বুধবারে ইতিহাস গড়েছেন বঙ্গতনয়। চলতি কমনওয়েলথ গেমসে অচিন্ত্য শিউলির পরে দ্বিতীয় বাঙালি হিসাবে গর্বের পোডিয়ামে উঠেছেন সৌরভ ঘোষাল। বার্মিংহ্যামে দেশের নাম উজ্জ্বল করে ব্রোঞ্জ জয় করেছেন সৌরভ।
স্ট্রেট সেটে হারিয়েছেন আয়োজক দেশের জেমস উইলস্ট্রপকে। আর পদকজয় নিশ্চিত করার পরেই আবেগে ভেসে যেতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আনন্দাশ্রু বইয়ে দিয়েছিলেন কোর্টে।
গ্যালারিতেই ছিলেন স্ত্রী। কান্নায় স্ত্রীকে আলিঙ্গন করতেও দেখা যায় বাঙালি তারকাকে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বৃহস্পতিবার রাতে জুম করে বলে দিলেন, "সেই সময় মাথায় কত বিষয় চলছিল, প্রকাশ করা যাবে না। ব্যক্তিগত অর্জন তো বারবারে মনে পড়ছিল। সেই সঙ্গে মনে পড়ছে বছরের পর বছর ধরে টানা পরিশ্রম, আত্মত্যাগ।"
আরও পড়ুন: কান্না, তৃপ্তি! কমনওয়েলথে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে গর্বের পদকজয় সৌরভের
তারপরে তিনি বললেন, "স্ত্রীকে ওই মুহূর্তে বেশি কিছু বলতে পারিনি, স্রেফ জানিয়ে ছিলাম আমি ওকে ভালোবাসি।"
কমনওয়েলথ গেমসে অবশ্য এই প্ৰথমবার পদক জিতলেন না। ২০১৮-য় গোল্ড কোস্টে রুপো জিতেছিলেন। তবে সেবার অবশ্য এবারের মত ব্যক্তিগত ইভেন্টে পদক আসেনি। মিক্সড ডাবলসে সেবার রুপোজয় এসেছিল সেবার। ব্যক্তিগত স্তরে কমনওয়েলথে পদকজয় বাঙালি হিসাবে এবারই প্ৰথম। এশিয়ান গেমসে তাঁর নামের পাশে ৫টা ব্রোঞ্জ, একটা করে সোনা এবং রুপো। বড় ইভেন্টের আগে দীপিকা পাল্লিকলের সঙ্গে আলাপ আলোচনাও সেরে থাকেন। স্ত্রীর দিদি দীপিকা। পারিবারিক সম্পর্কে বাঁধা পড়েছেন দেশের অন্যতম নামি স্কোয়াশ তারকার সঙ্গে। কোর্টেও দীপিকার সঙ্গে সৌরভকে জুটি বেঁধে খেলতে দেখা গিয়েছে একাধিকবার।
সৌরভ নিজের আত্মীয়াকে নিয়ে খুল্লামখুল্লা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র সামনে। বলে দিয়েছেন, "সার্কিটে দীপিকার অভিজ্ঞতা বিশাল। আমরা একসঙ্গেও খেলেছি একাধিকবার। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া বেশ ভালো। ও এখন আমার পরিবারের অংশ।"
আপাতত কলকাতায় ফেরার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। কলকাতার খাবার মিস করেন বাইরে থাকলেই। সাক্ষাৎকার শেষ হওয়ার আগে অকপট সৌরভ বলে দিচ্ছেন, "আমার জয়ে পরবর্তী প্রজন্ম যদি আরও উদ্বুদ্ধ হয়, তার থেকে বড় আনন্দ কিছুই হতে পারে না। ভারতও স্কোয়াশে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন যে তৈরি করতে পারে, সেই বিশ্বাসটা অন্তত এসেছে।"
আরও গর্বের হদিশ দিক বাংলার ছেলে, কলকাতার ছেলে সৌরভ। সেই আশাতেই আপাতত বুক বাঁধছে গোটা দেশ।