ভারতীয় সময় সকাল ৬টা বেজে ২৫ মিনিট। সুদূর আন্টার্কটিকার মাউন্ট সিডলি-তে উড়ল তেরঙ্গা। বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন বাংলার সত্যরূপ সিদ্ধান্ত। পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ পর্বতারোহী হিসেবে সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আরোহণের পর সর্বোচ্চ সাত আগ্নেয়গিরিতে পা রাখলেন সত্যরূপ।
অস্ট্রেলীয় পর্বতারোহী ড্যানিয়েল বুল এতদিন এই রেকর্ডধারী ছিলেন। ৩৬ বছর ১৫৭ দিন বয়সে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন বুল। ৩৫ বছর ৯ মাস বয়সে আন্টার্কটিকার মাউন্ট সিডলি জয়ের মধ্যে দিয়েই সত্যরূপ তাঁর ঝোলায় পুরলেন বিশ্বরেকর্ডের সম্মান। এর আগে ২০১৭ সালে দেশের প্রথম অসামরিক বাঙালি হিসেবে সপ্তশৃঙ্গ জয় করেছিলেন বেঙ্গালুরু প্রবাসী সত্যরূপ।
At 10:10 Fluttered the india flag at sidley what a proud moment | Find me with inReach➜https://t.co/uNb1Kmko0r
— Satyarup Siddhanta (@SatyarupS) January 16, 2019
সেভেন ভলক্যানিক সামিটসের মধ্যে পড়ছে মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো (আফ্রিকা), মাউন্ট এলব্রুস (ইয়োরোপ), মাউন্ট ওজোস দেল সালাদো (দক্ষিণ আমেরিকা), মাউন্ট দামাভান্দ (এশিয়া), মাউন্ট গিলউয়ে (ওশিয়ানিয়া), মাউন্ট পিকো দে ওরিহাবা (উত্তর আমেরিকা), এবং মাউন্ট সিডলি (আন্টার্কটিকা)। প্রথম দুটি বাদে বাকি চার মহাদেশের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরিতে সত্যরূপ পা রেখেছেন ২০১৮ তেই। মাউন্ট সিডলির উদ্দেশ্যে কলকাতা থেকে রওনা হয়েছিলেন ২ জানুয়ারি রাতে। মঙ্গলবার টুইট করে জানিয়েছিলেন সিডলির বেসক্যাম্প পৌঁছনোর কথা। প্রবল হাওয়া থাকায় প্রাথমিক প্রতিকূলতা পেরিয়ে বুধবার ৪,২৮৫ মিটার উচ্চতায় পা রাখেন সত্যরূপ।

সত্যরূপের সাফল্যের খবরে বুধবার সকাল থেকেই খুশির আবহাওয়া বাংলার পর্বতারোহী মহলে। ২০১৬-র এভারেস্ট অভিযানে সত্যরূপের সহ অভিযাত্রী রুদ্রপ্রসাদ হালদার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানালেন, “এত কাছ থেকে যাকে দেখেছি, সেই মানুষটার সাফল্যে ভাষা হারিয়ে ফেলছি। সত্যরূপের এই কৃতিত্ব সারা দেশকে গর্বিত করল। সত্যরূপের সাফল্য বারবার বাংলার পর্বতারোহণকে প্রচারের আলোয় নিয়ে এসেছে। ব্যক্তিগত কৃতিত্ব অর্জনের চেয়েও যা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায় বললেন, “সাধারণ মানুষের কথা আলাদা, আমি নিজেই সত্যরূপের কাছ থেকে প্রথম জানতে পেরেছি সেভেন ভলক্যানিক সামিটস বলে কিছু হয়। নিঃসন্দেহে এমন কৃতিত্ব বাঙালির কাছে, দেশবাসীর কাছে খুবই আনন্দের। আর পুরো নিজের চেষ্টায় সত্যরূপ এটা করেছে। বড় কোনও সংগঠন ওর পেছনে ছিল না। আগামী দিনে সত্যরূপকে দেখে নিশ্চয়ই আরও কেউ ভলক্যানিক সামিটস জয় করতে আগ্রহী হবেন।”