সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি। করোনার হাত থেকে রেহাই নেই কারোর। এবার করোনা টেস্টে পজিটিভ ধরা পড়লেন ১৯৬০ সালে দেশের জার্সিতে অলিম্পিক খেলা তারকা ফুটবলার সৈয়দ শাহিদ হাকিম। মিলিটারি হাসপাতালে বেড না পেয়ে তিনি আপাতত হায়দরাবাদের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইন পর্ব সারছেন। প্রথমে করোনা চিকিৎসার জন্য সরকারি এক হাসপাতালে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন হাকিম সাব। তবে সেখানের ব্যবস্থাপনায় খুশি হতে না পেরে আপাতত হোটেলের দ্বারস্থ তিনি।
১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে দেশের জার্সিতে খেলেছিলেন তিনি। সেই সময় ভারত ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন, গোটা কেরিয়ার জুড়ে খেলার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করলেও, সরকারের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহায়তা পাননি।
তিনি জানান, "কয়েকদিন আগেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। তারপরেই সরকারি এক হাসপাতালে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে ওখানকার ব্যবস্থাপনা আমার মোটেও পছন্দ হয়নি। মিলিটারি হাসপাতালেও বেড ছিল না। আমার ভাইপো আমাকে হোটেলে নিয়ে আসে। এখন একটু সুস্থ রয়েছি।"
এরপরে তিনি আরো ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছেন, "এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনোরকম সহায়তা পাইনি। আমেরিকায় থাকে আমার বোন। ও সমস্ত খরচ বহন করছে। ভারত সরকারের অন্তত নিজেদের অলিম্পিয়ানের দেখভাল করা উচিত।"
ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও তিনি তুলনা টেনে এনেছেন। জানান, "ভারতের একমাত্র জীবিত অলিম্পিয়ান ফুটবলার আমিই। আমি ক্রীড়া প্রশাসক হওয়া ছাড়াও জাতীয় দলের কোচ হয়েছি। ক্রীড়া মন্ত্রককে এর আগে চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম, সরকারি ঔদাসীন্য র কারণে একের পর এক অলিম্পিয়ান মারা গিয়েছেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের দেখভাল করে। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার কেন আমাদের নূন্যতম ভাতা চিকিৎসার খরচ যোগায় না।"
একদশক ধরে সাইয়ের প্রধান প্রজেক্ট ডিরেক্টরের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৭ সালে দেশের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসাবে ধ্যান চাঁদ পুরস্কারও জিতেছেন।
খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর রেফারির ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছে হাকিমকে। ১৯৮৯ পর্যন্ত ৩৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও পরিচালনা করেন।
দেশের কিংবদন্তি কোচ সৈয়দ আব্দুল রহিমের পুত্র হাকিম। যাঁর কোচিংয়ে ভারত ১৯৫১ ও ১৯৬২ সালে এশিয়ান গেমসে সোনা জেতে।