাকা। সাফল্য কামনা করার পাশাপাশি পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায় বারবার মনে করিয়ে দিলেন অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় যেন জীবন বিপন্ন না হয়। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে যখন ছন্দা গায়েন, রাজীব ভট্টাচার্য, গৌতম ঘোষের মতো অভিজ্ঞ পর্বতারোহী, পেম্বা শেরপার মতো দক্ষ শেরপাকে হারিয়েছে বাংলা।
সেভেন ভলক্যানিক সামিটের মধ্যে পড়ছে মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো(আফ্রিকা), মাউন্ট এলব্রুস(ইয়োরোপ), মাউন্ট ওজোস দেল সালাদো(দক্ষিণ আমেরিকা), মাউন্ট দামাভান্দ(এশিয়া), মাউন্ট গিলউয়ে(ওশিয়ানিয়া), মাউন্ট পিকো দে ওরিজাবা(উত্তর আমেরিকা), এবং মাউন্ট সিডলি (আন্টার্কটিকা)। প্রথম দুটি বাদে বাকি চার মহাদেশের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরিতে সত্যরূপ পা রেখেছেন ২০১৮ তেই।
বৃহস্পতিবার দুবাই হয়ে সত্যরূপ যাবেন স্যান্টিয়াগো। সেখান থেকে পাড়ি দেবেন আন্টার্কটিকা। শৃঙ্গে পৌঁছনোর সম্ভাব্য সময় জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ। ইতিহাস গড়া এবার সময়েরই অপেক্ষা। আর সেই ইতিহাসের সাক্ষী থাকার উত্তেজনায় আঁচ পোয়াচ্ছে বাংলা।