ধোনিকে উইকেটকিপার হিসাবে খেলানো নিয়ে অনেক কষ্টে রাজি করানো হয়েছিল সৌরভকে। এমনটাই এবার জানালেন তৎকালীন নির্বাচক প্রধান কিরণ মোরে। জাতীয় দল নয় অবশ্য। দলীপ ট্রফির ফাইনালেই দীপ দাশগুপ্তের বদলে ধোনিকে উইকেটকিপার হিসাবে চেয়েছিলেন কিরণ মোরে। অন্যদিকে, সৌরভ চাইছিলেন, জাতীয় দলের দীপ দাশগুপ্তই খেলুক ফাইনালে।
মনোমালিন্য পর্ব চলে দশ দিন। শেষপর্যন্ত অবশ্য সৌরভকে রাজি করাতে পেরেছিলেন মোরে। ২০০৪ সালে উইকেটকিপার এবং ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে ২২ বছরের ধোনি খেলেন দলীপ ট্রফির ফাইনালে। ইউটিউবে 'দ্য কার্টলে এন্ড কারিশমা শো'-এ কিরণ মোরে সেই ঘটনা নিয়ে খুলমখুল্লা জানিয়েছেন। "আমরা এমন একজন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে খুঁজছিলাম, যে পাওয়ার হিটার হবে। যাঁকে হয়ত ৬-৭ নম্বরে নেমে দ্রুত ৪০-৫০ রান করে যাবে।" বলছিলেন মোরে।
আরো পড়ুন: শত ব্যস্ততাতেও ভোলেননি ‘গুরু’কে! জন্মদিনে সৌরভের আবেগী বার্তা প্রয়াত ডালমিয়াকে
তিনি আরো জানান, সেই সময়ে ক্রিকেট মহলে ধোনির নাম শুনেছিলেন। যে কিনা বড় বড় শট খেলতে পারে। একটি ম্যাচে ধোনি একাই ১৩০ করেন। যে ম্যাচে আবার দলের মোট রান ছিল ১৭০। সেই ম্যাচই দেখেছিলেন মোরে। তারপরেই সৌরভের কাছে গিয়ে ধোনিকে নেওয়ার কথা বলেন।
সেই সময়ের প্রধান নির্বাচক বলছিলেন, "ধোনিকে দলীপ ট্রফির ফাইনালে খেলাতে চেয়েছিলাম আমরা। আমাদের মধ্যে দীপ দাশগুপ্ত এবং ধোনিকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। সেই সময় কলকাতা থেকেই দীপ দাশগুপ্ত জাতীয় দলে খেলে ফেলেছেন। আরো দীপ দাশগুপ্তকে না দিয়ে ধোনিকে।দিয়ে যাতে উইকেটকিপিং করানো হয়, এই বিষয়ে সৌরভের মত আদায় করতে ১০ দিন লেগে গিয়েছিল আমাদের।"
দলীপের ফাইনালে সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ধোনি শিবসুন্দর দাসের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ২১ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়ে ৪৭ বলে ৬০ করে যান। দলীপের ফাইনালে সফল হওয়ার পরে ধোনিকে সেই বছরের শেষের দিকেই এ দলের হয়ে কেনিয়া সফরে পাঠানো হয়। কেনিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজে ছিল পাকিস্তান-এ দলও।
প্রথমবার এ দলের হয়ে ধোনির সেই সিরিজের কথা এখনো মনে রয়েছে কিরণ মোরের। জানাচ্ছিলেন, "দলীপের ফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে ও সমস্ত বোলারকে উড়িয়ে দিচ্ছিল। তারপরেই আমরা ওঁকে কেনিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে পাঠিয়ে দি-ই এ দলের হয়ে। ওই সিরিজে ছিল ভারত-এ, কেনিয়া-এ এবং পাকিস্তান-এ দল। সেই টুর্নামেন্টে ধোনি ৬০০-র ওপর রান করে। বাকিটা ইতিহাস।"
সেই বছরেই, ২০০৪-এর ডিসেম্বরে দীপ দাশগুপ্ত, দীনেশ কার্তিককে সরিয়ে ধোনি অভিষেক ঘটিয়ে ফেলেন জাতীয় দলে। তারপর ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু নতুন অধ্যায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন