BCCI central contracts: বেনজির পরিস্থিতিতে স্রেফ ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার জন্য শাস্তির খাড়া নেমে এল ঈশান কিষান, শ্রেয়স আইয়ারের ওপর। দুজন ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে নামতে নিমরাজি ছিলেন। তারপরেই জয় শাহ সরাসরি বলে দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতেই হবে।
হার্দিক পান্ডিয়াও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন না। তবে ইনজুরি রয়েছে তাঁর। তাই শাস্তির খাড়া এড়ালেন তারকা। তিনি এ ক্যাটাগরিতে জায়গা পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, আসন্ন সিজনে দুই তারকাকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেন নির্বাচকরা। তাতেই চূড়ান্ত শিলমোহর দেন বোর্ড সচিব জয় শাহ।
কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাতিল হওয়ার প্রভাব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আর কয়েক মাসের মধ্যেই টি২০ বিশ্বকাপ। দুজনের টি২০ বিশ্বকাপে খেলা কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল এই চুক্তি হারানোর ফলে। সেই সঙ্গে জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ-এড আকাশেও ঘন মেঘ জমা হল।
দুজনে টিম ইন্ডিয়ার সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অপরিহার্য অংশ ছিলেন। এমনকি প্রো-রাটা বেসিসের শর্ত পূরণ করলেও (নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তিন টেস্ট, আট ওয়ানডে, এমনকি দশ টি২০) দুজনকে সম্ভবত কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আর ভাবা হবে না। স্রেফ ম্যাচ ফি ধরে ধরে দুজনকে খেলানো হবে।
দুই তারকাই আইপিএলে খেলবেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ বলা হচ্ছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললেই দুজনই জাতীয় দলের জন্য বিবেচিত হবেন। বোর্ডের এক কর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলেছেন, "বোর্ড ওঁর ছুটি মঞ্জুর করার পর ঈশান এনসিএ বা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় রিপোর্ট করেনি। নিজেই একা অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন অবস্থায় বোর্ডের তরফে ওঁকে কেন্দ্রীয় চুক্তি দেওয়া সম্ভব ছিল না। শ্রেয়সের ক্ষেত্রেও আমরা মেডিক্যাল দলের পরামর্শ মেনে এগিয়েছি। দুজনের জন্যই জাতীয় দলের দরজা উন্মুক্ত রয়েছে। তবে ওঁদেরকে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে হবে।"
বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে ফর্মে ছিলেন শ্রেয়স। তবে তারকার মিথ্যাচারিতা বেআব্রু হয়ে গিয়েছিল আগেই। চলতি ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের পর ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর শ্রেয়সকে বলা হয়েছিল মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে। তবে পিঠে ব্যথার অজুহাত দেখিয়ে বরোদার বিলক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে নামতে রাজি হননি। সেই সময় এনসিএ-এ মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান নীতিন প্যাটেল রীতিমত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল শ্রেয়সের নতুন কোনও ইনজুরি নেই। শেষমেশ রঞ্জির সেমিতে তামিলনাড়ুর বিপক্ষে মুম্বইয়ের জার্সিতে শ্রেয়স খেলতে রাজি হলেও ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- রাজনীতিবিদের সঙ্গে ক্রিকেটারের কাদা ছোঁড়াছুড়ি হচ্ছে! টিম ইন্ডিয়ার তারকার বিতর্কে ঝড় প্রাক্তনীর
ঈশান আবার বারবার জাতীয় দলে উপেক্ষিত থাকার কারণে অসন্তুষ্ট ছিলেন। রিজার্ভ বেঞ্চে টানা বসে থাকতে থাকতে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর চলাকালীন ঈশান ছুটি চেয়ে নেন বোর্ডের তরফ থেকে। তারপর ক্রিকেটে ফিরলেও ঝাড়খণ্ডের হয়ে রঞ্জিতে খেলছিলেন না তারকা। হার্দিক-ক্রুনাল পান্ডিয়ার সঙ্গে বরোদায় অনুশীলন করছিলেন নিজের উদ্যোগে। দ্রাবিড় আগেই বলে দিয়েছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললেই ঈশানকে ভাবা হবে জাতীয় দলের জন্য। তাই এই বাদ পড়া যেন প্রত্যাশিতই ছিল।
কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বাদ পড়া ঈশান-শ্রেয়সের জন্য যে কারণে ধাক্কা:
ছোট্ট কথায় বলতে হলে, শ্রেয়স আইয়ার, ঈশান কিষান বোর্ডের কোনও পরিকাঠামোর সুযোগ সুবিধা পাবেন না। যেমন কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ তারকারা যে কোনও সময়ে এনসিএ-র সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন। যা পাবেন না ঈশান-শ্রেয়স। এখন এনসিএ-র পরিকাঠামোর সুযোগ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা এবং বোর্ড- দুই তরফেই শংসাপত্র জোগাড় করতে হবে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বোর্ডের মেডিক্যাল কভারেজ পাবেন না দুই তারকা। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা তারকাদের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করে বিসিসিআই। এমনকি রিহ্যাব এবং ট্র্যাভেলিংয়েরও খরচ দেয় বিসিসিআই। এবার অবশ্য সেই ঘটনা আর হবে না। জাতীয় দলে জায়গা পেতে হলে দুজনকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। কারণ বোর্ড নিশ্চিত করে বলেই দিয়েছে, আপাতত আইপিএলের পারফরম্যান্স জাতীয় দলের নির্বাচনের মাপকাঠি হবে না।