ইরফান পাঠানের ক্রিকেটীয় স্কিলের ওপর ভরসা ছিল না স্বয়ং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরই। এমনই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন এবার প্রাক্তন অলরাউন্ডার। স্টার স্পোর্টসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরফান পাঠান জানিয়েছেন, "১৯ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলার জন্য আমার বয়স বেশ কম মনে হয়েছিল দাদার। আমি যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ব, সেটা বারবার বলেছিলেন উনি।"
সৌরভের অধিনায়কত্বেই ইরফান পাঠান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটান। ২০০৪-এর ডিসেম্বরে সৌরভের নেতৃত্বে এডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলতে নামেন। তবে সৌরভ নাকি পাঠানকে একাদশে নিতে চাননি। সেই সময় মাত্র ১৯ বছর বয়স ছিল পাঠানের। এই অল্প বয়সে অস্ট্রেলিয়ার মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করার মত স্কিল পাঠানের রয়েছে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল তাঁর।
আরো পড়ুন: কোহলিকে আউট করাই ‘অপরাধ’! আইপিএল নিয়ে চরম হুমকির মুখে জেমিসন
২০০৩ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঠানকে টিম ইন্ডিয়ায় নির্বাচন করা হয়। তবে প্রথম সফরেই যে শুরুর একাদশে সুযোগ পাবেন তিনি, সেটা প্রায় কেউই ভাবেননি। তবে সুযোগ পেতেই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন বাঁ হাতি পেসার অলরাউন্ডার। যাঁরা তাঁর যোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, তাঁদের ভুল প্রমাণ করেন তিনি। দুর্দান্ত সুইং এবং পেস দিয়ে শুরুতেই বাজিমাত করতে থাকেন তিনি। শীঘ্রই জাতীয় দলে নিয়মিত মুখ হয়ে যান তিনি।
স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে সেই সাক্ষাৎকারেই পুরোনো দিনের সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন তিনি। সৌরভকে ভালোবেসে বাকি সকলের মত তিনিও 'দাদা' বলে ডাকতেন। সেই প্রিয় দাদাই তাঁর মুখের ওপর বলে দিয়েছিলেন, "টিমে তোমাকে মোটেই চাইছি না।" আসলে অল্প বয়সেই কারণে মাঠে কতদূর পারফর্ম করতে পারবেন তিনি, তা নিয়ে সংশয় ছিল সৌরভের।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক সফরেই পাঠান দুটো টেস্টে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে যে তিনি খেলতে পারেন, সেটাই প্রমাণ করে দেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টিনএজার পাঠানের পারফরম্যান্স দেখে সৌরভ অবশ্য প্রভাবিত হন। এবং স্বীকার করে নেন, তাঁর মুল্যায়ণ ভুল ছিল।
পাঠান বলছেন, "দাদা তারপর আমার কাছে এসে বলেন, ও কতটা ভুল ছিল আমাকে নিয়ে। এটা আমাকে বেশ অবাক করে। কারণ খুব কম অধিনায়কই নিজেদের নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করেন!"
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শুরু করার পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি পাঠানকে। টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে তারপর ২৯টি টেস্ট, ১২০টি ওডিআই এবং ২৪টি টি২০ খেলেন। ২০০৭ সালে ধোনির নেতৃত্বে কুড়ি কুড়ি বিশ্বকাপ জয়ী স্কোয়াডেও ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে শেষবার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলতে দেখা যায় তাঁকে। তারপর খারাপ ফর্ম এবং ফিটনেসের কারণে জাতীয় দল থেকে পুরোপুরি বাদ পড়েন। গত বছরই সমস্ত ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন