শুক্রবার জুলাইয়ের ৮ তারিখে নিজের ৫০তম জন্মদিন পালন করলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বর্তমান ক্রিকেট সমাজের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ওয়ারকলোড ম্যানেজমেন্ট। এমন ইস্যুতেই এবার জন্মদিনে মুখ খুলে মহারাজ জানিয়ে দিলেন কোনও ব্রেক ছাড়াই টানা ১৩ বছর ক্রিকেট খেলে গিয়েছেন তিনি।
এমন সময়ে জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন যখন ভারতীয় ক্রিকেট গড়াপেটা কেলেঙ্কারিতে বিধ্বস্ত। নিজের ট্রেডমার্ক আগ্রাসন দলের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সৌরভ। একের পর এক তারকার জন্ম দিয়েছেন নিজের অধিনায়কত্ব পর্বে।
২০০৫ সৌরভের জন্য মোটেই ভালো কাটেনি। সেই বছরেই জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয় সৌরভকে। হেড কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের সঙ্গে মতান্তর তীব্র আকার নিয়েছিল। বাদ পড়ার পরে ছয় মাস জাতীয় দলের বাইরে কাটাতে হয়েছিল। সেই সময়ের স্মৃতি চারনাতেই সৌরভ জানিয়ে দিলেন, কীভাবে তিনি টানা ১৩ বছর কোনও বিশ্রাম না নিয়েই টানা খেলে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: টিম ইন্ডিয়া থেকে খুব শীঘ্রই বাদ কোহলি! বিরাট ঘোষণার পথে সৌরভের BCCI
বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মত বিশ্রাম না নিয়ে টানা ক্রিকেট খেলে যাওয়ার পর বাদ পড়া যে বেশ কঠিন তা স্বীকার করে নিয়েছেন বার্থডে বয়।
সৌরভের বক্তব্য, “ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে হওয়াটা সমস্যার ছিল না। তবে গোটা পরিস্থিতি বেশ কঠিন ছিল। কারণ এটা এমন একটা পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যা আমার ব্যাটিং-বোলিং দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই ঘটনার আগে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে একটানা ১৩ বছর খেলেছিলাম কোনও ব্রেক ছাড়াই। এমনকি একটা সিরিজ অথবা ট্যুরও মিস করিনি। এখন যেভাবে ক্রিকেটাররা বিশ্রামে যায়, সেরকম মোটেই রেস্ট নিইনি কখনও। তাই মাঝের চার-ছয় মাসের সেই ঘটনাকে ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের একটা ব্রেক বলেই ভেবে নিয়েছি।”
আরও পড়ুন: চ্যাপেলকে কোচ করাই কি কাল হয়েছিল! ৫০তম জন্মদিনে বিষ্ফোরক সৌরভ
সেই পর্বের কথা স্মরণ কতে সৌরভ জানিয়েছেন কীভাবে তিনি ঘুমের ওষুধ খেতে চাইতেন না, উপলব্ধি করেছিলেন তাঁর মধ্যে এখনও অনেক ক্রিকেট বেঁচে রয়েছে, সেই কারণে আরও বেশি হতাশ হয়ে পড়তেন।
সৌরভের সংযোজন, "আমি ভয়ঙ্করভাবে নিজের ওপর হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। রেগে গিয়েছিলাম। তবে পরিশ্রম দ্বিগুণ করে দিই। নিজেকে প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর ছিলাম। জানতাম আমার মধ্যে এখনও অনেক ক্রিকেট বেঁচে রয়েছে। আমি নিজের কাছে প্রতিশ্রুতি করি যে কিছু লোকের কাছে নিজের জাত চেনাতেই হবে।"
সৌরভের নেতৃত্বে ভারত ২০০৩ ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনালে পৌঁছয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ২-১ সিরিজ জয় সম্পন্ন করে। যে সিরিজ জয় দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অর্জন হয়ে রয়ে গিয়েছে আজও।